হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্যাতনে পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এএসপি) মোহাম্মদ আনিসুল করিম শিপনের মৃত্যুর ঘটনা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
বুধবার দুপুরে এক বার্তায় এ তথ্য জানায় পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, এএসপি শিপন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আইজিপির নির্দেশে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে যেন এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার কোনো পুনরাবৃত্তি না হয়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ৮-৯ জন লোক মিলে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করছেন। কেউ মাথায়, কেউ বুকে আঘাত করেছেন। কাউকে আবার এএসপি আনিসুল করিমের হাত বাঁধতে দেখা গেছে।
তারা সবাই হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়, ক্লিনার, এখানে কেউ চিকিৎসক ছিলেন না। তাই আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটি স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড।
উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার (৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিনিয়র এএসপি শিপনকে রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন সেখানে কোনো মানসিক রোগের চিকিৎসক ছিলেন না। হাসপাতালের কর্মচারীরা চিকিৎসা দেয়ার অজুহাতে তাকে জোর করে দোতলার একটি অবজারভেশন কক্ষে তাকে নিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ওই কক্ষে নির্মম নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় তার বাবা ফয়েজ উদ্দিন বাদী হয়ে আদাবর থানায় মামলা করেন। মামলার ১০ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মাইন্ড এইডের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন সেফ মাসুদ, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম পলাশ ও ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান।
আনিসুল করিম শিপন ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।