ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগেই সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে গেছে। রোববার রাতে ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের জয়ে শ্রীলঙ্কার শেষ চারের লড়াইও ধূসর হয়ে গেছে। আশা যতটুকু থাকছে, কাগজে-কলমের হিসেবে, সেটিও খুব একটা ভরসা যোগাচ্ছে না। সোমবার বিশ্বকাপের মঞ্চে তাই লঙ্কা-ক্যারিবীয় ম্যাচটি এক অর্থে নিয়মরক্ষারই!
পাকিস্তানকে হারিয়ে শুভ সূচনা করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরের ছয় ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরেছে, অন্য ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। সবমিলিয়ে মাত্র ৩ পয়েন্ট নিয়ে দশ দলের টুর্নামেন্টে ৯ নম্বরে অবস্থান ক্যারিবিয়ানদের। শ্রীলঙ্কার পর নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে লড়বে জেসন হোল্ডারের দল।
অন্যদিকে ৭ ম্যাচের মাত্র দুটিতে জেতা শ্রীলঙ্কা হেরেছে তিনটিতে। অপর দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয় বৃষ্টিতে, যাতে এসে গুরুত্বপূর্ণ দুই পয়েন্ট। সবমিলিয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে লঙ্কানদের অবস্থান সাত নম্বরে। উইন্ডিজের পর শ্রীলঙ্কার শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ সেমিতে এক পা দিয়ে রাখা ভারত।
শ্রীলঙ্কা যদি নিজেদের শেষ দুম্যাচে জেতেও, পয়েন্ট হবে ১০। তাদের লড়াই তখন টেবিলের অন্য যে দলটি ১০ পয়েন্টে থাকবে তাদের সঙ্গে। সেই হিসেবে বাংলাদেশ বা পাকিস্তান নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলে ১১ পয়েন্টে পৌঁছে যাবে। ১০ পয়েন্টে আটকে যেতে পারে কেবল ইংল্যান্ড, যদি তারা নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারে। সেক্ষেত্রেও স্বাগতিকদের টপকে যাওয়ার সুযোগ কম লঙ্কানদের। কেননা মরগানের দল রানরেটে অনেক এগিয়ে থাকবে করুনারত্নের দলের চেয়ে।
চলতি বিশ্বকাপে শেষ ছয় ম্যাচেই জয়হীন থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সান্ত্বনার জয়ের জন্য মরিয়া থাকবে। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে লল্কানরা চাইবে সম্মানজনক অবস্থানে থাকতে।
বিশ্বকাপের মুখোমুখি লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আটবারের সাক্ষাতে ক্যারিবিয়ানদের চার জয়ের বিপরীতে লল্কানরা জিতেছে তিনটিতে। অন্য ম্যাচটি পরিত্যক্ত।
এরমধ্যে অবশ্য ১৯৯৬ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়াকওভার পায় শ্রীলঙ্কা। পরে ২০০৩ এবং ২০০৭ বিশ্বকাপে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টানা জয় পায় লঙ্কানরা। ১৯৭৫, ১৯৮৭ (দুবার) এবং ১৯৯২ বিশ্বকাপের লড়াইয়ে জয় পায় উইন্ডিজ।
সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে ৫৬ বার মুখোমুখি হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কা। তাতে শ্রীলঙ্কার ২৫ জয়ের বিপরীতে ক্যারিবীয়রা জিতেছে ২৮ ম্যাচে। অন্য তিনটি ম্যাচে ফল আসেনি।
২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকেই ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কা চলতি বিশ্বকাপে খুব একটা আহামরি পারফরম্যান্স উপহার দিতে পারেনি। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখালেও পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি দিমুথ করুনারত্নের দল।
পাকিস্তানকে হারিয়ে শুরুর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপর প্রত্যাশার চাপ বেড়ে গিয়েছিল। অনেকেই ক্যারিবীয়দের সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে এগিয়ে রাখতে শুরু করেন। সেই প্রত্যাশার চাপে নুইয়েই পড়েছে হোল্ডারের দল। শেষ দুই ম্যাচে জিতে সান্ত্বনা নিয়ে বাড়ির বিমান ধরার সুযোগ অবশ্য থাকছে উইন্ডিজের।
টিম নিউজ
সুরঙ্গা লাকমলের জায়গায় কাশুন রাজিথাকে একাদশে নিতে পারে শ্রীলঙ্কা। জীবন মেন্ডিসের জায়গায় একাদশে দেখা যেতে পারে মিলিন্দা সিরিবর্ধনেকে।
ইনজুরির কারণে আগের ম্যাচে খেলতে পারেননি এভিন লুইস। তিনি ফিট হয়ে উঠলে জায়গা দিতে সুনিল আমব্রিস ছিটকে পড়বেন।
সম্ভাব্য একাদশ
শ্রীলঙ্কা: দিমুথ করুনারত্নে, কুশল পেরেরা, অভিষেক ফার্নান্দো, কুশল মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, মিলিন্দা সিরিবর্ধনে/জীবন মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, থিসারা পেরেরা, ইসুরু উদানা, লাসিথ মালিঙ্গা ও কাশুন রাজিথা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ক্রিস গেইল, এভিন লুইস/সুনিল আমব্রিস, শাই হোপ, নিকোলাস পুরান, সিমরন হেটমায়ার, কার্লোস ব্র্যাথওয়েট, জেসন হোল্ডার, অ্যাশলে নার্স, কেমার রোচ, শেলডন কটরেল ও ওশানে থমাস।