নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুন মামলায় কয়েকজন আসামীর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দী রেকর্ডকারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে এম মহিউদ্দিনের আজ সোমবার সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়েছে। এর আগে প্রধান আসামী নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়।
সোমবার সকালে জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে তাদের হাজির করা হয়। সকাল সাড়ে দশটা থেকে বারোটা পর্যন্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে এম মহিউদ্দিনের স্বাক্ষ্য এবং জেরা শেষে মামলার অপর স্বাক্ষী বন্দর থানার এস আই বেলায়েত, এস আই মিজান, কনষ্টবল রমজান মৃধা, আবুল কালাম আজাদ, জাহাঙ্গীর আলম ও ফকরুল ইসলামের স্বাক্ষ্য গ্রহন করা হয়।
৭ খুনের পৃথক দুটি মামলার মধ্যে সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৫ জন হত্যা মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটির দায়ের করা মামলার দ্বিতীয় দিনের মতো স্বাক্ষ্য ও জেরা করা হচ্ছে।
তবে মামলার প্রধান আসামী নুর হোসেন হাইকোর্টে অপর একটি রিট মামলা করে আজ সময় প্রার্থনা করেন। আদালত সময় মঞ্জুর করে আগামী ২৮ মার্চ পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য করেন।
এ দিকে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর স্বাক্ষীদের শুনানী ও জেরাতে গাফিলতির অভিযোগ করে পিপির পরিবর্তনের দাবী করেন।
গত ৩ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মামলার বাদী নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির স্বাক্ষ্য গ্রহন শেষে ৩২ আসামীর পক্ষে আইনজীবীরা বিউটিকে জেরা করেন।
আসামী তারেক সাঈদ অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। তারেক সাঈদের পক্ষে দায়ের করা রিট আবেদনটি ১৬ মার্চ হাইকোটে খারিজ করে দেয়ার পর নিম্ন আদালতে মামলাটি চলমান থাকতে আর কোনো বাধা থাকছে না।
গত ৮ ফেব্রুয়ারী আলোচিত ৭ খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে আসামী করে অভিযোগ গঠন করে আদালত। আদালত ২৯ ফেব্রুয়ারী ৭ হত্যার বিষয়ে দায়ের করা পৃথক দুটি মামলার মধ্যে একটি মামলার বাদী সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকাররের মেয়ের জামাতা ডা. বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্য গ্রহন করেন ।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম সহ ৭ জনকে অপহরণের তিন দিন পর লাশ উদ্ধার করা হয়। খুনের ঘটনায় প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার ৪ সহযোগী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে একটি এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একটি মোট ফতুল্লা মডেল থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ এক বছর তদন্তের পর তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল মামলার নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।