মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন: বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের সামনে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়টি; তাই দ্রুত এর আইনগত পরিবর্তন আনতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের বিদায় সংবর্ধনা উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বার্নিকাটকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
বার্নিকাট আরো বলেন: দুর্ভাগ্য যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ বিষয়ের অগ্রগতি ছিল শ্লথ। আমি এ কথাটি অনেকবার জোর দিয়ে বলেছি। আবারও বলব, আন্তর্জাতিক শ্রমনীতি মেনে চলা বুদ্ধিমানের কাজ। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব আইনগত পরিবতন জরুরি। নতুবা ক্রেতারা অন্যদিকে যাবে।
তিনি বলেন: আইনগত সমস্যার সমাধান হলে বিদেশের বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। কারণ ভোক্তারা এখন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে শ্রম ইস্যুগুলো বেশি বিবেচনায় নেয়। কিন্তু শ্রমনীতি মানতে দেরি করলে এ দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ কারখানাগুলোর অন্তর্ভুক্ত উল্লেখ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন: এদেশের পোশাক খাতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। গত ৫ বছরে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের সহযোগিতায় এটি সম্ভব হয়েছে। যা আমার স্বচক্ষে দেখার সু্যোগ হয়েছে। আরএমজি শিল্পের মাধ্যমে এ দেশের লাখ লাখ শ্রমিক দারিদ্রের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে। আগামীতে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের বিশেষজ্ঞ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কষ্টার্জিত অগ্রগতিকে ধরে রাখার পরামর্শ থাকলো।
অনুষ্ঠানে বার্নিকাটকে উদ্দেশ্য করে বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন: সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে দেশে অথনীতি স্থিতিশীল রয়েছে, প্রবৃদ্ধি এখন ৮ শতাংশের কাছাকাছি। সম্প্রতি পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের মজুরি ৮ হাজার টাকা করা হয়েছে। তিন ধাপে ৩৮১ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। অথচ বিগত বছরে যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পণ্যের মূল্য কমেছে ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা যেনো ‘ফেয়ার প্রাইস’ দেন এ বিষয়টি দেখার জন্য আপনার প্রতি অনুরোধ থাকলো।
সিদ্দিকুর আরো বলেন: আপনি দেশে ফিরে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের এদেশের পোশাকের জন্য উপযুক্ত মূল্য দিতে অনুরোধ জানাবেন এটা অনুরোধ থাকলো। যাতে বাংলাদেশের শ্রমিকরা মানসম্পন্ন জীবন যাপন করতে পারে।
এছাড়া বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য যেনো জিএসপি সুবিধা পূনর্বহাল করা হয় সে অনুরোধও করেন সিদ্দিকুর।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বার্নিকাট বলেন৷ অামি কথা দিচ্ছি, সবসময় বাংলাদেশের ইতিবাচক দিকগুলো বিশ্বের দরবারে তুলে ধরব। তবে বর্তমানে চ্যালেঞ্জ হলো জাতীয় কর্মপরিকল্পনার অাওতায় কারখানাগুলোর সংস্কারের কাজ শেষ করা, অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্সের কারখানাগুলোতে অগ্রগতি বজায় রাখা।