চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে পর্যায়ে গেছে তা অকল্পনীয়: সালমান এফ রহমান

সালমান এফ রহমান স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও সমালোচিত ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্ব। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে একাত্তর পরবর্তী সময়ে শিল্পায়নের পথে সমৃদ্ধ অগ্রযাত্রায় প্রতিষ্ঠিত করতে যেসব উদ্যোক্তা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম নাম সালমান এফ রহমান।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের বিজনেসের ক্ষেত্রে একদিকে যেমন রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন তিনি ঠিক তেমনি একইভাবে খেলাপি ঋণসহ শেয়ার বাজারের কেলেঙ্কারিতে বারবার বিশ্ব গণমাধ্যমে উঠে এসেছে তার নাম। বাংলাদেশের আর্থিক খাতের আলাদীনের চেরাগ তার হাতে- আর তিনি যেন এক ম্যাজিক ম্যান। তার ক্যারিশমাটিক ক্যারেকটার বুঝতে হিমশিম খেয়েছেন তাবৎ বোদ্ধা সমাজ। আর তাইতো সালমান এফ রহমান দেশবাসীর কাছে সবসময়ই এক প্রহেলিকা আর ধাঁধাঁ। তবে হাজারো সমালোচনা উপেক্ষা করে তিনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় নাম। অনেক সমালোচনার আড়ালে এই কর্ম উদ্যোক্তার রয়েছে গৌরবময় পারিবারিক ঐতিহ্য আর দেশের ও দেশের মানুষের জন্যে নিরলস কাজ করে যাওয়ার অদম্য চেষ্টা। সেই ইতিবাচক সালমান এফ রহমানই আজকে আমাদের চর্চার বিষয়।

সালমান এফ রহমান ১৯৫১ সালের ২৩ মে করাচিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার শাইনপুকুর গ্রামের এক ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম ফজলুর রহমান ছিলেন খ্যাতিমান আইনজীবী। তিনি অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের নেতৃত্বাধীন পার্লামেন্টের চীফ হুইপ ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি হোসেন সোহরাওয়ার্দী সরকারের রাজত্বমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৪৭-১৯৫৩ সাল পর্যন্ত তদানিত্বন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সদস্য হিসেবে শিক্ষা ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

তার মাতা সৈয়দা ফাতিনা রহমান কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী জঙ্গলবাড়ীর সৈয়দ বংশের জমিদার সৈয়দ মুহাম্মদ আতিকুল্লার কন্যা। সৈয়দ মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ হযরত শাহজালাল (রা:) এর সিলেট বিজয়ের প্রধান সিপাহশালার সৈয়দ নাসিরুদ্দিনের বংশধর ছিলেন। সৈয়দা ফাতিনা রহমান মাতৃসূত্রে নবাব আবদুল লতিফ, নবান সৈয়দ মুহাম্মদ, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর বংশধর ছিলেন। তিনি উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম ছাত্রী হিসেবে স্বর্ণপদকসহ প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাষ্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন এবং লেডি বেব্রুন কলেজে লেকচারার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনে তিনি শিক্ষা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন।

সালমান এফ রহমান ব্যক্তি জীবনে বিবাহিত। স্ত্রী, এক পুত্র এবং চার নাতি নাতনী নিয়ে তার সংসার। সালমান এফ রহমান ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হন এবং পরে করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেন। এখনকার সময়ে বাংলাদেশের শিল্প বাণিজ্য অঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম সালমান এফ রহমান। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তিনি একজন খ্যাতিমান ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতি হিসেবে স্বীকৃত।

তিনি করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে বড় ভাই আহমেদ সোহেল ফসিউর রহমানের সাথে একত্রে শিল্প প্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। দুই ভাই মিলে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট কোম্পানি যা সকলের কাছে বেক্সিমকো নামে পরিচিত। বেক্সিমকো খুবই অল্প সময়ের মধ্যে দেশ এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করে। এরপর তারা ফার্মাসিউটিক্যালস, টেক্সটাইল, সিরামিকস, সিনথেটিকস, জুট, রিয়েল এস্টেট, প্রকৌশল, মেরিন ফুড, আইটি, এভিয়েশন, অ্যানার্জি, জ্বালানী, মিডিয়া, টিভি চ্যানেল টেলিকমিউনিকেশন্সসহ বিভিন্ন খাতে ৩৯টি টি পাবলিক এবং প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। উক্ত কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে ৭০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এসব কোম্পানির উৎপাদিত বিশ্বমানের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে দেশের জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। বেক্সিমকো গ্রুপ বাংলাদেশের শীর্ষ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান।

শিল্পের পাশাপাশি তিনি বড় ভাইকে নিয়ে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক আইএফআইসি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৮১ সালে আরব বাংলাদেশ ব্যাংক এবি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন।

তিনি একজন ব্যবসায়ী নেতা হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। তার গতিশীল নেতৃত্বে বেসরকারি খাতে ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিদেরকে একটি অনন্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তিনি ১৯৮৯ সালে মাত্র ৩৮ বছর বয়সে ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার এন্ড কমার্স এর সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশের শিল্প এবং বাণিজ্যের বিকাশে অনন্য ভূমিকা রাখেন। ৪৩ বছর বয়সে বাংলাদেশের শিল্প এবং বাণিজ্যের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর সভাপতি নির্বাচিত হয়ে (১৯৯৪-১৯৯৬) দেশের শিল্প এবং ব্যবসায়িক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেন। উল্লেখ্য, তিনি সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এফবিসিসিআই এর প্রথম সভাপতি।তিনি ১৯৯৫-১৯৯৭ মেয়াদে সার্ক চেম্বারের সভাপতি হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে শিল্প ও  বাণিজ্য উন্নয়নে অসামান্য ভূমিকা রাখেন। সার্ক চেম্বারের সভাপতি হিসেবে তার দক্ষতা ও গতিশীল নেতৃত্ব দেশগুলোর ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ কর্তৃক ভূয়সী প্রশংসা লাভ করে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতি এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশনের এর দীর্ঘকালীন সভাপতি ছিলেন।

বর্তমানে এসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স এবং এলপিজি অপারেটরস এসোসিয়েশনসহ বহু ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আইএফআইসি ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস এর চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্বরত। সালমান এফ রহমান ব্যবসা এবং বাণিজ্যের পাশাপাশি একজন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী এবং ক্রীড়া প্রেমী ব্যক্তিত্ব। তিনি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তিনি শেখ কামালের নেতৃত্বে আবাহনী ক্রীড়া চক্র এবং পরে আবাহনী লিমিটেড প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করেন। তিনি আবাহনী লিমিটেডের সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেন। ক্রিকেট জগতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের সর্বাধিক জনপ্রিয় দল ঢাকা ডাইনামাইটস এর পৃষ্ঠপোষকও তিনি। এই সকল কাজের মধ্য দিয়ে তিনি ক্রিকেট এবং ফুটবলের উন্নয়নে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছেন। সালমান এফ রহমানের রক্তে মিশে আছে রাজনীতি। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সাথে জড়িত। বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬ দফা এবং ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং ৬ দফা আন্দোলন বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে চলেছেন। ২০০১ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদানের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন এবং ঢাকা-১ আসনে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা।

মানবকল্যান এবং জনসেবায় সালমান এফ রহমান এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে অবিরত সাহায্য সহযোগিতা করে চলেছেন। তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতালের ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। জেনেভা ভিত্তিক লুথেরান ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন এর মাধ্যমে রংপুর, দিনাজপুরসহ সারাদেশে দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচীতে উপদেষ্টা হিসেবে ভূমিকা পালন করে চলেছেন। নিজ এলাকার বিভিন্ন স্থানে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং জনজীবনের মান উন্নয়নে কাজ করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, পদ্মা কলেজ, ডিএন কলেজ, বনশ্রী ইউনিয়নের তাশুল্লা স্কুল, স্কলাস্টিকা স্কুলের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। তিনি রাজধানীর গুলশানে স্ব-উদ্যোগে নিজ হাতে একটি দৃষ্টিনন্দন ১০ তলা মসজিদ নির্মাণ করেন।

কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর কল্যাণে ১ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিমদের চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এবং সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন। ব্যক্তিগত সাহায্য সহযোগিতা ছাড়াও সালমান এফ রহমান তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে দোহার ও নবাবগঞ্জের উন্নয়নে বহু সরকারি প্রকল্প অনুমোদন করিয়ে সেখানকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। তিনি বিনামূল্যে দোহারে ২৪০টি আর্সেনিক মুক্ত টিউবওয়েল স্থাপন করে বিশুদ্ধ পানীয় ও জল সরবরাহের মাধ্যমে দোহারকে আর্সেনিক মুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি, কন্যা দায়গ্রস্তদের সাহায্য এবং চিকিৎসা সেবাসহ বহুবিধ মানবকল্যানমূলক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি তার এলাকায় প্রতিটি স্কুলে কম্পিউটার প্রদান করেছেন। জনসেবার জন্যে দোহার নবাবগঞ্জের পুলিশ বাহিনীর জন্যে ৪টি আধুনিক পেট্টোল কার তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রদান করেছেন।

তিনি দোহার এবং নবাবগঞ্জের একাংশের দীর্ঘ সময়ের সমস্যা সর্বনাশা নদী ভাঙন প্রতিরোধে প্রথম ধাপে অরঙ্গাবাঁধ থেকে বাহ্রা ঘাট পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণে ২১৭ কোটি টাকার সরকারি অনুদান এবং দ্বিতীয় ধাপে মাঝির চর  থেকে মুকসুদপুর পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণ ও নদী খনন কাজে ১৪৮৩ কোটি টাকার সরকারি মেগা প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছেন। তিনি জরুরী ভিত্তিতে ১৬ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করিয়ে মেঘুলা বাজারকে তাৎক্ষণিকভাবে নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। কেরাণীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দোহার, শ্রীনগর আঞ্চলিক হাইওয়ে সম্প্রসারণ ও সংষ্কারে ৪৭২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছেন- এগুলোর কাজ নিয়ম মাফিক শুরু হবে আড়িয়াল বিলের সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা ও ইছামতি নদীর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে কাইশাখালি স্লুইচগেট সহ প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। দোহার উপজেলার মৈনট ঘাট এলাকাকে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছেন। এছাড়া সারাদেশের মধ্যে ১৪টি উপজেলাকে নারায়ণের জন্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন তার মধ্যে দোহার এবং নবাবগঞ্জকে তিনি অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

বর্তমানে তিনি দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছেন। দোহার ও নবাবগঞ্জের ধলেশ্বরী, কালিগঙ্গা ও ইছামতীর ভাঙন প্রতিরোধ, পদ্মার তীরে ইকনোমিক জোন প্রতিষ্ঠা, টুরিস্ট স্পট প্রতিষ্ঠা, এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন, ইছামতীর পানি প্রবাহ ও নাব্যতা বাস্তবায়ন, নবাবগঞ্জ উপজেলায় ৭০০/৮০০ একর জায়গায় বড় মাপের অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার মাধ্যমে যুবকদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা। রাস্তা, ঘাট, কালভার্টের উন্নয়ন, আড়িয়াল বিল ও কোঠা বাড়িসহ সব জায়গায় কৃষি ও মৎস্য উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ, তাঁতি ও জেলেদের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান, নারী সমাজের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ, শিক্ষা উন্নয়নে ব্যবস্থা গ্রহণ, দোহার ও নবাবগঞ্জ এলাকায় একটি আধুনিক মেডিকেল কলেজ স্থাপন, স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণ, মাদক, সন্ত্রাস, ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে পদক্ষেপ গ্রহণ, বাজার এলাকায় যানজট নিরসনে বাইপাস সড়ক বা ফ্লাইওভার নির্মাণ, নতুন স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা, স্কুল কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়ন, যুব সমাজের কাজের সুযোগ সৃষ্টি, ধর্মীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণ, সামাজিক হানাহানি প্রতিরোধ এবং দোহার ও নবাবগঞ্জকে শান্তির জনপদ এবং ব্যাপক উন্নয়নশীল এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার জন্যে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগিয়ে চলেছেন সালমান এফ রহমান।

তিনি এমপি বা মন্ত্রী না হয়েও রাজনৈতিক, সামাজিক এবং ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা থেকে জনকল্যাণে ব্রতী হয়ে উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দোহার ও নবাবগঞ্জের জন মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করতে চান। তিনি বিশ্বাস করেন যে, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি নিজ এলাকাসহ দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন। তিনি আরও বিশ্বাস করেন যে, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার উন্নয়ন পরিকল্পনার সহযোগী হয়ে সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার কাজে সহযোগিতা করতে পারবেন।

সর্বোপরি সালমান এফ রহমান সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। তিনি একজন সদালাপী, জনদরদি এবং ধর্মপ্রাণ মানুষ। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। জনপ্রতিনিধি হিসেবে দোহার ও নবাবগঞ্জ এলাকার কল্যাণে তার সার্বিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে এলাকার গণমানুষের দোয়া ও সমর্থন প্রার্থী। সালমান এফ রহমান নামটি শুনলেই সবার আগে নেতিবাচক ছবি যাদের চোখে ভেসে ওঠে মূলত তাদের জন্যেই আজকের এক অন্য এবং অনন্য সালমাননামা।

শত সমালোচনার ভিড়ে একজন সালমান এফ রহমান কাজ করছেন দেশের জন্যে দেশের
মানুষের জন্যে। তার সেই সব নেতিবাচক কাজ নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হতেই পারে কিন্তু
একজন সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের অর্থনীতির বিকাশে যে ভূমিকা রেখে চলেছেন তা
শত শত শতাব্দী পরেও আলোচিত হতে বাধ্য। সম্প্রতি এই উন্নয়ন ব্যক্তিত্ব দেশের চলমান
রাজনীতি, নির্বাচন এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে উত্থাপিত নানা অভিযোগের জবাব দিয়েছেন একান্ত সাক্ষাতকারে খোলামেলাভাবে।

প্রশ্ন : আপনি কেন রাজনীতিতে এলেন বাবার কারণে নাকি নিজের ইচ্ছায়?

সালমান এফ রহমান: নিজের ইচ্ছায় এসেছি রাজনীতিতে। আমি অনেক আগেই রাজনীতিতে
এসেছিলাম কিন্তু মাঝে বিরতি নিয়েছিলাম। গেলো দশ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে পর্যায়ে গেছে তা অকল্পনীয়। আমি বিশ্বাস করি আগামীতে আবারো জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি যেভাবে দেশটাকে উন্নয়নের মহাসড়কের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন এই সুযোগটা আমি আমার এলাকার জন্যে নিতে চাই। সারাদেশকে যেভাবে তিনি উন্নয়ন করছেন আমি যদি এমপি হতে পারি তাহলে দোহার নবাবগঞ্জতেও আমি সেই স্রোতে নিয়ে আসবো।

প্রশ্ন : ধরুন, আপনি নির্বাচিত হলেন তাহলে প্রথম ১০০ দিনে কী কাজ করবেন?

সালমান এফ রহমান : রাস্তাঘাটের উন্নয়নে আমি উদ্যোগ নেবো। এর সাথে পানি নিয়ন্ত্রণ এবং নদী ভাঙনের ব্যাপারে আমি অলরেডি অনেকগুলো কাজ করেছি। আমরা দোহারে সাড়ে ১৬ শত কোটি টাকার একটা প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ আমরা শুরু করে দিবো ইনশাআল্লাহ প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই।

প্রশ্ন: আপনার আগের জীবন আর এখনকার জীবনতো পুরোই আলাদা?

সালমান এফ রহমান: ততোটা অন্য আমি বলবো না। আগের জীবনেও আপনি জানেন আমি ট্রেড পলিটিক্সে ছিলাম। সেই ট্রেড পলিটিক্সে কিন্তু ছোট, বড় এবং মাঝারি ব্যবসায়ীদের সাথে কাজ করতে হয়েছে। সেই সূত্রে পাবলিকের সাথে যোগাযোগ আমার সবসময়ই আছে।

প্রশ্ন: শেয়ার মার্কেটের সাথে আপনাকে নিয়ে তুমুল বিতর্ক আছে। এর কারণ কী?

সালমান এফ রহমান: এটি পারসেপশনের ব্যাপার। মামলা যেটা হয়েছে সেটি হাইকোর্টে কোয়াশ হয়ে গেছে। আপনারা জানেন, দুটি পত্রিকা আমার পেছনে লেগেই আছে পারসেপশন ক্রিয়েট করার জন্যে। মামলা কোয়াশ হয়ে যাওয়ায় এই ব্যাপারে আমার বিরুদ্ধে এখন আর কোন অভিযোগ নাই। আর সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করা ডিফিকাল্ট। সেখানে আমার পক্ষে এবং বিপক্ষে দুই ধরণের মানুষই আছেন। শেয়ার মার্কেটে কিছু লোক লাভ করেছে আবার কিছু লোক লস করেছে। সবাই একসাথে তো লাভ করা যায় না? এটি বোঝার ব্যাপার। আই থিঙ্ক আউট অব দ্যা কনটেক্সটে অনেক কিছু বলা হয়।

প্রশ্ন: কিন্তু অনেকেই মনে করেন, আপনাদের কারণেই অনেকে শেয়ার মার্কেটের টাকা হারিয়েছেন?

সালমান এফ রহমান: সেটা তো ঠিক না। আমরা কিন্তু শেয়ার মার্কেটের এক টাকার শেয়ার
কিনিনি এবং বিক্রিও করিনি। আমরা তো কোম্পানির মেইন স্পন্সর। আমাদের শেয়ারগুলো
বাজারে ছেড়েছি। কিন্তু আমাদের নিজস্ব শেয়ারগুলো সেটা তো ইনকোয়ারিতে প্রমাণ হলো যে, আমার নিজস্ব শেয়ার পার্সোনালি কোন শেয়ারই বিক্রি করিনি এবং কিনিওনি।

প্রশ্ন: এবারের নির্বাচন কেমন হবে বলে মনে করেন?

সালমান এফ রহমান: খুব ভাল হবে ইনশাল্লাহ।

প্রশ্ন: অংশগ্রহণমূলক?

সালমান এফ রহমান: অংশগ্রহণমূলক তো হয়েই গেছে? আর ইলেকশনের দিনে দেখবো সুন্দরভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে এটি অনুষ্ঠিত হবে।

প্রশ্ন: আপনি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি উন্নয়নখাত উপদেষ্টা। আপনি যে সুযোগ পেয়েছেন অন্যরা প্রার্থীরা তো তা পাননি? লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো অনুপস্থিত?

সালমান এফ রহমান: আমি আপনার সাথে এক মত নই। প্রতিটি দেশেই এই রকমেই এক দল
রুলিং থাকে আরেক দল অপজিশনে থাকে। সেখানে সেই রুলিং পার্টির অনেক সদস্যই সরকারের বড় বড় পোষ্ট হোল্ড করেন। কোন এমপি উপদেষ্টা বা মন্ত্রী থাকলেই কি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বন্ধ হয়ে যায়- তা তো না?

প্রশ্ন: এখনকার বাংলাদেশে যে কর্পোরেট কালচার তার জনক যদি কাউকে বলতে হয় তাহলে
আপনি তা। কেমন লাগে?

সালমান এফ রহমান: আমি খুবই আনন্দিত। আমরা যে জিনিসটা শুরু করেছিলাম ৮০ এর দশকে- কর্পোরেট কালচার। তখন কিন্তু কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে, চেক সাইনিং অথরিটি। তখন আইডিয়া ছিল- মালিক আছে, তিনি নিজে চেক সাইনিং করবেন অথবা মালিকের ভাগিনা ভাতিজা বা কোন আত্মীয় তা করবে। কোন কর্মচারীকে ট্রাষ্ট করা যাবে না। এটি কিন্তু অনেক আগেই কাজটি আমরা করেছি। সেদিন আকিজ গ্রুপ তাদের জাপানি কোম্পানীকে বিক্রি করে দিয়েছে তাদের ব্যবসার একটি অংশ ১ পয়েন্ট ৫ বিলিয়ন ডলারে। ওই জাপানি কোম্পানি কিনছে তারা তো এমনিই কিনছে না? নিশ্চয়ই আকিজ গ্রুপের মধ্যে সেই কর্পোরেট কালচারটা আছে তাই জাপানি কোম্পানি কিনেছে? আর আকিজ গ্রুপ ওই কর্পোরেট কালচারের কারণে এই ভ্যালু অ্যাডিশনটা পেয়েছে। আর এখন যেসব কোম্পানিতে কর্পোরেট কালচার নাই তারা সফল হতে পারছে না। আমরা যে জিনিস শুরু করছেলিাম এখন এসে সেই কর্পোরেট কালচারের সফল বাস্তবায়ন দেখে অবশ্যই ভাল লাগে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে অনেক কোম্পানি বিদেশে বিনিয়োগ করছে- আপনাদের কি কোন বিনিয়োগ
আছে?

সালমান এফ রহমান : ইনডাইরেক্টটলি আছে। ফার্মাসিউটিক্যালে অনেক দেশে আমরা ফ্যাক্টরি
করেছি। মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা ও সৌদি আরবে আছে। এখন দেখছি বিদেশী বিনিয়োগের ব্যাপারে। বিশ্বে এখন অনেক সুযোগ আছে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের পরিবেশ কেমন?

সালমান এফ রহমান: খুবই ভাল। সেদিন আমাদের ব্যবসায়ী কনফারেন্স হলো। সেখানে ব্যবসায়ীরা সবাই এসেছেন। তারা সরকারের দশ বছরের সফলতা ব্যক্ত করেছেন এবং নিজেদের ব্যক্তিগত অবস্থানে কী কী পরিবর্তন এসেছে তা বলেছেন। প্রতিটি ফিগারে গেলে ৭ পারসেন্ট প্লাস গ্রোথ। বিশ্বের ইকনোমিক ডাউন টার্নের সময়ে বাংলাদেশের ইকনোমিক গ্রো করছে।

প্রশ্ন: আপনার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন কী?

সালমান এফ রহমান: আমার এলাকা দোহার নবাবগঞ্জকে মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। যেসব সেক্টরে আমরা স্ট্যান্ডার্ড সেট করেছি সেই সেক্টরই কিন্তু ভাল করেছে। বাংলাদেশে প্রথম কম্পিউটার বাংলাদেশে আমরা এনেছি। প্রথম সফলওয়্যার বেক্সিমকো ডুয়েল আপ করেছে। ফার্মাসিউটিক্যালস, টেক্সটাইল যেই সেক্টরে আমরা গিয়েছি পরে সবাই এসেছে এবং সেই সব সেক্টর উন্নত হয়েছে।

প্রশ্ন : অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং অনেকটা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন- যা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে এই বিষয়ে আপনি কী বলবেন?

সালমান এফ রহমান: নিয়ন্ত্রণ কিভাবে করবেন বুঝতেছি না। ইলেকশন হচ্ছে সবাই অংশ নিচ্ছে। প্রতিটি দল তার প্রার্থী দেওয়ার সময়ে যদি ভুল করে থাকে তাহলে তা তো পার্টির সিদ্ধান্ত। তাহলে তো ইলেকশন কমিশন বা নিয়ন্ত্রণ হয়ে যাচ্ছে তা বলা যোবে না? আপনি ক্লিয়ারলি বলেন নিয়ন্ত্রণ কিভাবে হচ্ছে?

প্রশ্ন: সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন- লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই? অনেকে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না, পোষ্টার লাগাতে পারছেন না।

সালমান এফ রহমান: প্রতিটি ইলেকশনেই এই ধরণের সমস্যা হয় কম বেশি। এখন দুই জায়গায় প্রব্লেম হচ্ছে। এই পর্যন্ত দুইজন মারা গেছেন ইলেকশন ভায়োলেন্সে তাদের দুইজনই কিন্তু আওয়ামী লীগের। মিডিয়াতে এসেছে কুমিল্লাতে আওয়ামী লীগের উপরে ককটেল হামলা হয়েছে। এইটা দুই দিকেই হচ্ছে। কিন্তু লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে ঢালাওভাবে বলা ঠিক না। আমরা চাই সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন হোক। ইলেকশন কমিশন আর ল এনফোর্স এজেন্সিগুলো চেষ্টা করছে।

আর্মিও নেমেছে। দু্ই পক্ষই তো মাঠে ভোট চাইতে পারছে। তাহলে লেভেল প্লেয়িং নেই কিভাবে?

প্রশ্ন: ঢাকা ১ আসনে ত্রিমুখি লড়াই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইনি জটিলতায় একজন বাদ পড়েছেন। এখন লড়াই তো দ্বিমুখী হবে?

সালমান এফ রহমান: ইলেকশন ইজ ইলেকশন। লাস্ট পর্যন্ত আমাকে ফাইট করতে হবে। এখানে অভার কনফিডেন্সের কোন ব্যাপার নাই। ত্রিমুখি হলে আমার জন্যে ভাল হতো। ভোট ভাগাভাগি তো। এখন কিন্তু দ্বিমুখি হবে। তাই এখন এটি মোর ডিফিকাল্ট। তবে আমি আশাবাদী জেতার ব্যাপারে ইনশাল্লাহ।

প্রশ্ন: টেলিভিশন মালিকদের সংগঠনের সভাপতি হিসেবে মিডিয়ার স্বাধীনতা নিয়ে কিভাবে আপনি?

সালমান এফ রহমান: মিডিয়ার মতো এতো স্বাধীনতা বাংলাদেশে আর কেউ ভোগ করছে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে বলি- আমার বিরুদ্ধে বিশেষ দুইটি পত্রিকা গেলো ১০ বছরে যা করেছে তা মিডিয়ার চূড়ান্ত স্বাধীনতার বড় প্রমাণ।

প্রশ্ন: আপনি নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী মনে করেন কিনা? প্রশ্নটি উঠছে এই কারণে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফ নামায় আপনি ২৮০ কোটি টাকা সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন আর ব্যবসা থেকে আপনার মাসিক আয় ৫০ হাজার টাকা মাত্র!

সালমান এফ রহমান: সেটা কিন্তু ঠিক নয়। আমার কোম্পানিগুলো লিষ্টেড কোম্পানি এবং আমার প্রাইভেট কোম্পানি আছে। আমাদের প্রধান কোম্পানি হলো বেক্সিমকো হোল্ডিং লিমিটেড। এখন সেই কোম্পানি থেকে আমি ফুল ফ্লেজেড সব কিছু পাচ্ছি ইন কাইন্ড। ধরেন, আমার বাড়ি ভাড়া। আমার ফার্নিচার এমনকি আমার টেলিভিশন। আমার মোবাইল ফোন, আমার গাড়ি, আমার গাড়ির পেট্টল, আমার ড্রাইভার, আমার বাড়িতে যে কাজের লোক আছে- এভরি থিং ইজ পেইড ফর মাই প্রাইভেট কোম্পানি। বেক্সিমকো হোল্ডিং যখন অ্যাকাউন্ট সাবমিট করে, তারা আমার ব্যাপারে
যে খরচা করে সেটা এক্সপেন্স হিসাবে দেখায়। আর তারা যা ইনকাম করে তা দেখায় এবং সেটার উপরে ট্যাক্স তারা দেয়। নাও মাই ইনকাম আই হ্যাভ শোন- এতোগুলো স্পন্সর শেয়ার ইন অল মাই কোম্পানীজ। সেখান থেকে আমি দেখিয়েছি বছরে আমার সাড়ে ৪ কোটি টাকা পার্সনাল আমার আয় হয়। এই সাড়ে ৪ কোটি টাকার উপরে যা ট্যাক্স দেওয়ার সেই ট্যাক্স আমি দেই। সেইম দ্যাট মাই ইনকাম ইজ ফিফটি থাউজেন্ড টাকা দিস ইজ অ্যাবসুলুয়েটলি রং। যারা অ্যাকাউন্টিং বুঝে না তারা বলছে যে আমার আয় ৫০ হাজার টাকা। যদি আমি আমার কোন ডিভিডেন্ট ইনকাম না দেখাতাম দ্যাট দেয়ার ইজ এ কোয়েশ্চেন অব হাইডিং ইনকাম।

প্রশ্ন: আপনার জন্য কোম্পানি যে খরচ করে তা তো অডিটেড?

সালমান এফ রহমান: শিওর। অবভিয়াসলি। অল দ্যা কোম্পানীজ আর অডিটেড, ট্যাক্স পে
ট্যাক্স রিটার্ন দিতে হবে। ইট হ্যাজ টু বি আপডেটেড।

প্রশ্ন: ১৯৯৬ সালে শেয়ার বাজারে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আপনার বিরুদ্ধে? পরবর্তীতে ও শেয়ারিবাজারের নানা কেলেঙ্কারির সাথে আপনার নাম জড়িত আছে। জিএমজি এয়ারলাইন্স নিয়ে অভিযোগের বিষয়েও জানতে চাই?

সালমান এফ রহমান: আমি দুটো জিনিস বলবো। ২০০৮ সালে আমি যখন জেল থেকে বের হলাম। তার এক দুই মাসের ভেতরে আমি একটা প্রেস কনফারেন্স করেছিলাম। ইন দ্যাট প্রেস কনফারেন্সে আমি কিন্তু ওপেনলি ডেইলি ষ্টার ও প্রথম আলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলাম। তারা কম্পিটিটিভ জেলাসির কারণে এটা করেছে। ডেইলি স্টারের পরে আমি ইন্ডিপেনডেন্ট খবরের কাগজ করেছি। বিকজ অব পিওর বিজনেস জেলাসি। বিকজ দ্যা ওনার অব ডেইলি স্টার এন্ড প্রথম আলো। এটা নতুন কথা না। ২০০৮ সালে প্রেস কনফারেন্স কল করে আমি বলেছি। তারা আমার বিরুদ্ধে ম্যালাফাইড ক্যাম্পেইন অব ইয়োলো জার্নালিজম করেছিল। ইফ ইউ ওয়ান্ট টু হ্যাভ অ্যান এ এক্সামপল। আমি আপনাকে বলতে পারি গত তিন চার মাসে একটা নিউজ। দ্যা সেম নিউজ ডেইলি স্টার এন্ড প্রথম আলো হ্যাজ ডিফারেন্ট অ্যাঙ্গেল হ্যাভ রিপোর্টেড ইট মোর দ্যান টুয়েন্টি ফাইভ টাইমস। জাষ্ট একই জিনিস। যদি কোন খবরের কাগজ ধরে নেয় যে, আমি তাকে মেলাইন্ড করবোই তাহলে তো কোন ডিফেন্স থাকে না? প্রথম একটা জিনিস- দিস ইজ দ্যা কোয়েশ্চেন অব পারসেপশন। একটা হলো পারসেপশন আর একটা হলো ফ্যাক্ট। আমি আগে পারসেপশনের কথা বললাম। হ্যাঁ, আপনি বলেছেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ। শুধু অভিযোগ কেন আমার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। এখন আপনি আমাকে জিঙ্গেস করেন, মামলাতে কী হলো? মামলাটা হাইকোর্টে কোয়াশ হয়েছে। প্রথম আলো কি হেড লাইন দিলো? ‘নিরবে মামলা বাতিল’ হোয়াট ইজ দ্যাট? ইট ইজ নট ইয়োলো জার্নালিজম? মামলা বাতিল করার মালিক আমি? তাহলে হাইকোর্টের জাজের উপরে আপনি আঙুল তুললেন না? কিভাবে নিরবে মামলা বাতিল হয়- এই উত্তর কী?

এখন আমি আসি- হোয়াট হ্যাপেন্ড ইন নায়েন্টি সিক্স? পিপল হ্যাভ ফর গটেন হোয়াট হ্যাপেন্ড ইন নায়েন্টি সিক্স। হোয়াট হ্যাপেন্ডেন্ট নায়েন্টি সিক্স? টু থ্রি থিংকস হ্যাপেন্ডেন্ট। আওয়ামী লীগ গভর্নমেন্ট কেম টু পাওয়ার। নতুন সরকার আসার পরে মার্কেটে নতুন কনফিডেন্স গ্রো করলো। মার্কেট শট আপ। তখন এখনকার মত ইলেক্ট্রনিক ট্রেডিং কিছুই ছিল না। একটা কার্ভ মার্কেট তৈরি করা হলো। সেই কার্ভ মার্কেটের জন্যে এটা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। এগুলো করে মার্কেট উপরে উঠে গেলো। পরে মার্কেট ক্রাশ করলো। তখন সবাই বলছে- অনেক মানুষ টাকা লুজ করছে? শিওর অনেক মানুষ টাকা লুজ করছে। হোয়াট অ্যাবাউট অনেক লোক যারা টাকা বানাইছে? ওই মার্কেট যখন উপরে যাচ্ছিল, যারা টাইমলি বিক্রি করে দিয়েছে তারা কি টাকা বানায়নি?

প্রশ্ন: এটা হতে পারে আপনি যেহেতু উইনার হিসেবে বেরিয়ে এসেছেন?

সালমান এফ রহমান : আমি কেমনে উইনার হিসেবে বের হলাম? প্রথমত আমি কোন ট্রেডিংই করি নাই। আই ডিড নট এ সিঙ্গেল ট্রেডিং। নায়েন্টি সিক্স এ নট এ সিঙ্গেল ট্রেডিং। আই ডিড নট সেল এ সিঙ্গেল শেয়ার অর পারচেজ এ সিঙ্গেল শেয়ার। এই কারণেই হাইকোর্ট মামলা কোয়াশ করেছে। হাইকোর্ট রায়ে বললো যে, উনার বিরুদ্ধে প্রাইমেসি কেস নাই।

প্রশ্ন: তাহলে আসলো কোথা থেকে?

সালমান এফ রহমান: অভিযোগ তো আসতে পারে। দেয়ার ইজ এ পারসেপশন দ্যাট বেক্সিমকো শেয়ার ট্রেডিং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল শেয়ারের ট্রেডিং হয়েছে। মাই শেয়ার প্রাইস কেম আপ এন্ড মাই শেয়ার প্রাইস কেম ডাউন। আই ডিড নট সেল এ সিঙ্গেল শেয়ার অর বাই এ সিঙ্গেল শেয়ার। তাহলে আমি কিভাবে উইনার হলাম? ইনফ্যাক্ট আই কেম আউট এ লুজার। যখন শেয়ার মার্কেট ক্রাশ করলো তখন আমার কোম্পানির মূল্যও নেমে গেলো। আই ওয়াজ লুজার রাদার দ্যান উইনার। কিন্তু পারসেপশন ওয়াজ ক্রিয়েটেড বাই দ্যা মিডিয়া।

প্রশ্ন: দুইটা নির্দিষ্ট পত্রিকা কেন আপনাকে অপছন্দ করে?

সালমান এফ রহমান: আই হ্যাভ নট আন্ডারস্টুড ইট। আই ডোন্ট নো, হোয়াই দে ডোন্ট লাইক মি? কিন্তু তারা যে আমাকে অপছন্দ করে তার হাজার হাজার প্রমাণ আছে।

প্রশ্ন: আপনি ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের চেয়ারম্যান, ডেইলি ইন্ডিপেনডেন্ট এর উদ্যোক্তা আপনি। গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার দিকে কেনো গেলেন- এটি কি গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য?

সালমান এফ রহমান: এখানে দুটো প্রশ্ন এক সাথে করেছেন আপনি। আমি আমার চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করি কিনা তার উত্তর আমার চ্যানেলের লোকেরা দেবেন। কেন মিডিয়া ব্যবসায় এসেছি সেই ব্যাপারে বলবো। ফ্রম ডে ওয়ান- যখন থেকে আমরা ব্যবসা শুরু করলাম। স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে বেক্সিমকো যখন শুরু হলো তখন আমাদের পৈত্রিক জুট মিল ছিল। সেটা ন্যাশনালাইজড হলো। তখন সব জুট মিল ন্যাশনালাইজড হলো আমাদেরটাও হলো। তখন আমরা ট্রেডিং শুরু করলাম। নতুন দেশ স্বাধীন দেশ। ওই সময়ে ট্রেডিং ছাড়া অন্য কিছু করার ছিল না। এটি এক নম্বর দিক। আর দুই নম্বর হলো আমরা সবাই কিন্তু ফার্ষ্ট জেনারেশন ব্যবসায়ী। আমাদের কাছে তখন পুঁজিও ছিল না। এরপরে ট্রেডিং করতে করতে প্রফিট করে ক্যাপিটাল তৈরি করে আমরা ধীরে ধীরে ইন্ডাষ্ট্রিতে গেলাম।

শুধু আমরাই নই। যারাই আপনি দেখবেন যারা বাংলাদেশী ইন্ডাষ্ট্রিয়ালিষ্ট আছে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ডে গেলে প্রথমেই দেখবেন তারা ট্রেডিং করছে। ট্রেডিং থেকে ক্যাপিটাল গেইন করে সবাই ইন্ডাস্ট্রিতে গেছে। আমরা কিন্তু ডে ওয়ান থেকে যখন ট্রেডিংও করলাম- উই আর দ্যা ফার্স্ট ওয়ান্ড টু ডু প্রাইভেট পার্টনার। বিকজ ইট ওয়াজ সামথিং ইনোভেটিভ। নতুন জিনিস ছিল। তখন আপনার ষ্টেট টু ষ্টেট বাটার। আমরা করলাম স্পেশাল ট্রেডিং অ্যারেঞ্জমেন্ট বিটুইন টু প্রাইভেট কোম্পানীজ। যখন আমরা ট্রেডিংও করেছি উই ওয়েন্ট ফর নন ট্রাডিশনাল এক্সপোর্ট।

আমরা উদ্যোক্তা হতে চেয়েছি যে কোন সেক্টরেই হোক। তাই সেই সূত্র ধরেই মিডিয়া ব্যবসায় এসেছি। কোন সেক্টরকে নিয়ন্ত্রণ বা সিন্ডিকেশনের কোন দুরভিসন্ধি আমাদের নেই।