চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

নারীচেতনা জাগরণে সাত বছরে ‘পারি’

নারী প্রগতির ত্রৈমাসিক পারি সপ্তম বর্ষে পর্দাপন করেছে। এ উপলক্ষে ২৩ এপ্রিল, ২০১৮ সোমবার বিকেল ৪টায় বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্র মিলনায়তনে  ‘লেখক সমাবেশ ও পারি সম্মাননা ২০১৮’ এর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক দিল মনোয়ারা মনু।

উদ্বোধনী সংগীতে শিল্পী অনিমা রায় পরিবেশন করেন ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’। গানের সুরে বৈশাখের বিকেলে প্রশান্তির ছায়া নেমে আসে বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্রের মিলনায়তন জুড়ে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পারি’র সম্পাদক লাইলা খালেদা। তিনি ‘পারি’ পত্রিকা সূচনালগ্নের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘পারি’ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অনেক গুনিজনকে আমরা একসাথে করেছিলাম। সেদিন অনেকেই উৎসাহ দিয়ে বলেছিলেন, রমরমা রঙিনের ভিড়ে হারিয়ে যেন না যায় ‘পারি’। আমরা চেষ্টা করে চলেছি ‘পারি’কে সামনে এগিয়ে নিতে। আজকের ডিজিটাল সময়ে ইলেট্রিক মিডিয়া টেলিভিশন আর অনলাইনের ভিড়ে প্রিন্টিং কাগজ হারিয়ে যাবে অনেকে আশঙ্কা করেন।  তবে ‘পারি’ টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করবে। নারীর সংগ্রাম, সাফল্য, বঞ্চনা, পিছিয়ে থাকা জীবনগাথা বিষয়গুলো ছোটগল্প, কবিতা ও প্রবন্ধে লেখকেরা তুলে ধরতে চেষ্টা করেন। ‘পারি’ আজীবন এসবের ধারক হতে চায়।’

এরপর কনা রেজা’র ছোটগল্প সংকলন ‘মধ্যবেলা’ বই হাতে ফটো সেশন হয়। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা এবং পারি’র উপদেষ্টা সম্পাদক কনা রেজা,  কবি ও সংগঠক আসলাম সানী, কবি সাইম রানা, কবি ও সম্পাদক হাসান মাহমুদ, প্রকাশক নিশাত জাহান রানা,  কবি কাজল চক্রবর্তী, কবি ও ‘পারি’র উপদেষ্টা সম্পাদক কাজী সুফিয়া আখতার এবং সংগঠক ও ‘পারি’র উপদেষ্টা সম্পাদক রাখীদাশ পুরকায়স্থ। কনা রেজা তার বক্তব্যে বলেন, ‘নারী জাগরণ মানে সমাজের জাগরণ, একজন প্রগতিশীল নারী সমাজকে এগিয়ে নিতে পারে শত বছর সামনে। আমরা যে স্বল্প উন্নত বাংলাদেশ থেকে উন্নয়নশীল বাংলাদেশ দেখছি এর জন্য সবচেয়ে বেশি রয়েছে নারীর অবদান। ‘পারি’ সেই নারী জাগরণের মন্ত্রকেই লালন করে।’

কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন, কবি কাজী রোজি, শিশুসাহিত্যিক ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ, প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম, সাংবাদিক নাসিমুন আরা হক, লালন সম্রাজ্ঞী ফরিদা পারভীন, কর্পোরেট নারী উদ্যোক্তা হাসনীন মুকতাদির এই সাত গুনি নারীকে নারীজাগরণে ও কর্মের মাধ্যমে সমাজকে আলোকিত করায় ‘পারি’- ২০১৮ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ‘সাত বছরে পারিকে পাড়ি দিতে হয়েছে দুর্গম পথ। যেমন প্রতিটি নারীকে পাড়ি দিতে হয়। একজন নারীর উচিত আর একজন নারীর পথটিকে মসৃণ করে দেয়া। প্রতিটি নির্যাতিত নারীর কথা আমাদের বলতে হবে, বলতে হবে সংগ্রামে সফল নারীটির কথা্ও। জনমত তৈরি করতে হবে দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে।’

কবি কাজী রোজি বলেন, ‘পারি’ পারছে কারণ ‘পারি’ নারীকে শুধু নারী নয়, মানুষ ভাবছে। ‘পারি’ এগিয়ে যাবে, মানুষের উত্তরণ ও উন্নয়নে এর ভূমিকা অনন্য।

সভাপতির বক্তব্যে সাংবাদিক দিল মনোয়ারা মনু বলেন, এই আয়োজনের মাধ্যমে ‘পারি’ এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলো। নারীদের জন্য পথটা এখনও মসৃণ নয়। পথে এখনও আঁধার ও কাঁটা। ‘পারি’ আলোকবর্তিকা হয়ে পথ দেখিয়ে যাবে নারী প্রগতিশীলতাকে। ‘পারি’ লেখনী দিয়ে মসৃণ করবে নারীর পথ, চেতনার জাগরণের মাধ্যমে।’

অনুষ্ঠানে ‘পারি’ লেখক ঐক্য ফোরাম-এর কমিটি ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানটির সাংস্কৃতিক পর্বে কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশন হয়।