সাঁওতালদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা তদন্ত করতে গাইবান্ধার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদেশের কপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত। আগুন দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ জড়িত থাকার কথা শুনে হাইকোর্ট বলেছেন, আদালত এরপর চোখ বন্ধ করে রাখতে পারে না।
৬ নভেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনায় রিট করে আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ তিনটি মানবাধিকার সংস্থা। এ নিয়ে আদেশও দিয়েছিলেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাঁওতালদের বাড়িতে পুলিশ সদস্যরা আগুন দিয়েছেন। এসব প্রতিবেদন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষের আইনজীবী আবু ওবায়দুর রহমান বলেন, একটা সাধারণ অপরাধের চেয়ে একজন পোশাক পরিহিত পুলিশ যখন এধরনের ঘটনা ঘটায় তখন মহামান্য আদালতের জন্য তো বটেই যেকোনো নাগরিকের মানুষের জন্য উদ্বেগের বিষয়। এবং কোর্ট সেই কনসার্নটাই ব্যক্ত করেছে।
আবেদনকারী ও রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদেশ দেন আদালত। আবু ওবায়দুর রহমান আরো বলেন, কোর্ট আদেশ দিয়েছেন যে এফআইআরটা জিডি হিসেবে নেওয়া হয়েছিলো, আগের মামলার সাথে সেম স্ট্যাটাস হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং সেই সঙ্গে সেটার তদন্ত করতে হবে। এবং এই তদন্ত করবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। পুলিশ নিজে যে সাঁওতালদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছেন সেই প্রেক্ষিতে কোর্ট আদেশ দিয়েছেন এই আগুন লাগানোর ঘটনার পিছনে কে বা কারা রেসপন্সিবল সেটা বের করবেন। সেই সঙ্গে এই ঘটনার সাথে পুলিশ জড়িত কিনা সেটা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করে দেখবেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মহামান্য হাইকোর্টে এই রিপোর্ট জমা দিবেন।
তবে গাইবান্ধায় সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে করা আবেদন নথিভুক্ত করে ৮ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
গত ৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন সাঁওতাল নিহত হন। উভয় পক্ষে আহত হন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।
ঘটনার পর সাঁওতালদের কয়েকশ ঘর-বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, হত্যা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ঘটনায় অজ্ঞাত ৬০০ জনকে আসামি করে মামলা হয়।