ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নাম ভাঙ্গিয়ে গাজীপুরের সাতাইশ এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে ভূমি ও বাড়ি দখল এবং বেআইনি কাজের অভিযোগে বাসির উদ্দিন (৩৫) নামের এক সন্ত্রাসীকে আটক করেছে র্যাব-১।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের প্রেক্ষিতে গাজীপুরের টঙ্গীর সাতাইশ এলাকা থেকে বাসির উদ্দিনকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি বিদেশী পিস্তল ও ও দুটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) সারওয়ার বিন কাশেম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: আটক বাসির উদ্দিন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় সকল প্রকারের বেআইনি কাজ করত। সে আদৌ রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় তার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী আছে যার অধিকাংশ সদস্য তার নিকটাত্মীয়।
এই সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তার আপন চাচা বিল্লাল হোসেন, ভাগ্নে নাজমুল ইসলম জনি, ফুফাতো ভাই টুঢুল, দুঃসম্পর্কের চাচা জামাল খান, আমির হোসেন, হারুন সহ আরো অনেকে। সাতাইশ এলাকায় এমন কোন অপরাধমূলক কাজ নেই যার সাথে তারা জড়িত নয়।
সন্ত্রাস বাসিরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে সারওয়ার বিন কাশেম বলেন: সে প্রায় সাত বছর ধরে এসএস সোয়েটার নামক একটি কোরিয়ান কোম্পানীতে এ্যাডমিন মেইনটেনেন্স ম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়াও টঙ্গীর দত্ত পাড়ায় তার দুটি ঝুটের গোডাউন আছে। এসব থেকে সে সামান্যতম আয় করে থাকে।তার আসল আয়ের উৎস হচ্ছে সাতাইশ এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে ভূমি ও বাড়ি দখল ইত্যাদি।
সারওয়ার কাশেম বলেন, বাসির উদ্দিনের সন্ত্রাসী বাহিনী র্দীঘদিন ধরে সাতাইশ এলাকায় সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি, মাসোহারা, অবৈধ ভাবে ভূমি দখলসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছিলেন।
তার সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকার সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান হতে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের মাসোহারা আদায় করে থাকত।এছাড়াও নবনির্মিত ভবন তৈরীতে তাদের চাঁদা দিতে হয় এবং তাদের নির্ধারিত ব্রিকস ফিল্ড ও দোকান হতে যাবতীয় সরঞ্জামাদি কিনতে হতো, যা থেকে তারা কমিশন পেয়ে থাকে।
বাসিরের সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যান্যরা গাজীপুরে অবৈধভাবে বাড়ি ও প্লট দখল করেছে জানিয়ে সারওয়ার কাশেম বলেন: এই সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম সদস্য বিল্লাল হোসেনের গাজীপুরে সাতটি বাড়ি ও বেশ কয়েকটি প্লট আছে যা অধিকাংশই অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোড়পূর্বক নামমাত্র মূল্যে লিখে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও এই সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যান্য সদস্যদের একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট আছে যা তারা অবৈধভাবে দখল করে আছেন।এই সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা দীর্ঘ দিন ধরে টঙ্গী এলাকায় বিভিন্ন বস্তিতে মাদক ব্যবসা করে আসছিলেন।
বাসির বাহিনীর অন্যান্য সন্ত্রাসীদের আটকের ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত আছে এবং আটক বাছির উদ্দিনের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র্যাবের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।