চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

সব ক্ষেত্রেই এমন সচেতনতা এবং উদ্যমী ভূমিকার আশা

গত কয়েক দিনের প্রচণ্ড গরমে মানুষ যখন এক পশলা স্বস্তির বৃষ্টি চাইছিল, তখনই আরেক অস্বস্তি নিয়ে হাজির হয় ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। আশার খবর হচ্ছে, বড় ধরনের কোন ক্ষয়-ক্ষতি ছাড়া ইতোমধ্যে ঘণ্টায় ১৩৫ কি.মি গতিবেগে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে। এবারের ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই প্রশাসনের প্রশংসনীয় বিভিন্ন উদ্যোগ লক্ষ্য করা গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের আগে তারা সম্ভাব্য দূর্গত এলাকায় কন্ট্রোল রুম খোলার পাশাপাশি মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য দফতরের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারও ছিল চোখে পড়ার মতো। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচলিত আতংকের বদলে দুর্যোগ মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আমরা মনে করি। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা যায়,  ‘মোরা’র তাণ্ডবে কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি ও ভোলায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য এত বড় একটা ঘূর্ণিঝড়ে এগুলো স্বাভাবিক বিষয় মনে হলেও এ ঘটনার আগের দুর্যোগগুলো পর্যালোচনা করলে বিশেষ করে নিকট অতীতের ‘সিডর’ ও ‘আইলা’য় ক্ষয়-ক্ষতির চেয়ে এবারের ক্ষয়-ক্ষতি অনেক কম বলেই স্বীকার করতে হবে। বাংলাদেশ, বিশ্বব্যাংক ও ইউরোপীয় কমিশনের করা এক যৌথ সমীক্ষা মতে, দশ বছর আগে হওয়া সিডরের সময় তিন হাজার চার শ’ ছয় জনের মৃত্যু, এক হাজার জন নিখোঁজ এবং ৫৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। সেই তুলনায় দুর্যোগ মোকাবেলায় এবার বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে আমরা মনে করি। অতীতের মতো বিপুল পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। এছাড়া অল্প সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্গত কয়েকটি এলাকায় তাৎক্ষণিকভাবে ত্রাণ পাঠানোর বিষয়টিও ইতিবাচক। বিদেশে থেকেও প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে প্রয়োজনীয় সব নির্দেশনা দিয়েছেন যা প্রশংসনীয়। এভাবে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত উদ্যমী ভূমিকার কারণে যতটুকু ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল তার চেয়েও অনেক কম হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই আমরা এমন সচেতনতা এবং উদ্যমী ভূমিকা আশা করি।