করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে অনলাইনে মিটিং করা হয়েছে, তাহলে আবার সিঙ্গারার খরচ কেন? বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের এমন প্রশ্ন করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ৩০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘আমরা অনলাইনে মিটিং করলাম। জুমের মাধ্যমে আমরা সিঙ্গারা পাঠাবো? এটা কি ভ্যালিড (বৈধ) প্রশ্ন? এমন অযৌক্তিক বিষয় সাংবাদিকদের নজরে এসেছে। আপনাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। পার্চেজ নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, করোনায় বাসায় বসে জুম মিটিং করলেন কেন? আপ্যায়ন ব্যয় করা লাগবে? প্রকল্পের আওতায় আপ্যায়ন ব্যয় আছে। তার মানে এই নয় যে, অযৌক্তিকভাবে ব্যয় করতে হবে। প্রকল্পের আওতায় অযৌক্তিক আপ্যায়ন ব্যয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও উদ্বিগ্ন। তিনি বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট সবাই কথা দিয়েছেন, তাদের যেসব সুযোগ-সুবিধা, আইনকানুন আছে, সেগুলো তারা প্রয়োগ করবেন।
জনগণের অর্থ নিয়ে নয় ছয় করা যাবে না এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবাই স্বীকার করি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি আছে। ভুল হয়েছে। কিন্তু বার বার একই ভুল গ্রহণযোগ্য নয়। সবাই মিলে আলোচনা করেছি, কীভাবে এটাকে বন্ধ করা যায়। এ বছর থেকে কাজ শুরু করলাম, নতুন প্রকল্পগুলোর জন্য আমরা অনেকটা সচেতন হব।
এম এ মান্নান বলেন, পরিকল্পনা কমিশন আরও সচেতন হবে। আর যারা প্রকল্প তৈরি করবেন, তারা আগের তুলনায় অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করবেন। যাতে এ ধরনের কাজ আগামীতে আর না হয়। সচিবরা বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আশ্বস্ত করেছেন; তারা টাস্কফোর্স গঠন করেছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব কী কী শাস্তির বিধান আছে, সেটা উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, সবাই একমত হয়েছি, শুধুু করোনার জন্য নয়, অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, অপচয় বিশেষ করে যেকোনো পরিস্থিতিতে এটা পরিহার করতে হবে। এটা অপরিহার্য। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন সময় আমি শেয়ার করেছি। তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তিনি এ সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছেন যে, এগুলো তিনি গ্রহণ করবেন না। আমাদের কাছ থেকে শুনেন, তা নয়। তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) নজরেও আসছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিশেষ প্রকল্পের রিভিশন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই প্রশ্ন করেন, এত রিভিশন কেন করেন। প্রথমে বললেন দুই-তিন বছরের প্রকল্প। তারপরে এক বছরের মাথায় এসে বলেন, চার বছর লাগবে। আরেক বছর পরে আবার এসে বললেন ব্যয় বাড়াতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন যে, এগুলো শৃঙ্খলা বিরোধী। এটা আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনগণ আমাদের ওপর নজর রাখছে। আমাদের কাজ দৃশ্যমান। আমরা অবকাঠামো তৈরি করছি। মানুষ অনেক সচেতন। আমাদের গতিবিধি, আচার-আচরণ দেখছে। জনগণের সম্পদ আমরা কীভাবে ব্যবহার করছি, তা তারা গভীর নজরে রেখেছে। তাই টাকার ব্যবহার, সময়োপযোগিতা ও পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।