সংস্কৃতি খাতের বাজেট নিয়ে আমরা হতাশ: গোলাম কুদ্দুছ
নতুন প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫৭৫ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৫০ কোটি টাকা কম। গত অর্থবছরের এ খাতে সংশোধিত বাজেটে ছিল ৬২৫ কোটি টাকা
বর্তমান সরকার নিজেদের সংস্কৃতিবান্ধব বলে আসলেও প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতি খাতকে অবহেলিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের অভিভাবক সংগঠন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।
বাজেট পরবর্তী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংস্কৃতি খাতে সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট পেশের পর চ্যানেল আই অনলাইনকে এমনটাই জানান গোলাম কুদ্দুছ। তিনি জানান, এ বিষয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি শনিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে এগারোটায় সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার নতুন প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫৭৫ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৫০ কোটি টাকা কম। গত অর্থবছরের এ খাতে সংশোধিত বাজেটে ছিল ৬২৫ কোটি টাকা।
সংস্কৃতি খাতের বাজেট নিয়ে নিজেদের হতাশার কথা জানিয়ে এই সংগঠক বলেন, সংস্কৃতি খাতে যে বাজেট এবার প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে আমরা হতাশ। হতাশ এই কারণে যে, একটি বাজেটে তো সরকারের নীতি আদর্শ এর প্রতিফলন ঘটে। সরকার একদিকে বলছে আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ সংস্কৃতি বান্ধব জাতি, মানুষে মানুষে মৈত্রী বন্ধন গড়ে তুলতে চাই, কিন্তু বাস্তবতা হলো বাজেটে সরকারের সেই সব কথার প্রতিফলন মোটেও ঘটেনি।
তিনি মনে করেন, বাজেটে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তাতে গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তোলার জন্য যে প্রণোদনা দরকার এই বরাদ্দে তা কখনো সম্ভব নয়। যার কারণে আমাদের প্রস্তাবনা ছিলো জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে ১ শতাংশ সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ দেয়ার। সেটা না হলে পুরো দেশে সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।
সুস্থ জাতি গঠনে সংস্কৃতির বিকল্প নেই এমনটা জানিয়ে সংষ্কৃতি অঙ্গনের এই ব্যক্তিত্ব মনে করেন, আজকে যে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, মাদকাসক্তি বা নারী নির্যাতন বা সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির মহড়া বাড়ছে এগুলোর বিরুদ্ধে একটি নৈতিক অবস্থান তৈরি করতে গেলে অবশ্যই যে কাউকে সুস্থ সংস্কৃতির দারস্থ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। সেই সাংস্কৃতিক চর্চা যদি আমরা ঠিক ভাবে না করতে পারি, তাহলে সেই জায়গাগুলো আমাদেরকে দিন দিন হারাতেই হবে। সেই জায়গাগুলিতে ঠিকভাবে ফাইট দিতে না পারলে অমানবিক অনৈতিকতা এগুলি আরো বাড়বে। তার জন্য আমরা মনে করি দেশব্যাপী ব্যাপকভাবে সাংস্কৃতিক একটি জাগরণ দরকার, আর তার জন্য রাষ্ট্রের উপযুক্ত বাজেট বরাদ্দ করা দরকার। শুধু সংস্কৃতিক কর্মীদের একক চেষ্টায় সেটা সম্ভব হবে না রাষ্ট্রের সহযোগিতা ছাড়া।
সংস্কৃতি খাতে বাজেট বাড়ানোর জন্য এখনো সময় আছে দাবি করে গোলাম কুদ্দুছ বলেন, আর এই সরকার যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার, তাই আমাদের প্রত্যাশাও তাদের কাছে বেশি। কিন্তু যে বাজেট তারা করেছেন এটা অতি নগন্য। এখনো যেহেতু বাজেট পাস হয়নি, সময় যেহেতু সামনে আছে, সুযোগ রয়েছে। তাই আমরা চাইবো আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ বাড়াবেন।