প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অনিশ্চিত জেনেও সাগরপথে মালয়েশিয়ার যাওয়ার জন্য পা বাড়াচ্ছে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার অসংখ্য যুবক। কম বয়সী এসব যুবকের বেশিরভাগই অভিভাবকদের না জানিয়ে দালালদের খপ্পড়ে পড়ে সবকিছু হারাচ্ছেন।
দেড় বছর ধরে নিখোঁজ ২০ বছর বয়সী ছেলে জাহিদুর রহমান, মায়ের তাই একমাত্র অবলম্বন ছবি আর কান্না।
জাহিদের মা বলেন, এখনো খোঁজ পাইনি। কক্সবাজার গেছে শুনলেই কেমন লাগতো, এখন শুনি মালয়েশিয়া গেছে। যে দালাল নিয়ে গেছে তার বিচার চাই। আমার ছেলের খবর আমি চাই।
কক্সবাজার শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের একটি ইউনিয়ন পিএম খালী। এখানকার কয়েকটি গ্রামে জাহিদের মতো আরো অনেক কিশোর-যুবক মালয়েশিয়ার পথে পা বাড়িয়েছে উন্নত জীবনের আশায়। মাত্র তিন মাস আগে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বের হয় দশম শ্রেণীর ছাত্র সরওয়ার কামাল। পরে দালালদের চাহিদা মতো টাকা দিয়েও আর কামালকে ফিরে পাচ্ছেন না তার মা-বাবা।
কামালের বাবা জানান, দালালের মাধ্যমে গেছে প্রথমে আমি জানি না। খুঁজতে খুঁজতে প্রায় ২৮ দিন গেছে। ২৮ দিনের মাথায় নূরামত কোম্পানী বললো, আপনার ছেলে মালয়েশিয়া পৌঁছে গেছে।
উখিয়া উপজেলার সোনাইছড়ি গ্রামের ১৩ বছর বয়সী এনামের বাবা একজন দিনমজুর। দালালদের টোপে পড়ে সেও হয়েছে সাগরপথে মালয়েশিয়াগামী।
দালালদের প্রলোভনে নিজেদের সিদ্ধান্তেই কিশোর যুবকরা সাগরপথে পা বাড়াচ্ছেন বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
সেখানকার ইউপি চেয়্যারম্যান জানান, অর্থলোভ এবং এলাকার কিছু মানুষ তাদের প্রলোভন দেখায়। বলে, মালয়েশিয়া গেলে তোমরা ত্রিশ হাজার/পঞ্চাশ হাজার টাকা আয় করতে পারবা। এই লোভেই তারা চলে যায়। এদেশের ৯০ শতাংশ অভিভাবক জানেনা যে তারা বিদেশে আছে। বয়সটাতো খুবই ভয়ঙ্কর।
এতোদিন না হলেও এখন গ্রামের মানুষকে সচেতন করার কিছু উদ্যোগ নিচ্ছে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা।