রাজধানী বুখারেস্টসহ রোমানিয়ার বিভিন্ন শহরের রাজপথে গত ৪ দিন ধরেই লাখ লাখ মানুষের ভীড়। সরকারবিরোধী বিক্ষোভে তারা পথে নেমেছেন বাঁশি, বিশাল বিশাল জাতীয় পতাকা এবং বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার পুতুল নিয়ে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ওই নেতারা দেশের দুর্নীতিবিরোধী সংগ্রামে বাধা সৃষ্টি করছেন।
টানা ৪ দিন একইভাবে রাস্তায় বিক্ষোভে জড়ো হচ্ছে রোমানিয়ার জনগণ। শুক্রবার বিক্ষোভের চতুর্থ দিনে সব বয়সের মানুষ সরকারবিরোধী প্রতিবাদে যোগ দেন। অনেককে কোলে ছোট বাচ্চা নিয়েও প্রতিবাদ মিছিল করতে দেখা যায়।
সমাবেশে প্রতিবাদকারীদের মাঝে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের প্রকাশ দেখা গেলেও একতা এবং পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষাও ফুটে ওঠে তাদের স্লোগানে। কিছু কিছু ব্যানারে লেখা ছিল: “আমি আমার ভবিষ্যতের জন্য এসেছি।”
গত বুধবার রোমানিয়া সরকার একটি জরুরি সরকারি আদেশ জারি করা হয়। ওই আদেশের অধীনে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েক ডজন সরকারি কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী সোরিন গ্রিনডিয়ানু তার পক্ষের যারা দুর্নীতির দায়ে শাস্তি পেয়েছিল তাদের মুক্তি দেয়ার চেষ্টা করছেন।
তবে সরকার বলছে, কারাগারগুলোতে কয়েদি সংখ্যা ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত হয়ে যাওয়ায় কারাগার খালি করার এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ওই জরুরি আদেশ জারির পর থেকেই প্রতিবাদে নেমেছে রোমানিয়ার জনগণ। শুক্রবার সরকার পক্ষের দু’জন উচ্চপদস্থ ব্যক্তি বলেন, আদেশটি পার্লামেন্টের কোনোরকম সম্পৃক্ততা ছাড়াই জারি করা হয়েছে, যা অসাংবিধানিক। এরপর থেকে জনগণের বিক্ষোভ আরও বড় আকার ধারণ করেছে।
রোমানিয়ার জেনারেল প্রসিকিউটর অগাস্টিন লাজার শুক্রবার বুখারেস্টের আপিল বিষয়ক আদালতকে আবেদন জানান যেন ‘জরুরি অবস্থার নামে’ জারিকৃত সরকারি আদেশটি স্থগিত করা হয়। কেননা ৯ ফেব্রুয়ারি তা আনুষ্ঠানিকভাবে আইনে পরিণত হবে।
অন্যদিকে আগে সরকারের অর্ডিন্যান্সের পক্ষে থাকা ন্যায়পাল ভিক্টর সিয়রবিয়া শুক্রবার তার অবস্থান পাল্টে বলেন, তিনি সাংবিধানিক আদালতকে বলবেন, নির্দিষ্ট ডলার পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে সরকারি কর্মকর্তাদের অপরাধকে অপরাধের তালিকা থেকে বাদ দেয়ার এই আদেশটি “ন্যায়সঙ্গত নয়”।
অবশ্য প্রভাবশালী রোমানিয়ান অর্থডক্স চার্চ বিক্ষোভ কর্মসূচির সমালোচনা করেছে। অনেকের মতে, চার্চের এই সমালোচনা দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিকদের শাস্তি এড়ানোর সুযোগ করে দেবে।