চেন জাওসেনের বয়স তখন মাত্র পাঁচ বছর। ডাক্তাররা বললো তার ব্রেন টিউমার হয়েছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছিলো চেনের। নিজের বাঁচার আশা ছেড়ে দিলেও, মায়ের প্রতি এক অনবদ্য ভালোবাসার দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেন চেন। সেই গল্পই দেখুন ছবিতে।
মা ঝৌ লু তার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন সন্তানকে সুস্থ করার। কিন্তু সেই চেষ্টাটাও কাজে আসলো না শেষ অব্দি। কিছুদিনের মধ্যেই জানা গেলো লু নিজেই কিডনি সমস্যায় ভুগছেন।
লুয়ের যেমন ক্রমাগত চিকিৎসার দরকার ছিলো তেমন চেনের দরকার ছিলো ক্রমাগত মনোযোগের। দুজন একই হাসপাতালের একই বিছানায় পাশাপাশি শুয়ে কাটিয়ে দিলেন কয়েক বছর।
কিন্তু ব্রেন ক্যান্সার ধীরে ধীরে অন্ধ ও পক্ষাঘাতগ্রস্থ করে তোলে চেনকে। তবুও মা লু আশা ছাড়েননি। সন্তানের সুস্থতার জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন তিনি।
ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছিলেন লু নিজেও। তার কিডনিও অনেক দুর্বল হয়ে পড়ছিলো। ডাক্তাররা বলেন, একটি কিডনি হলেই বাঁচানো সম্ভব লু কে।
অবশেষে ডাক্তাররা কথা বলেন লুয়ের মায়ের সাথে। তারা তাকে বোঝান, চেনের বেঁচে থাকা অসম্ভব। কিন্তু তার কিডনি দিয়ে তার মা যেমন বাঁচতে পারে, তেমন বাঁচানো সম্ভব আরো দুটি প্রাণকে।
তবে এসব কথা মানতে মোটেও রাজি হননি লু। ছেলের জীবন নিয়ে নিজে বাঁচতে চায়নি সে।
এবার মাকে বোঝাতে এগিয়ে এলেন ছেলে নিজেই। মায়ের দ্বিধার কথা শুনে সে মাকে বলেলো, মা আমি তোমার জীবন বাঁচাতে চাই।
অনেক আলোচনা-সমালোচনার পর মা রাজি হলেন। মা সন্তানের আবদার তখনই মানলো যখন সে বললো, মায়ের জীবনের অংশ হয়েই বাঁচতে চায় চেন।
চেন মারা গেলেন। ডাক্তাররা তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলো কিডনি ও লিভার নেওয়ার জন্য।
কাজটা করার আগে ডাক্তাররা শিশুটির সম্মানে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।
চেন বেঁচে থাকলো তার মায়ের মধ্যে। শুধু তাই নয় চেনের জন্য বেঁচে উঠলো আরো দুজন যুবক-যুবতী।
চেনের কিডনি তার মায়ের সাথে পুরো মিলে গেছিলো। এটাকেও একটা মিরাকলই বলেন ডাক্তাররা। ছোট্ট শিশুর বড় মনের এই কাজ জল এনেছে সবার চোখেই। মায়ের মধ্যে দিয়েই বেঁচে থাকলেন চেন।