শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার একদিন পেরিয়ে গেলেও এর পেছনে কারা ছিলো তা এখনও স্পষ্ট নয়। জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস ও লস্কর-ই-তৈয়বার দিকে সন্দেহের দৃষ্টি রাখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশ রিপোর্টের ভিত্তিতে ন্যাশনাল তৌহিদ জামায়াত নামের একটি সংগঠনও আছে তালিকায়। রোববারের হামলাগুলোতে ৭ আত্মঘাতী হামলাকারীর অংশগ্রহণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
মূলত ১৯৮৩ সালে শুরু হয়েছিলো শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ। ২৫ বছরের রক্তাক্ত যুদ্ধে তামিল টাইগাররা হত্যা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধি, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী লক্ষণ কাদিরগামার এবং বহু সামরিক ও বেসামরিক নাগরিককে।
২০০৯ এর এক অভিযানে তামিল টাইগার প্রধান প্রভাকরনের মৃত্যুর পর ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা সরকার। এরপর, প্রায় ১ দশক অনেকটাই শান্ত শ্রীলঙ্কা। তবে রোববার ইস্টার সানডেতে ৮টি স্থানে সিরিজ বোমা হামলায় আবারও অশান্ত ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রটি।
রক্তাক্ত ইতিহাস থাকলেও বিদ্রোহী তামিল টাইগাররা এই হামলার পেছনে নেই বলে বিশ্বাস অধিকাংশ নিরাপত্তা বিশ্লেষকের। বরং সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডে মসজিদে জঙ্গি হামলাকে বড় একটি ইস্যু বলে মনে করছেন তারা।
ক্রাইস্টচার্চে হামলার বদলা হিসেবে কোনো ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন শ্রীলঙ্কায় হামলা চালিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। সেক্ষেত্রে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকছে ইসলামিক স্টেট – আইএস।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা শ্রীলঙ্কায় সদস্য নিয়োগ করছে বলে খবর রয়েছে। তারাও আছে সন্দেহের তালিকায়।
হামলার ১০ দিন আগে বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে শ্রীলঙ্কার পুলিশ প্রধান রিপোর্ট দিয়েছিলেন, ন্যাশনাল তৌহিদ জামায়াত নামে একটি সংগঠন চার্চে হামলা চালাতে পারে। তবে, সংগঠনটি এতো বড় ও সংঘবদ্ধ হামলা চালাতে সক্ষম কিনা, তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মধ্যে মতভেদ আছে।
রোববার প্রায় একইসময়ে চালানো প্রথম ৬টি হামলায় ৭ জন আত্মঘাতী হামলাকারী অংশ নিয়েছিলো বলে শ্রীলঙ্কা সরকারের একজন অপরাধ বিশেষজ্ঞ বার্তা সংস্থা এপি-কে নিশ্চিত করেছেন।