‘বাপ্পা দা(বাপ্পা মজুমদার) থেকে শুরু করে নতুন পুরনো অনেক সংগীত সংশ্লিষ্ট মানুষ আমার গান শোনে প্রশংসা করেছেন। গান শোনার পর ইনবক্সে অনেকেই ভিডিও বার্তা পাঠিয়েও শুভ কামনা জানিয়েছেন। এটা আমার মতো একজন মানুষের জন্য পরম তৃপ্তির বলে আমি মনে করি।’
সম্প্রতি দুটি অডিও গান রিলিজের পর এভাবেই গান দুটির প্রতিক্রিয়া জানিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনকে কথাগুলো বলছিলেন সংগীতশিল্পী ইউসুফ আহমেদ খান।
গত ১৫ জুন প্রকাশ পায় ইউসুফ আহমেদ খানের দুটি মৌলিক গান। ‘একটা মন খারাপের দিনে’ এবং ‘সকাল হলো না আমার’-শীর্ষক গান দুটি প্রকাশিত হয়েছে দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান গানচিল মিউজিকের ব্যানারে। গান দুটির কথা এবং সুর করছেন শাখাওয়াত হোসেন মারুফ এবং সংগীত আয়োজনে ছিলেন তানবির দাউদ রনি ও শিল্পী নিজেই। শ্রোতারা জিপি মিউজিক এবং বাংলালিংক ভাইবেও এই দুটি গান শুনতে পাবেন। এছাড়াও গানচিল মিউজিকের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে এই গান দুটির লিরিক্যাল ভিডিও।
গান দুটি নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী ইউসুফ। কথায় কথায় জানালেন, এবারের ঈদে অডিও নিয়ে আসলেও আসছে ঈদে গান দুটির ভিডিও নিয়ে আসবেন দর্শকের জন্য। এজন্য জোর প্রস্তুতিও চলছে।
গান দুটির একটির সংগীতায়োজন করেছেন স্বয়ং ইউসুফ। এটা নিয়ে ভীষণ উত্তেজিত ইউসুফ বলেন, এই গান দুটির মাধ্যমে একেবারে নতুন পরিচয়ে সবার সামনে এসেছি তা হলো সংগীত আয়োজন। এই দুটি গানের মধ্যে একটির সংগীত আয়োজন আমি করেছি। সবাই অনেক সাধুবাদ জানাচ্ছেন। এই গানের কিছু অংশও যদি শ্রোতাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে তার পুরো কৃতিত্ব আমার সিনিয়রদের যাদের কাছে থেকে আমি শিখেছি, শিখছি, যাদের সাথে কাজ করেছি। আর যদি ভুল থেকে থাকে তার পুরোটাই আমার। আশা করি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আপন ঘর থেকেই ইউসুফ আহমেদ খানের গানের শুরু। বাবা প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান এবং মা উম্মে জোহরা হক। দুজনেই গানের মানুষ। ক্লাসিক্যাল আর নজরুল সংগীত শিল্পী দুজনেই। সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই গানের পথে হাঁটা। চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ ২০০৮-এ ৫ম হন। এরপর প্রায় টানা ২ বছর কোন প্রোগ্রামে গান করেননি। কিন্তু তালিম চলেছে পুরোদমে। সেই দুই বছর পর থেকে থেমে থাকেননি মোটেও, গানের সাথেই আছেন।
ইউসুফ তালিম নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন তার বাবা ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খানের কাছে থেকে। ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান গানে অতিরিক্ত কাজ দেখানোর জায়গাটা এড়িয়ে চলেন যা স্বভাবত মানুষকে সংগীত বিমুখ করে। বাংলা গানের উপস্থাপনায় উচ্চাঙ্গ সংগীতের চর্চা কেমন হওয়া উচিত সেই গবেষণা নিয়েই তার জীবনের অনেকটা সময় কেটেছে। যে কারণে তিনি পাতিয়ালা আর কিরানা এই দুই ঘরানাকে এক করে মিরপুর ঘরানার সৃষ্টি করেছেন। যার বহিঃপ্রকাশ ইউসুফ আহমেদ খান নিজেই। তাই তার যেকোন সাফল্য পুরোটাই তার বাবার তালিমের আর যা ব্যর্থতার জায়গা সেগুলোকে নিজের চর্চার অভাব বলে মনে করেন ইউসুফ। বাবার সৃষ্টি ‘মিরপুর’ ঘরানায় গানের তালিম নিচ্ছেন ।
গান নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে বাবা-মায়ের বাধ্য সন্তানের মতন সহজ স্বীকারোক্তি তার। বলেন,আসলে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বলতে আমার বাবা মায়ের স্বপ্নের জায়গাটায় পৌঁছুতে চাই। আমার বাবা সব সময়ই চেয়েছেন সহজ ভাবে গানকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে। আমারও তাই ই চাওয়া। বাংলাদেশকে, বাংলা গানকে সবার সামনে, বিশ্বের সামনে তুলে ধরা। আর যেহেতু পরিকল্পনার কথা চলেই এলো সেক্ষেত্রে যা না বললেই নয়, তা হলো আমার মায়ের কথা। আমার মা, এমন একজন মানুষ যার সহযোগীতা না পেলে আমি তো না-ই, আমার বাবা ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান আজকে যে সম্মান এবং পরিচিতির জায়গায় আছে তা সম্ভব হতো না। আমি শুধু চেষ্টা করছি আমার কাজ গুলো দিয়ে মা-বাবার যোগ্য সম্মানটুকু দিতে।