গামীকাল মহান মে দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিনটি পালনের ১৩১তম বার্ষিকী কাল। ‘শ্রমিক-মালিক গড়ব দেশ; এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ শ্লোগানে পালিত হবে এবারের মে দিবস।
১৮৮৬ সালের ১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওইদিন তাদের আত্মদানের মধ্যদিয়েই শ্রমিক শ্রেণীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এ দিনটিকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী সরকারি ছুটি থাকে এ দিন। বাংলাদেশেও আগামীকাল সরকারি ছুটি।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এছাড়াও বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মহান মে দিবস উপলক্ষে শ্রমজীবী মানুষদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা আজ এক বিবৃতিতে বলেন, মে দিবস শ্রমিকের সুদৃঢ় সংকল্পের অঙ্গীকার। আর এই সংকল্প হলো শোষণ-বঞ্চনার অবসানের লক্ষ্যে সামাজিক পরিবর্তন ঘটিয়ে শ্রেণী বৈষম্যের অবসান করার।
ঐতিহাসিক ঘটনাসমৃদ্ধ মহান মে দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ১ মে এবং ১১ মে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করছে।
এছাড়া আগামীকাল বিকেল ৪টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৭ টায় বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হবে। র্যালিতে সরকার, মালিক, শ্রমিকসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিকরা অংশ নেবেন। শোভাযাত্রাটি রাজধানীর দৈনিক বাংলার মোড়ের শ্রম ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর পাশ দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হবে।
মে দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে এবছর সরকার প্রথমবারের মতো শ্রমিকদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষা সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিল থেকে আগামী ১১ মে শ্রমিকদের মেধাবী সন্তানদের মধ্যে আর্থিক সহায়তা দেবেন। যারা গতবছর এসএসসি-তে জিপিএ ৫ পেয়েছে এবং সরকারি মেডিকেল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে তাদের মধ্যে যারা এ তহবিল থেকে সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন তাদেরকে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হবে।
দিবসটি পালনে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে শ্রমিক সমাবেশ, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।