বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাগরিকত্ব বিতর্কের মধ্যে সোমবার জরুরি এক সংবাদ সম্মেলন করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ২০১৪ সালের ২ জুন তারেক রহমানের, তার স্ত্রীর এবং সন্তানের পাসপোর্ট বাংলাদেশ দূতাবাসে ফেরত দেয় যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ায় তারেক এখন বাংলাদেশের নাগরিক নন।
তারেক রহমানের পাসপোর্ট জমা দেওয়ার বিষয়ে গণমাধমে বক্তব্য দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে লিগাল নোটিশ পাঠায় বিএনপির এক আইনজীবী।
সে নিয়ে বিকেলে গুলশানে সংবাদ সম্মলেন করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে ফেরার ইচ্ছে নেই বলেই হয়তো পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়েছেন।
‘২০০৮ সালে তিনি যখন লন্ডনে যান তখন স্মার্ট কার্ডও ছিল না। পাসপোর্ট তার একমাত্র পরিচয়পত্র ছিল। সেই পাসপোর্ট তিনি সারেন্ডার করেছেন। তিনি আবেদনও করেননি নতুন পাসপোর্টের জন্য।’
যদি নতুন পাসপোর্টের আবেদন জানিয়ে থাকেন তাহলে তার রিসিপ্ট কপি দেখানোর আহ্বান জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, বিদেশে থেকে পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার অর্থ হলো তিনি দেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন। বিএনপি বলে আসছে তিনি চিকিৎসার জন্য সেখানে অবস্থান করছেন। এটা হাস্যকর।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন বলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে উদ্ধৃত করে দুটি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
এই প্রেক্ষাপটে প্রতিমন্ত্রীসহ দুই সম্পাদককে তারেকের পক্ষে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায় বিএনপি।
তারেক রহমানের পক্ষে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সোমবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ ও ‘কালের কন্ঠ’ পত্রিকায় যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে ওই দুই পত্রিকার সম্পাদক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
তা না হলে দেওয়ানী ও ফৌজদারি আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এর আগে নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন: তারেক রহমানকে নিয়ে মিথ্যাচার করায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রিজভীর দাবি তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন এবং পাসপোর্ট জমা দেয়ার সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দুর্নীতিসহ বিভিন্ন মামলার মুখে পড়েন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান। পরের বছর জামিনে মুক্ত হয়ে লন্ডন চলে যান তিনি। তারপর থেকে স্ত্রী-কন্যা নিয়ে সেখানেই অবস্থান করছেন তারেক।