বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি না হলে ‘অন্য সব অর্থহীন হয়ে যাবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শেখ হাসিনা ভারতে যাচ্ছেন, তিনি কি করতে পারবেন কিংবা পারবেন না সেটা তিনি ফিরে এলেই বলা যাবে। আপাতত মনে হচ্ছে তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার খুব মজবুত অবস্থায় আছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও কথা দিয়েছিল তারা সাহায্য করবে। হয়তো এরই মধ্যে অনেক কিছু বদলে গেছে, নতুন দাবি কিংবা প্রতিশ্রুতির জালে আটকে গেছে তিস্তা আলোচনা। প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন আলোচনা করতে। আপাতত তার জন্য শুভ কামনা রইলো। নির্বাচনের আগে তিস্তা চুক্তি যে একটা ট্রামকার্ড হয়ে যেতে পারে সেটা তিনি খুব ভালো করেই বোঝেন বলে আমার ধারণা।
মনে পড়ছে আমিও একবার ভারত গিয়েছিলাম। বহু বছর আগে সেদেশে থাকাকালীন অনেক কথাই মনে পড়ছে এই স্বাধীনতার মাসে। আমি একা নয়, অনেক বাংলাদেশী গিয়েছিল সেই দেশে। যারা যেতে চেয়েও যেতে পারেননি এমন লোকের সংখ্যাও অনেক। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যার জনসংখ্যা এক কোটির নিচে। অথচ এই বিশাল পরিমাণ আশ্রয় প্রার্থী গিয়ে উঠেছিলাম পড়শি দেশে, এক মহা বিপদের দিনে সেই ১৯৭১ সালে।
আমাদের কাছে একসময় ভারত ভিন্ন দেশ ছিল না। কেননা আমরাও ভারতের অংশ ছিলাম। ভারতের অন্তর্ভুক্ত আমাদের এই অঞ্চলের নাম ছিল ‘বাংলা বিহার উড়িষ্যা’। পরবর্তীতে সেটা হয়েছিল ‘পূর্ব বাংলা’। ‘বাংলা বিহার উড়িষ্যা’ থাকা অবস্থায় এই অঞ্চলে একটা বড় ষড়যন্ত্র হয়েছিল। চক্রান্তকারী ইংরেজ গোষ্ঠীর সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়েছিল বলেই দুইশ বছর ভারতে রাজত্ব করতে পেরেছিল ইংরেজরা। খণ্ডখণ্ড রাজ্য থেকে শুরু করে বাংলা পাঞ্জাব গুজরাট সহ সমস্ত ভারত ইংরেজদের অধীনে চলে যায়। এরপর ইংরেজ শাসনের শেষের দিকে অর্থাৎ দুইশ বছর পর বাংলায় বসে ভারত ভাগের পরিকল্পনা করা হলো। ঢাকাতে গড়া হলো মুসলিম লীগ নামের একটি নতুন রাজনৈতিক দল। ইংরেজ তাড়ানোর কাজে ব্যস্ত মূল রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের বহু মুসলিম নেতারা এসে যোগ দিল এই মুসলিম লীগে। অতঃপর নবগঠিত রাজনৈতিক দল দাবি করলো ভারতের মুসলমানদের জন্য ভিন্ন রাষ্ট্র ‘পাকিস্তান’।
মুসলিম লীগের নেতৃত্বে থাকা বাংলার নেতা শের-এ বাংলা ফজলুল হকের উড়ানো পাকিস্তানি পতাকা ১৯৪৭ সালে বাস্তবায়িত হলো। দেশ ভাঙ্গার গণভোটে নিরঙ্কুশ রায় এলো পূর্ব বাংলা থেকেই। অখণ্ড ভারত তিন টুকরো হয়ে গেল। ভারতবাসী অবাক হয়ে দেখল তাদের দেশ পূর্ব এবং পশ্চিম থেকে কেটে নেয়া হয়েছে। সাধারণ চাষাবাদের জমির সীমানা কিংবা করিডোর সোজা করার মত ঘটনা নয়। পাকিস্তানের দুই অংশের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা ছেড়ে দিতে হয়েছিল ভারতকে। ভিন্ন জাতি ভিন্ন ভাষা ভিন্ন সংস্কৃতির লোকের সাথে হাত মিলিয়ে বাংলার মানুষ এক বছরের মাথায় বুঝতে পারলো কতো বড় ভুল তারা করেছিল।
সেই ভুল অসহনীয় হয়ে পড়লো যখন পশ্চিম পাকিস্তান একের পর এক শোষণের জাল ফেলতে লাগলো বাংলার মানুষের উপর। শাসন শোষণের শেষ পর্যায়ে নিজ দেশের নাগরিকদের গুলি কামান দিয়ে হত্যা শুরু হল। ত্রিশ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করা হয়। হত্যার লেলিহান শিখা যখন শহর থেকে মফস্বল তারপর গ্রাম-নদী মাঠে ছড়িয়ে পড়তে লাগল, পালাও পালাও করে তখন দেশ ছেড়ে আবার সেই ভারতে গিয়ে উঠতে হলো। মানুষের উপর অন্যায় অত্যাচারের মাত্রা দেখে ভারতের মানুষ ভুলে গেল অতীতের ক্ষত। পুরো ভারতবাসী এগিয়ে এলো বাংলাদেশের দুঃখী মানুষদের সাহায্য করতে। অথচ এই বাংলায় বসে ভারতের বিরুদ্ধে কত কি না করা হয়েছে। তখন একটা গরীব দেশ হয়েও তারা এক কোটি লোককে আশ্রয় দিয়েছিল। শুধু তাই নয় স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র জোগাড় করে আমাদের সাহায্য করেছে। এমনকি নিজেরাও যুদ্ধে অংশ নিয়ে জীবন দিয়েছিল। তাই ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উক্তি ‘সব কিছু অর্থহীন হয়ে যাবে’ সে কথার সাথে একমত কী করে হই।
মনে পড়ছে সামান্য গুড় চিড়া সম্বল করে আমরা ভারতে গিয়ে উঠেছিলাম। আমরা যত মল-মূত্র ত্যাগ করেছি সবই পড়েছে ওদের মাটিতে। বাঁশ কেটে গাছের ডালপালা কেটে মাথা গোজার জন্য ঘর বানিয়ে থেকেছি। কার জমি কার বাঁশ কার গাছ কেউ জিজ্ঞেস করিনি। ওরা কেউ বাধাও দেয়নি। লেফট রাইট করতে করতে কত ফসল মাড়িয়ে গিয়েছি তার জন্য কেউ উচ্চবাচ্য করেনি। আমাদের বাকুন্ডিয়া ক্যাম্পের অস্ত্র রাখার ঘরটি ছিল মন্দিরের পেছনে। আমাদের অস্ত্র ঢুকে গিয়েছিল তাদের দেবদেবীর ঘরে। ‘সব কিছু অর্থহীন হয়ে যাবে’ সে কথার অর্থ বুঝতে চেষ্টা করছি।
পশ্চিম বাংলার বাকুন্ডিয়া ক্যাম্প যার জমিতে গড়ে উঠেছিল সেই জমিদার রাঁধা কিশোর ঘোষ এবং তার পরিবারের লোকেরা ক্যাম্পের ছেলেদের কারণে বাইরে বের হতে পারতো না। পুকুর ঘাট ব্যবহার করতে পারতো না। সঠিক সংখ্যা বলতে পারবো না, তবে সেপ্টেম্বর-আগস্ট মাসের দিকে হয়তো হাজারের উপর লোক ধারণ করতে সক্ষম হয়েছিল বাকুন্ডিয়া মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প। আমার তাঁবুটি ছিল ক্যাম্প ইনচার্জ ক্যাপ্টেন সুলতানের (আগরতলা মামলার আসামী ছিলেন) দাপ্তরিক তাঁবুটির পাশেই। তাঁবু উঠিয়ে তিনি দেখেন কালো পলিথিনের উপর কাঁচুমাচু করে কাঁপছি আমি। রাঁধা কিশোর ঘোষের কাছে তিনি হয়তো কিছু শীতবস্ত্র সাহায্য চেয়েছিলেন। কে কী পেয়েছিল জানি না, তবে আমি একটা কম্বল পেয়েছিলাম। মনে হল আমার মা সেই বাংলাদেশ থেকে ঘোষ বাবুকে বলছিলেন ‘আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন’।
বাকুন্ডিয়া ক্যাম্পে থাকাকালীন একবার আমার দাঁত ব্যথা শুরু হয়। দাঁতের ব্যথায় মানুষ মারা যায় কিনা জানি না কিন্তু আমার অবস্থা দেখে ক্যাপ্টেন সুলতান তাই ভেবেছিলেন। একটা টুলের উপর বসে ক্যাপ্টেন সুলতান মগে করে চা খাচ্ছিলেন। আব্বা ছিলেন পাশের ‘শাকচূড়া’ ইয়ুথ ক্যাম্পের ইনচার্জ। প্রায় সকালে তিনি আসতেন ক্যাপ্টেন সুলতানের সাথে কথা বলতে। এই সুযোগে আমার সাথেও তার দেখা হতো। শেখ ফরিদ, আব্বা এবং ক্যাপ্টেন সুলতান কথা বলছিলেন কুয়াশা ঢাকা সকালে। কোলকাতার বাস ধরবেন তাই যাবার পথে রাঁধা কিশোর ঘোষ ক্যাপ্টেন সুলতান সাহেবের সাথে দেখা করতে এসেছিলেন। দু’গালে হাত চেপে আমি গিয়ে সেখানে উপস্থিত হলাম। ঘোষ বাবুর নাম দেয়ালে দেয়ালে লেখা ছিল। পশ্চিম বাংলার বিধান সভার সদস্য ছিলেন তিনি। সেই তিনি অবাক বিস্ময়ে আমার দিকে চেয়ে থাকলেন। জিজ্ঞেস করলেন কোন ক্লাসে পড়ি। বললাম ক্লাস টেন। মনে হল তার অবাক হবার মাত্রা বেড়েই চলছে। ইন্সট্রাক্টর নায়েক আব্দুর রশিদকে ডেকে কথা বললেন সুলতান সাহেব। আব্বার সাথেও তার কথা হলো। শেষে আমাকে কলকাতা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন ওনারা। বাবু বললেন তিনি সব ব্যবস্থা করে দেবেন।
আমরা যে শুধু জমিদার রাঁধা কিশোর ঘোষ বাবুর গ্রামের জমিজমা দখল করে ক্যাম্প বানিয়ে বসেছিলাম তা নয়। বাবুর একটা ভাড়া করা বাসা ছিল কলকাতার শ্যামবাজার চৌরাস্তার কাছে। তিন তালার সেই ঘরটিও তিনি বাংলাদেশের ছেলেদের জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন। যে যেভাবে পারতো সেখানে মাথা গুঁজে ট্রেনিং এ যাবার জন্য অপেক্ষা করতো। বাবুর শ্যামবাজারের বাড়িতে গিয়ে পরিচয় হলো মতিন ভাই এবং আলী ভাই নামের দুই যুবকের সাথে। আলী ভাই ছিলেন সিলেট বা চিটাগাং মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। মতিন ভাই আর আলী ভাই রাঁধা কিশোর ঘোষের পরামর্শে পরবর্তীতে শাকচূড়া ক্যাম্পে যোগ দেয়। আলি ভাই মোল্লাহাট থানার বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের মন্নু ডাক্তারের সাথে চিকিৎসকের কাজে লেগে গেল।
সপ্তাহ ধরে চলল নানামুখী সরকারি চিকিৎসা। আমি ভারতের নাগরিক কিনা সে কথা হয়তো জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কিংবা কেউ জিজ্ঞেস করে নি তবুও আমার চিকিৎসা আটকে থাকেনি। মোটা মোটা সুই ঢুকিয়ে দাঁত অবশ করে ড্রিল করা হতো। মোট চারটি দাঁতের চিকিৎসা হলো। একটি ফেলে দিল। সেই ফেলে দেয়া দাঁতটির যায়গাটা এখনো ফাঁকা। আমি বলি ফাঁকা স্মৃতি। ডাক্তার বাবু একসাথে একটার বেশি দাঁতে হাত দিতেন না। মাঝে বিস্তর সময়। সেই এক সপ্তাহ ঘোষ বাবু আমাকে কোলকাতার কিছু বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। দাঁতের নিচে তুলা চেপে ট্রাম আর টানা রিক্সায় চড়ে কলকাতা দেখেছি। কোলকাতার নিউমার্কেট থেকে ঘোষ বাবু একটা টার্টেল নেক (হাই নেক) গেঞ্জি, টেরি কোর্টের প্যান্ট, জুতা মোজা কিনে দিয়েছিলেন। সাথে মতিন ভাই ও আলি ভাইয়ের জন্য দুটো রাজেশ খান্না পাঞ্জাবি এবং অন্যান্যদের জন্য টুকিটাকি। ওদের হয়তো প্রায়ই কিছু না কিছু কিনে দিতেন কিন্তু আমাকে এই প্রথম। শুনেছি গ্রামে ফিরে যাবার সময় ক্যাম্পের ছেলেদের জন্য হাত ভরে ফল খাবার নিয়ে যেতেন। খুব ভালোবাসতেন মা-বাবা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্যাম্পে পড়ে থাকা বাংলাদেশের ছেলেদের। বাবু সেদিন একটা স্টুডিওতে নিয়ে গেলেন ছবি তুলতে। বললেন সুযোগ পেলে তোমার মাকে এই ছবি পাঠিয়ে দিব। আমি ছবি তুললাম, যেভাবে স্টুডিওর মালিক আমাকে বসতে বলল ঠিক সেইভাবে। পরে রাঁধা কিশোর ঘোষ এসে বসলেন আমার সাথে।
ঢাকা শহরে জন্ম আমার। পড়েছি ব্লিজ ব্লুম লাইছিয়াম, শাহিন স্কুলের মত স্কুলে। গাঁয়ের রঙ ছিল ফর্সা, স্বাস্থ্যও ছিল নাদুসনুদুস। ঘোষ বাবু হয়তো মেলাতে পারতেন না আমাদের যুদ্ধ জয়ের বাসনা। অথবা হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন স্বাধীনতার জন্য কতটা ব্যাকুল হলে আমরা ওভাবে পড়ে ছিলাম। হোড়লের ডাল আর জাউ ভাত খেতাম। মায়ের কথা মনে করে একবারও ফিরে যাবার কথা বলতাম না। ভাল খাবার মোটা কাপড়ের জন্য বায়না ধরতাম না। এসব দেখে তিনি আশ্চর্য হতেন। কলকাতার পরিবারগুলোর কাছে তিনি আমাকে যখন নিয়ে যেতেন সেখানেও এই কথাগুলো বলতেন। যে বাড়িতে যেতাম প্রচুর খাবার খেতে দিতেন তারা। যত্ন করে বাড়ির মালিক পাশে বসে থাকতেন। ছোট ছোট বাচ্চারা উঁকি দিয়ে মুক্তিবাহিনীকে দেখে যেত। গৃহকর্ত্রীরা মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করে বলতেন ‘তোমার মত ছোট ছেলেরা যখন যুদ্ধ করতে এসেছ কে পারবে তোমাদের সাথে’। অথবা ‘ভেবো না খোকা তোমাদের দেশ খুব শীঘ্র জয় বাংলা হয়ে যাবে’।
এখন আর আমি খোকা নই। দোয়া করার বয়স আমারও হয়েছে। ঠিক মত খেতে পেতাম না এই ভেবে যারা যত্ন করে খাইয়েছেন মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করেছেন তারা চিরকালের আপনজন। এই মার্চ মাসে সেই সমস্ত মহানুভবতার কথা ভুলে গেলে চলবে না। তাদেরকে জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আজ হয়তো ভারতের সাথে সামরিক চুক্তি নবায়নের প্রয়োজন নেই, তবে তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা ও বন্ধুত্ব নবায়নের প্রয়োজন অবশ্যই রয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানি ভূত এখনো যখন বোমা আতংক থেকে মুক্তি দিচ্ছে না। ভারত সরকার, ভারতের রাজনৈতিক গোষ্ঠী, ভারতের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় যদি আমাদের সাথে অসৎ আচরণ করে আমরা তার প্রতিবাদ করবো। আর দশটা দেশের সাথে যেভাবে আলোচনা হয় সেভাবেই ন্যায্য দাবী আদায় করে নেব। তাদের দেশের নিরপেক্ষ মানুষগুলো আমাদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে কণ্ঠ মেলাবে বলে বিশ্বাস করি।
যুদ্ধের পর কোলকাতার স্টুডিওতে তোলা ছবি দুটির কপি ঘোষ বাবু ডাকযোগে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। রাঁধা কিশোর ঘোষ এখনো বেঁচে আছেন কি না জানি না। কিন্তু তিনি আমার স্মৃতিতে অম্লান। তার স্নেহ মমতা ভালবাসায় আমি আজো সিক্ত হয়ে আছি। এই ছবি দুটি শুধু একাত্তরের ছবি না জীবনের অমূল্য সম্পদ। অসুস্থ ছিলাম তাই ঘোষ বাবু একটা হরলিক্স কিনে দিয়েছিলেন। এরপর জীবনে কখনো হরলিক্স খেতে পারিনি। হরলিক্সের ছবি দেখলেই তার কথা মনে পড়ে যায়। বাকুন্ডিয়া গ্রামের রবি ছেলেটাকে মনে পড়ে যায়। খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে যে আমাকে ‘জন গণ মন অধিনায়ক জয় হে’ শুনিয়ে বলেছিল এবার তুমি তোমার জাতীয় সঙ্গীত গাও। আমি তখন কেঁদে দিয়েছিলাম। যে সঙ্গীতের ছত্রে ছত্রে মা উচ্চারণ করতে হয় সে সঙ্গীত চোখ শুঁকিয়ে রেখে গাওয়া যায় না। সেই একাত্তরে যেমন না, এখনো না।
সব কিছু ভোলা যায় না। তাই বুঝতে ব্যর্থ হই মির্জা ফখরুলের সব অর্থহীন হয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)