সংসদ ভেঙে দিয়ে পরের নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন জোট। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনোভাবেই এ দাবি মেনে নেয়া সম্ভব না।
বুধবার দুপুরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সংলাপ শেষে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এ সময় তিনি বলেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে ১০ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয়েছে, এর উদ্দেশ্য ভালোভাবে দেখছি না আমরা।
‘‘ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবে ফাঁক-ফোকর তৈরির চেষ্টা আছে। এ সুযোগে আবারও কোনো অপশক্তি ক্ষমতা দখলের মতো সুযোগ নিতে পারে।’’
তিনি বলেন, তারা যে ৭ দফা নিয়ে এসেছিল, তার অধিকাংশই মেনে নেয়া হয়েছে। কিন্তু আজ তারা এমন কিছু বিষয় নিয়ে এসেছে, তারা যেগুলোকে বলছে সংবিধান সম্মত; কিন্তু সেগুলো সংবিধান সম্মত নয়। তারা বলছে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় পিছিয়ে দিতে।
‘‘কিন্তু, সংবিধানে স্পষ্ট করা আছে, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার শেষ তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সেটাকে পরবর্তী ৯০ দিনে নিয়ে যাওয়ার একটা বাহানা তাদের প্রস্তাবনায় আমরা দেখেছি। আমরা মনে করছি, এর মধ্যদিয়ে নানা ফাঁক-ফোকর খুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।এটার উদ্দেশ্য, তৃতীয় কোনো অপশক্তি এসে ওয়ান-ইলেভেনের মতো কোনো অনভিপ্রেত ও অস্বাভাবিক ঘটনা। তাদের সুযোগ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে বলে আমরা মনে করছি।’’
দ্বিতীয় দফার সংলাপে খালেদা জিয়ার মুক্তি নয় জামিন দাবি করা হয়েছে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বলে সংবাদিকদের জানান কাদের।
সেই সঙ্গে এই ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপ এখানেই শেষের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ডায়লগ শেষ তবে, আলোচনা চলতে পারে।
বেলা সোয়া ১১টার দিকে শুরু হওয়া এ সংলাপে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলের ১০ নেতা। আর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১০ নেতা।
গত বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রথম দফা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সংলাপের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দাবি করে, বিশেষ কোনো সমাধান হয়নি। আন্দোলন চলবে। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংলাপে অনেক বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আরো আলোচনা চলবে।
এরই মধ্যে গত ৪ নভেম্বর ৭ দফা দাবির সাংবিধানিক এবং আইনগত দিক বিশ্লেষণের জন্য আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে আবারো চিঠি দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
চিঠি পেয়ে ক্ষমতাসীন জোটের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় সংলাপের জন্য বুধবার দিন নির্ধারণ করা হয়।