চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

শেষ ওভারের নাটকে ওয়ার্নারের হাত থেকে জয় কাড়ল প্রোটিয়ারা

মঞ্চটা তিনি তৈরি করে ফেলেছিলেন প্রায়। যে দেশে ক্যারিয়ারে কলঙ্কের অমোচনীয় দাগ লেগেছিল, সেই সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে নায়ক হয়ে ওঠার দারুণ এক সুযোগ হাতছানি দিয়ে ডাকছিল ডেভিড ওয়ার্নারকে। ঠিক পথে ছিলেন তিনিও। তালগোল পাকালেন বাকি সতীর্থরা। যাদের ব্যর্থতা নিজের কাঁধে তুলেও বাঁহাতি অস্ট্রেলিয়ান দেখলেন তাকে দর্শক বানিয়ে শেষ ওভারে ম্যাচটা কেড়ে নিয়ে গেল সাউথ আফ্রিকা!

জোহানেসবার্গে নিজেদের টি-টুয়েন্টি ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৮৯ রানে অলআউট হওয়া সাউথ আফ্রিকা পোর্ট এলিজাবেথে সর্বসাকুল্যে তুলেছিল ৪ উইকেটে ১৫৮ রান। খুব বেশি নয়। অস্ট্রেলিয়াও এগোচ্ছিল সেভাবেই। ৩ উইকেটে ৯৩ বলে ১২৪ করা দলটা হঠাতই হারায় পথ। ওয়ার্নার উইকেটে থাকার পরও শেষ ১২ বলে ২০ তুলতে না পেরে অজিরা ম্যাচ হেরে গেছে ১২ রানে। সিরিজে ১-১’এ সমতা ফেরায় যত উত্তেজনা জমা হয়ে গেল কেপ টাউনে শেষ ম্যাচের জন্য।

যদিও ম্যাচ জেতা গেছে, তবে যেভাবে শুরু করেছিলেন কুইন্টন ডি কক, তাতে সাউথ আফ্রিকার সংগ্রহটা আরও বড় না হওয়ার দায়টা বাকি ব্যাটসম্যানদের। ৩৮ বলের মধ্যেই দলের রান পেরোয় ৬০। যেখানে ডি ককের উদ্বোধনী সঙ্গী রেজা হেন্ড্রিক্সের রান ১৭ বলে ১৪!

হেন্ড্রিক্সকে ফিরিয়ে জুটি ভেঙেছেন পেসার কেন রিচার্ডসন। একাদশ ওভারে ১৫ করে ফিরে যান সবচেয়ে অভিজ্ঞ ফ্যাফ ডু প্লেসিসও। ডি কক তখন পর্যন্ত উইকেটে থাকায় বড় রানের পথেই এগোচ্ছিল স্বাগতিকরা।

১৫তম ওভারে এসে ডি কককে ফিরিয়ে প্রোটিয়াদের রান বন্যায় লাগাম দেন অ্যাডাম জাম্পা। ৩৪ বলে ফিফটি তোলা প্রোটিয়া অধিনায়ক মিচেল স্টার্কের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৪৭ বলে ৫ চারের সঙ্গে ৪ ছক্কায় ৭০ করে। তার ফেরার পর রসি ফন ডার ডুসেনের ৩৭ রান প্রোটিয়াদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

ডি ককের ইনিংসের জবাব তার মতো করেই দিচ্ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের সঙ্গে ৪৮, সাউথ আফ্রিকায় কলঙ্কের সঙ্গী স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে ৫০ রানের জুটিগুলোতে হেসেখেলেই জয় পাওয়ার কথা অজিদের। এমনকি ১২৪ রানের মাথায় অ্যালেক্স ক্যারি যখন লুনগি এনগিডির বলে ১৪ রানে বোল্ড হলেন, তখনও হারের চিন্তা হয়ত মাথায় আসেনি দলটির, কারণ উইকেটে যে ওয়ার্নার আছেন।

৩৮ বলে ফিফটি করা ওয়ার্নার হয়তো ম্যাচটা জেতাতে পারতেন, যদি অন্যপ্রান্তের সতীর্থরা একটু স্ট্রাইকে যাওয়ার সুযোগ দিতেন তাকে। ১৮ বলে ২৫ রান যখন দরকার, এনগিডির করা ১৮তম ওভারে মাত্র ৫ রান নিতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া। দলের প্রয়োজনে ১৩ বলে ১১ রান করে মিচেল মার্শ নষ্ট করে গেছেন গুরুত্বপূর্ণ দুটি বল। সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা করেছেন সেই ওভারে পঞ্চম বলে আউট হয়ে শেষ বলে ম্যাথু ওয়েডের হাতে স্ট্রাইক তুলে দিয়ে। শেষ বলে একরান নিয়ে ওয়ার্নারকে পরের ওভারে খেলার সুযোগটা আটকে দিলেন বাঁহাতি ওয়েড। জয়ের জন্য অজিদের দরকার ১২ বলে ২০।

১৯তম ওভার করতে এলেন কাগিসো রাবাদা। তার প্রথম বলেই ক্যাচ দিলেন ওয়েড। এরপর এলেন অ্যাস্টন অ্যাগার। প্রথম বল নষ্ট করে ওয়ার্নারকে স্ট্রাইক দিলেন বটে, তখন কাঁধে চেপে গেছে ১০ বলে ১৯ রানের চাপ। সেই চাপ আর সামলাতে পারেননি ওয়ার্নার বা অ্যাগার কেউই, রাবাদার করা ওই ওভারে এলো মাত্র ৩ রান।

আনরিচ নর্তের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে স্ট্রাইক পেলেও মাত্র এক রান নিয়ে প্রান্ত বদল করে ভুল করে বসলেন ওয়ার্নারও। পরের বলেই বোল্ড অ্যাগার। পরের চার বলে এলো মাত্র তিন রান। ম্যাচটা হেরে গেল অস্ট্রেলিয়া। ৫৫ বলে ৬৭ করেও তাই আর নায়ক হয়ে ওঠা হয়নি ওয়ার্নারের।