স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’-এ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।
সোমবার মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব ডাঃ মােঃ শিব্বির আহমেদ ওসমানী শাহবাগ থানায় তার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এ অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগটি মামলা আকারে রুজু করে পুলিশ।
অভিযোগে যা বলা হয়েছে: সম্মান প্রদর্শন পূর্বক নিবেদন এই যে, অদ্য ১৭.০৫.২০২১ তারিখ সোমবার বিকেল ০২.৫৫ ঘটিকায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মহােদয়ের একান্ত সচিব এর দপ্তরে রােজিনা ইসলাম, পিতা-মৃত মুসলিম মিয়া, মাতা- মােছাঃ- তাসলিমা বেগম, স্বামী- মােঃ সফিকুল ইসলাম, বাসা- ৯৭২, ৫ম তল, থানা- শাহজাহানপুর, ঢাকা, মােবাইল নম্বর- ০১৭১২-১২০৫৫২ নামীয় একজন নারী প্রবেশ করেন। এসময় একান্ত সচিব দাপ্তরিক কাজে সচিব মহােদয়ের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। উক্ত নারী দাপ্তরিক গুরুত্বপূর্ণ কাগজ-পত্র শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকানাে এবং মােবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তােলেন। এ সময় সচিব মহােদয়ের দপ্তরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মােঃ মিজানুর রহমান খান (কং নং ৩৩২৬১, সচিবালয়, ডিএমপি, ঢাকা) দেখতে পান এবং তাকে বাধা প্রদান করেন এবং তিনি নির্ধারিত কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে কক্ষে কি করছেন মর্মে জানতে চান। এ সময় তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় প্রদান করেন। পরবর্তীকালে অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, উপসচিব জাকিয়া পারভীন, সিনিয়র সহকারী সচিব শারমীন সুলতানা, সচিবের একান্ত সচিব মাে. সাইফুল ইসলাম ভূঞা, সিনিয়র সহকারী সচিব মােসাদ্দেক মেহদী ইমাম, অফিস সহায়ক মাে. মাহফুজুল ইসলাম, সােহরাব হােসেন সহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্টাফগণ ঘটনাস্থলে আসেন এবং অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম তল্লাশি করে তার কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং ডকুমেন্টসের ছবি সম্বলিত মােবাইল উদ্ধার করেন। এতে প্রতীয়মান হয় যে, ডকুমেন্টসগুলাে তিনি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়ােজিত অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে শাহবাগ থানার মহিলা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে তাকে জিম্মায় নেন।।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন ক্রয়/সংগ্রহ সংক্রান্ত নেগােসিয়েশন চলমান রয়েছে এবং খসড়া সমঝােতা স্মারক ও নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট প্রণয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সমঝােতা স্মারক নিয়ে পক্ষদ্বয়ের মাঝে প্রতিনিয়ত পত্র এবং ই-মেইলের মাধ্যমে যােগাযােগ হচ্ছে, যেখানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সন্নিবেশিত রয়েছে। উক্ত নারী যেসকল নথিপত্রের ছবি তুলছিলেন তার মধ্যে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও ছিলাে। এসকল তথ্য জনসমক্ষে প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উল্লিখিত কাগজপত্রসমূহ গুরুত্বপূর্ণ বিধায় মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত আছে, যা পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রদর্শন করা হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলােচনা করে অভিযােগ দায়ের করতে বিলম্বিত হলাে। অতএব, এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরােধ করা হলো।