চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সংলাপের জন্য শুভ কামনা

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার ২৩টি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রতিনিধিদের নিয়ে এক বৈঠকের পর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসি সচিব

নির্বাচন সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হলেও সেখানে সবচেয়ে বড় বিষয় ছিল, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের আগে ও পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি। তাই নির্বাচনের সুষ্ঠু রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগকে নির্দেশও দিয়েছে ইসি।

স্থানীয় সরকার হোক কিংবা জাতীয় নির্বাচন, অতীত অভিজ্ঞতা প্রমাণ দেয়; সহিংসতা হয়। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের পর সেই সহিংসতার মাত্রা আরো বেড়ে যায়। যার শিকার হন পরাজিত রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এমনকি নারী-শিশুরাও বাদ যায় না সেই সহিংসতা থেকে।

এমন সহিংসতার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচন। ওই নির্বাচনে জয়ী হয় বিএনপি-জামায়াত জোট। জয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই সারাদেশে তাণ্ডব চালায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তাদের হামলার লক্ষ্য হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু হিন্দুরা। হত্যা, ধষর্ণ ও অগ্নিসংযোগের হাজার হাজার ঘটনা ঘটায় তারা। কিন্তু সেই সময়ে ক্ষমতায় থাকা তত্ত্বাবধায়ক সরকার সেই তাণ্ডব চেয়ে চেয়ে দেখেছে। তা থামাতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

শুধু ২০০১ সালের নির্বাচনের পরই নয়, বর্তমান সরকারের সময় অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এমনকি সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও কিছু না কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনাতেও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

সুতরাং নির্বাচনের আগে এবং পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করাই বড় বিষয়। বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আর মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন কমিশন থেকে সেই বার্তাই দেয়া হয়েছে।

এটা ঠিক, ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় রাজনৈতিক চাপে কোনো কোনো সহিংসতা ঠেকাতে ব্যর্থ হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে তারা যেন সেই চাপ মুক্ত থাকতে পারে; সেই উদ্যোগ নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে। কেননা সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে সেই দায়িত্ব তাদেরই। এক্ষেত্রে সফলতা এবং ব্যর্থতা সবরকম দায়ই তাদের।

আমরা মনে করি, সার্বিকভাবে দেশের শান্তি এবং শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হলেও রাজনৈতিক দলগুলোকেও সেখানে বড় ভূমিকা রাখতে হবে।

তবে সব কিছুর আগে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান জরুরি। এর অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৃহস্পতিবার থেকে সংলাপ শুরু করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অতীত অভিজ্ঞতা যাই হোক, দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে এ সংলাপ সফল হওয়া প্রয়োজন। আমরা সংলাপের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করছি। জয় হোক বাংলাদেশের, বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার।