খ্রীস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দী থেকে অষ্টম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে মিশরীয় নগরী হিসেবে বিখ্যাত ছিল এই হেরাক্লিয়ন। নগরীটি ছিল ভূমধ্যসাগরে প্রবেশের অন্যতম প্রধান বন্দর। এটি ‘থনিস’ নামেও পরিচিত ছিল। মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া থেকে ২০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে এই শহরের অবস্থান। মিশরীয় দেবতা ‘আমন’-এর সুবিশাল মন্দিরের জন্য বিখ্যাত ছিল হেরাক্লিয়ন। ধারণা করা হয়, ভূমিকম্পের ফলেই সমুদ্রের তলদেশে হারিয়ে যায় শহরটি। অনেকেই মনে করতেন, হারিয়ে যাওয়া শহর আটলান্টিসের মতোই এটাও হয়তো কোনো এক রূপকথা, যার বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু ২০০০ সালে ফারাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ ফ্রাঙ্ক গুডি ও তার দল মিশরের আবু কি’র উপসাগরে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নের একটি যুদ্ধ জাহাজের সন্ধান করতে গিয়ে খোঁজ পান এই শহরের। প্রথমেই দেখতে পান গুডি মিশরীয় দেবতা হাপির মূর্তির কিছু অংশ, যা মিশরীয় বন্দরনগরী থনিস বা হেরাক্লিয়নের অংশ ছিল। সমুদ্রের তলদেশে প্রায় ১২০০ বছরের জমে থাকা বালি ও তলানি সরিয়ে আবিষ্কার করেন হারিয়ে যাওয়া শহরটি। ডুবে যাওয়া এই শহরটি ছিলো সমুদ্রের তীর থেকে ৬.৫ কিলোমিটার দূরে। যেখানে পাওয়া গিয়েছিল মিশরীয় দেবতা আমন ও তার ছেলে খনসৌর মন্দিরের কিছু অংশ, প্রচুর স্বর্ণমুদ্রা, পাথরের বাটখারা, সোনার তৈরি অনেক তৈজসপত্র এবং প্রায় ৬৪টিরও বেশি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ ও ৭০০টি নোঙর। প্রায় তের বছর ধরে গুডি ও তার দল এই ডুবে যাওয়া শহরের খনন কাজ করেন এবং উদ্ধার করেন বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।