কানাডার আদালত দ্বারা ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের’ তকমা পাওয়ার পর বিএনপি বলেছে, তারা সন্ত্রাসীতো নয়ই; বরং বিএনপিই উল্টো সন্ত্রাসের শিকার।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেছেন: বিএনপি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী একটি আদর্শিক রাজনৈতিক সংগঠন। বিএনপি গণতন্ত্রকে গভীরভাবে ধারণ করে, লালন করে। সন্ত্রাসের সঙ্গে বিএনপির কোন আপোস নেই।
‘বিএনপি সবসময় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। বিএনপি কোন সন্ত্রাসী সংগঠন নয়, বরং সন্ত্রাসের শিকার,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কানাডার ফেডারেল আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করেছে জানালে নজরুল ইসলাম খান বলেন, কখন কোন আদালত কী বলেছে আমার জানা নেই। সংবাদটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে কথা বলতে হবে। কোন আদালতের সমালোচনা করতে পারবো না।
‘তবে এটি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বিএনপি এদেশের গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবসময় অবস্থান গ্রহণ করে, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থেকেছে এবং এখনো অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।’
বিএনপির সদস্য হওয়ার কারণে একজন বাংলাদেশী নাগরিকের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ করে দেয়ার রায় বহাল রেখে দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলেও মন্তব্য করেন কানাডার ফেডারেল আদালতের বিচারক হেনরি এস ব্রাউন।
বিএনপির লাগাতার হরতালের কারণে সৃষ্ট সহিংসতা নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের বাইরে চলে গিয়েছিল বলে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা যে পর্যবেক্ষণ দেন তাকে যৌক্তিক উল্লেখ করে বিচারক ব্রাউন বলেন, কানাডার আইনে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের যে সংজ্ঞা দেওয়া আছে তার আলোকে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই ওই কর্মকর্তা উপসংহারে পৌঁছেছেন।
এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন: আমরা অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে হরতালের ডাক দিয়েছি। কাউকে কখনো গাড়ি পোড়াতে বলিনি, বোমা মারতে বলিনি। এসব জ্বালা-পোড়াও সরকারের লোকেরাও করতে পারে। সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও এজেন্সি বিএনপির জনপ্রিয় আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য এমন কিছু করতে পারে বলে আমরা বারবার অভিযোগ করে আসছি।
‘এসব জ্বালা-পোড়াও ঘটনার কোন তদন্ত কি এখনো হয়েছে? হয়নি,’ মন্তব্য করে তিনি বলেন: এ সরকারের আমলে তা হবেও না। কারণ তাদের লোকজনই জড়িত।
এ পরিস্থিতিতে বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলাকে হাস্যকর দাবি করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন: যদি কোন আদালত এমন কিছু বলে তাহলে সমস্ত বাংলাদেশকে বিবেচনায় নিতে হবে।
তিনি বলেন: ‘জাসদ যে হোম মিনিস্টারের বাড়ি ঘেরাও করতে গিয়েছিল তা কি কোন গণতান্ত্রিক তৎপরতা? ভারতীয় হাই কমিশনারকে যে কিডন্যাপ করতে গিয়েছিল তা কি গণতান্ত্রিক তৎপরতা? আওয়ামী লীগ যে পল্টনে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছিলো তা কি গণতান্ত্রিক তৎপরতা?’
ইতিহাস টেনে এনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি যখন ১৯৯১ সালে সরকার গঠন করলো তখন বিরোধীরা কী করেছিল? এমনকি ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ কি তাণ্ডব চালিয়েছিলো মানুষ কি ভুলে গেছে?
‘সেই হিসেবেতো আওয়ামী লীগও সন্ত্রাসী দল। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সব দলই সন্ত্রাসী দল হয়ে যাবে।’
‘কাজেই আমি বলছি যে, কোন দেশের আদালত যদি এ ধরনের কিছু বলে থাকে তাহলে তার সমালোচনা করার সুযোগ নেই। তবে এটা বলতে পারি, আমি বিএনপির প্রতিষ্ঠার সময় থেকে ছিলাম, আছি। আমি দেখে আসছি যে, বিএনপি একটি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল। কোন সন্ত্রাসী আন্দোলনে নেই বিএনপি। সন্ত্রাসকে উৎসাহিতও করে না বিএনপি।’