শিশু চৈতি,তার বয়স মাত্র তিন বছর।জন্ম থেকেই লেজের মত দেখতে তিন পা নিয়ে বেড়ে ওঠেছে মেয়েটি।বাংলাদেশে কয়েকবার অস্ত্রোপচার করেও সফল হতে পারেনি চিকিৎসকরা।অবশেষে এক চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় দীর্ঘদিন অস্ট্রেলিয়ায় চিকিৎসা নিয়ে সফল অস্ত্রোপচার শেষে দেশে ফিরেছেন চৈতি।
তার এই অতিরিক্ত অঙ্গ কীভাবে কেটে ফেলা যায় এবং কাটা স্থানে কীভাবে পূরণ করা যায় এই নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সার্জন এক মাস নানা পরীক্ষা চালানোর পর সফলভাবে অস্ত্রোপচার করা হয়।
শিশুটির মা সীমা খাতুন বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, আমি আমার পরিবারকে দেখার জন্য অপেক্ষায় আছি, আমার মেয়ের খেলা দেখার অপেক্ষায় আছি।এখন সবকিছু ভালো, মেয়েটা আমার অন্য বাচ্চাদের মত খেলতে পারবে, এখন সে অন্য সবার মত।
অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার মোনাস শিশু হাসপাতালের সার্জারির প্রধান ডা. ক্রিস কিমবার বলেন, চৈতির ব্যাপারটা অস্বাভাবিক, সার্জারিটা ছিলো ভীতিকর। এমন অপারেশন নিজের একক সিদ্ধান্তেই করতে হয়, বুঝে বুঝে সমাধান বের করতে প্রচুর সময় দিতে হয়।
বাংলাদেশী যেসব ডাক্তার চৈতিকে কয়েকবার অস্ত্রোপচার করছিলো, তাদের সঙ্গে কথা বলে চিল্ড্রেন ফার্স্ট ফাউন্ডেশন এর সহায়তায় গতবছর তাকে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাংলাদেশে এর আগে অস্ত্রোপচার করে মেরুদণ্ড বারাবর পা কেটে ফেললেও কোন সুফল আসেনি। তার শরীরে যমজ মলদ্বার এবং যমজ যৌনাঙ্গ থাকায় পুন:রায় অস্ত্রোপচার করতে বেশ বেগ পেতে হয়। দীর্ঘ দিন ধরে পরিকল্পিনা করে নভেম্বরে অস্ত্রোপচারের সীদ্ধান্তে আসতে পারে অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসক দলের।
অতিরিক্ত পা কেটে ফেলার পর দেখা হয় আগের মত শরীরের অন্যান্য অঙ্গ কাজ করছে কিনা? সবকিছু নিশ্চিত হয়েই চিকিৎসকরা তাকে বাড়ি ফেরার ছাড়পত্র দিয়েছেন।
ডা: কিমবার বলেন, যে মেয়েটি একসময় কিছু করতেই পারতো না, সে এখন হাঁটতে পারে, দৌড়তে পারে এবং ওজনও ধারণ করছে।
তিনি বলেন, সে এখন তার মায়ের সাথে বাংলাদেশে বাড়িতে ফিরে যেতে পারে। তবে তার কিশোরী বয়সে তাকে আরেকবারের জন্য অস্ত্রোপচার করতে হবে।