বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মন্তব্য করে দেয়া কানাডার ফেডারেল কোর্টের জুডিশিয়াল রিভিউ’র রায়ের বিরুদ্ধে কোনো পক্ষেরই আপিল করার সুযোগ নেই। কানাডার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্টের ৭৪ (ডি) অনুচ্ছেদ এর বিধানের কারণে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। ফেডারেল কোর্টের রেজিস্ট্রি বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কানাডাভিত্তিক বাংলা নিউজ পোর্টাল নতুন দেশ ডট কম এ তথ্য জানিয়েছে।
ফেডারেল কোর্টের রেজিস্ট্রি বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেছেন, জুডিশিয়াল রিভিউ নিষ্পত্তি করার সংশ্লিষ্ট রুলস অনুসারে ঘোষিত রায়ের বিরুদ্ধে কারোরই আপিল করার সুযোগ নাই।
আলোচ্য মামলায় সরকার পক্ষের অ্যাটর্নি আয়ান হিকস বলেন, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট এর ৭৪ (ডি) অনুচ্ছেদ এর বিধানের কারণে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না।
ফেডারেল কোর্টের রেজিস্ট্রি বিভাগের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে ফেডারেল কোর্ট সিটিজেনশীপ, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশনস রুলস এর ১৮ অনুচ্ছেদ অনুসরন করা হয়। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মামলায় সাধারনভাবে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট থাকলে যে কোনো পক্ষকে সিটিজেনশীপ অ্যাক্ট এর ২২(২) এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট এর ৭৪ (ডি) অনুসারে সেই প্রশ্ন সত্যায়িত করার জন্য বিচারকের প্রতি আবেদন জানাতে হবে।
সিটিজেনশীপ অ্যাক্ট এর ২২(২) এ বলা হয়েছে, জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন নিস্পত্তিকারী বিচারক যদি ‘এই মামলায় সাধারনভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট রয়েছে; এই মর্মে সত্যায়িত করেন, তা হলেই কেবল জুডিশিয়াল রিভিউর রায়ের বিরুদ্ধে ফেডারেল কোর্ট অব আপিলে আপিল করা যাবে। সংশ্লিষ্ট বিচারককে প্রশ্নটি উল্লেখ করে তা সত্যায়িত করতে হবে। অপরদিকে, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট এর ৭৪ (ডি) অনুচ্ছেদেও বলা হয়েছে, জুডিশিয়াল রিভিউর রায় দেওয়ার সময় বিচারক যদি ‘এই মামলায় সাধারণভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট আছে’ এই মর্মে সত্যায়িত করে সনদ দেন তাহলেই কেবল জুডিশিয়াল রিভিউর রায়ের বিরুদ্ধে ফেডারেল আপিল কোর্টে আপিল করা যাবে। সত্যায়নের সময় বিচারককে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি কি সেটিও উল্লেখ করে দিতে হবে।
জুয়েল গাজীর জুডিশিয়াল রিভিউর নিষ্পত্তি হওয়ার সময় আবেদনকারী কিংবা সরকার পক্ষ থেকে ‘মামলার সাথে জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পৃক্ত আছে’ মর্মে কোনো প্রশ্ন তোলেননি। ফেডারেল কোর্টের বিচারক তার রায়ে উল্লেখ করেছেন, কোনো পক্ষই সত্যায়নের জন্য কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করেননি। কাজেই এই মামলায় কোনো প্রশ্নই সত্যায়ন করা হবে না।
উল্লেখ্য, জুয়েল গাজী নামে বিএনপি’র একজন কর্মীর কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ করে ইমিগ্রেশন অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফেডারেল কোর্টে জুডিশিয়াল রিভিউ’র আবেদন করা হয়েছিলো। জুডিশিয়াল রিভিউ’র আবেদন নিস্পত্তি করতে গিয়ে ফেডারেল কোর্টের বিচারক বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মন্তব্য করে ইমিগ্রেশন অফিসারের সিদ্ধান্তকে বহাল রাখেন।