জাতীয় সংসদে বুধবার প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগ নিয়ে যে সমালোচনা হয়েছে তার দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংসদে বিচার বিভাগ নিয়ে যা হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। যেভাবে প্রধান বিচার বিভাগ ও বিচারপতি নিয়ে যেভাবে বিষোদগার করা হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও নজিরবিহীন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মহানগর নাট্যমঞ্চে বেগম খালেদা জিয়ার দশম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ১/১১ এর হোতাদের কাছ থেকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করছে। তারা পরিকল্পিতভাবে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। গতকাল সংসদে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া ও জিয়া পরিবারের সম্পদের হিসাব বের করা হবে। আমি বলছি, দশ বছর ধরে আপনারা হিসাব বের করছেন। কিছুই পাননি। পাবেনও না।
আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, জিয়া পরিবারের অবৈধ সম্পদ নেই। যা কিছু আছে আপনাদেরই আছে। আপনারা কানাডায়, মালয়েশিয়াসহ নানা দেশে সেকেন্ডহোম করছেন। আপনারা দেশের শেয়ারবাজার, ব্যাংক ধ্বংস করেছেন। কুইক রেন্টাল দুর্নীতি, মেট্রোরেলে মেগা দুর্নীতি করে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ধ্বংস করে দিচ্ছেন। পদ্মাসেতু আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরাও সন্দিহান। এখনো পিলারের তল খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আপনাদের এসব দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের তদন্ত হবে। জনগণ তা করবে। রেহায় পাবেন না। সময় প্রায় শেষ।
এসময় ফখরুল বলেন, সরকারের এসব ব্যর্থতা ঢাকতেই সংসদে জিয়া পরিবার নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। চলমান সমস্যায় জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরিয়ে নেওয়াই তাদের টার্গেট। আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলতে পারি, জিয়া পরিবারের কিছুই খোঁজে পাবেন না।
তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য বিএনপির ত্রাণবাহিী ট্রাক না দেয়া কিসের পরিচয়? এটিকে অমানবিক আচরণ। ওবায়দুল কাদের বলেছেন আমরা নাকি লোক দেখানো ত্রাণ দিতে গিয়েছি। আমরা তার কাছ থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য আশা করি। তার কাছ থেকে এধরনের বক্তব্য আশা করিনি।
তিনি সরকারকে এসব অপপ্রচার, মিথ্যাচার থেকে বেরিয়ে এসে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার জন্য আহ্বান জানান। অন্যথায় জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারকে শান্তির সঙ্গে বিদায়ও নিতে দিবে না বলে হুশিয়ার করে দেন মির্জা ফখরুল।
ঢাকা মহনগরী দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, আলোচনা সভার মধ্যে বিএনপি মহাসচিবের উপস্থিতিতেই নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে চেয়ার ছুড়াছুড়ি শুরু করলে হঠাত পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এসময় মহাসচিব মির্জা ফখরুল অনেক চিতকার করে এই হট্টগোল থামানোর চেষ্টা করে। প্রায় ১০মিনিট পর পরিবেশ শান্ত হয়।
এরপর মহাসচিব বক্তব্য দিতে এসে যারা এধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির সম্মুখিন করার কথা বলেন।