চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরেই ছুঁয়ে ফেললেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার। তাতে ২৩৩ রানের পথটা হয়ে গেল খুব কাছের। নেপিয়ারে মার্টিন গাপটিলের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে লিড (১-০) নিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় ওয়ানডে আগামী শনিবার।
ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ ওয়ানডেতে চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার দুই সপ্তাহ বাদে ২২ গজে নেমে গাপটিল পান ক্যারিয়ারের পঞ্চদশ শতকের দেখা। ১০৩ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করা এ ডানহাতি ওপেনার শেষপর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১১৭ রানে। কিউইরা জয় নিশ্চিত করে ৪৪.৩ ওভারে মাত্র দুটি উইকেট হারিয়ে।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলা গাপটিল খেলেন ১১৬ বল। মারেন ৮টি চার ও ৪টি ছক্কা।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম জয়ের আশা নিরাশায় রূপ নিয়েছে। ব্যাটিংয়ে দলের মূল ভরসা তামিম-লিটন-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের ব্যর্থতার পরও মিঠুন ও সাইফউদ্দিনের প্রতিরোধে ২৩২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। মাঝারি সংগ্রহ নিয়ে বোলিংয়ে যে ধরণের ধার দরকার ছিল, সেটির কাছাকাছিও যেতে পারেননি সফরকারী বোলাররা।
কিউই ব্যাটসম্যানরা তেমন সুযোগই দেননি বাংলাদেশের বোলারদের। সাবধানী শুরুর পর খোলস খোলেন দুই স্বাগতিক ওপেনার। গাপটিল ও হেনরি নিকোলস ১০৩ রানের জুটি গড়ে সহজ করে ফেলেন হিসেব।
ক্যারিয়ারের সপ্তম ফিফটি করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ৫৩ করা নিকোলস বোল্ড হলে ভাঙে জুটি। কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ক্রিজে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১১ রান করে হন এলবিডব্লিউ। রিভিউ নিয়ে সাফল্য পান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
১৩৭ রানে ২ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড বাকি পথ পাড়ি দেয় রস টেলর ও গাপটিলের ব্যাটেই। টেলর ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ৪৯ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি বাউন্ডারি।
দিবা-রাত্রির ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুর ধস সামাল দেয়ার সুযোগ পান সৌম্য, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির। ২২ গজে থিতু হয়ে একে একে তাদের সাজঘরে ফেরার পর মিঠুন-সাইফউদ্দিনের ব্যাটে ভর করে এগোয় বাংলাদেশ। যদিও ইনিংস শেষ হয় ৭ বল আগেই গুটিয়ে গিয়ে।
পাঁচ নম্বরে নেমে ৬২ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন মিঠুন। আউট হন ইনিংসের ৪৮তম ওভারে। তার ৯০ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি পাঁচটি। এটি ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তার।
শুরুতে উইকেট হারানোর চাপ নিতে পারেননি লোয়ার মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা। বছর শুরুর ম্যাচে দুইশ করতে পারবে কিনা বাংলাদেশ- তা নিয়েই জেগেছিল শঙ্কা। সেখান থেকে মিঠুনের ফিফটি ও অষ্টম উইকেট জুটিতে সাইফউদ্দিনকে সঙ্গী করে প্রতিরোধ।
১৩১ রান তুলতে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ দলকে পথ দেখান মিঠুন ও সাইফউদ্দিন। অষ্টম উইকেটে তারা ৮৪ রান যোগ করলে দুইশ পাড়ি দেয় সফরকারীরা।
আশা জাগিয়েও অল্পের জন্য ফিফটি পাননি সাইফউদ্দিন। দলীয় ২১৫ রানের মাথায় বাঁহাতি স্পিনার মিশেল স্যান্টেনারের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন এ বাঁহাতি। মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মার্টিন গাপটিলের হাতে। তার ৫৮ বলে ৪১ রানের ইনিংসে ছিল তিনটি চারের মার।
এদিন টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ড পেসারদের সামনে প্রথমসারির ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সৌম্য সরকার ছাড়া কেউই নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। দলীয় ফিফটি ছোঁয়ার আগেই সাজঘরে ফিরে যান তামিম (৫), লিটন (১), মুশফিক (৫), সৌম্য (৩০)
পাঁচ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় সৌম্য সরকারের ২২ বলে ৩০ রানের ইনিংসটা ছিল দেখার মতো। তবে সম্ভাবনা জাগানো ইনিংসটি বড় করতে পারেননি এ বাঁহাতি।
শুরুর বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব পড়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাব্বির রহমানের কাঁধে। তারা উইকেটে থিতু হতেই সাজঘরে ফিরে যান। দুই ব্যাটসম্যানই আনলাকি থার্টিনে (১৩) কাটা পড়েন।
শুরুর চার উইকেটের মধ্যে ট্রেন্ট বোল্ট ও ম্যাট হেনরি ভাগাভাগি করে নেন দুটি করে। বোল্ট পরে নেন আরও একটি উইকেট। স্যান্টেনার তিনটি ও ফার্গুসন নেন দুটি উইকেট।