সিলেট থেকে: লন্ডনের সেন্ট জোন্স উডে ক্রিকেটের মক্কাখ্যাত লর্ডস গ্রাউন্ড ২০৪ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে। স্টেডিয়ামটির গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের সৌন্দর্যে প্রকাশ পায় ব্রিটিশ আভিজাত্য। চায়ের নগরী সিলেটের ঐতিহ্য প্রকাশে স্টেডিয়ামের গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড বানানো হয়েছে একই আদলে। ভবনের লাল রঙা টালিতে চোখ আটকাবে সবার আগে। যেটিকে অলংকৃত করেছিল ইংল্যান্ড থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ করে আনা একটি ঘড়ি। যেটি অকেজো হয়ে এখন নিথর পড়ে আছে।
নারীর কপালে টিপ যেমন শোভা বাড়ায়, তেমনি এই গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের মাঝ বরাবর বিন্দু হয়ে সৌন্দর্য বহুগুণ বৃদ্ধি করেছিল রোমান সংখ্যার কাঁটার নান্দনিক ঘড়িটি। গত বছর বিপিএলের সময় দেখা যায় সৌন্দর্যের তিলক হয়ে স্থান পেয়েছে সেটি। বিপত্তি অবশ্য তখন থেকেই। ইংল্যান্ড থেকে আনা ঘড়ি বাংলাদেশ সময়ের সঙ্গে মিলছিল না কিছুতেই।
স্থানীয় সময়ের চেয়ে ১০ মিনিট এগিয়ে থেকে ঘুরছিল ঘড়ির কাঁটা। সময় দেখে খেলোয়াড়রা যাতে বিভ্রান্ত না হন সেজন্য ম্যাচ ডে-তে কালো কাপড়ে ঢেকে রাখা হতো সেটি।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের অভিষেক টেস্টের আগে দেখা গেল সেই ঘড়ি উধাও। ইউরোপিয়ান আদলে গড়া স্টেডিয়ামের সঙ্গে দারুণ মানিয়েছিল ঘড়িটি। কিন্তু ঘড়ির জায়গাটা খালি হয়ে যাওয়ায় এখন খাপছাড়া লাগছে লাল রংয়ের টালি।
বিসিবি পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল চ্যালেন আই অনলাইনকে জানালেন ঘড়ি উধাওয়ের কারণ।
‘ঠিক করার জন্য ঘড়ির ডিভাইস আমরা ইংল্যান্ডে পাঠিয়েছিলাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে। সেখানকার প্রকৌশলীরা ঠিক করে পাঠালে কিছুদিন ভালোই ছিল। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টি, প্রাকৃতিক কারণে আবার সময়ের হেরফের দেখা দেয়। ঘড়িটি ঠিক করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করেছি। সমস্যার সমাধান করা যায় কিনা সেটির জন্য এখানেও চেষ্টা চলেছে। আমরা এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
স্টেডিয়ামের অবকাঠামোর সঙ্গে সাদৃশ্য রাখতে অনেক যাচাই-বাছাই করেই বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী ও শফিউল আলম মিলে কিনেছিলেন ঘড়িটি। গত তিন মাস ধরে মেরামতের জন্য দফায় দফায় মেইল চালাচালি করেছে বিসিবি ও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দিয়েছে ব্রিটিশ কোম্পানি। তবে বিসিবি এখনও আশায় আছে। শেষ পর্যন্ত সফল না হলে স্টেডিয়ামের মিউজিয়ামে স্থান পাবে ঘড়িটা।