সাইবার জগত নিরাপদ রাখতে হলে তরুণদের ইথিক্যাল হ্যাকিং শেখাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের আলোচকরা। মেলার দ্বিতীয় দিনে আয়োজিত ‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইথিকাল হ্যাকিং’ শীর্ষক সেমিনারে আলোচকরা একথা জানান।
তারা বলেন: নিরাপদ সাইবার জগত চাইলে প্রথমেই জানতে হবে হ্যাকিং সম্পর্কে। হ্যাকিং নিয়ে সবাই কথা বললেও এ বিষয়ে অনেকেরই পরিষ্কার ধারণা নেই। বর্তমানে অনেক তরুণ হ্যাকিংয়ের সাথে জড়িত থাকলেও প্রতি ৭৫ জনে মাত্র একজন ইথিক্যাল হ্যাকার।
ইওয়াই ল্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারহানা এ রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রিস্টন ইনফো সলিউশনের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা রিজওয়ান শেখ। আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কে এম সালাহউদ্দিন, ঢাকা ব্যাংকের সিইও এ এম এম মঈনুদ্দিন, ম্যাশ টেকনোলজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজালাল সোহানি।
রিজওয়ান শেখ তার বক্তব্যে জানান: বর্তমানে অনেক তরুণ হ্যাকিংয়ের সাথে জড়িত। নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই হ্যাকিং শিখতে হবে। এতে নিজেদের জন্য যেমন কাজ করা হবে, তেমনি দেশের সাইবার স্পেস সুরক্ষার কাজটিও হবে। তবে এর মধ্যে প্রতি ৭৫ জনে মাত্র একজন ইথিক্যাল হ্যাকার। হ্যাকিং শেখার পাশাপাশি তরুণদের সাইবার নিরাপত্তা আইনগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখার উপরও জোর দেন তিনি।
বিভিন্ন অনলাইন অ্যাকাউন্ট খুব সহজেই কিছু প্রোগ্রাম ব্যবহারের মাধ্যমে হ্যাক করা সম্ভব জানিয়ে রিজওয়ান বলেন: অনলাইন অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। অন্তত ১৬ ডিজিটের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত এবং প্রতি মাসে একবার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে হবে।
তার আলোচনার শেষ পর্যায়ে কিছু তরুণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন: যারা হ্যাকিং নিয়ে কাজ করছে, তাদের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মারপ্যাচে আইনি জটিলতায় ফেলছে সরকার। তাদের দাবি, দেশের জন্য কাজ করলেও তাদের জেলে যেতে হচ্ছে।
কে এম সালাহউদ্দিনও তরুণদের এই কথায় সায় দেন। তিনি বলেন: তরুণদের ইথিক্যাল হ্যাকিং কার্যক্রমে সহায়তায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, হাইটেক পার্কসহ বিভিন্ন প্রকল্পে তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। তবে হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রেও ইথিকসের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। দেশের কল্যাণে তরুণদের কাজ করতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের সিইও এ এম এম মঈনুদ্দীন জানান: গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করতে গেলেও ‘টাইম শিডিউলিং’ ইস্যুতে তারা সমস্যায় পড়ছেন। বাইরের হ্যাকাররা যত না জড়িত, ভেতরের হ্যাকাররা তার থেকে বেশি হ্যাকিংয়ে জড়িত বলেও মনে করেন তিনি।