চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার আসামি মিজান গ্রেপ্তার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ও মোহাম্মদপুরের আদাবর ৩২ নং ওয়ার্ডের কমিশনার হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

শুক্রবার শ্রীমঙ্গল সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে জানায় র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক ক্ষুদেবার্তায় মিজানকে আটকের খবর জানানো হয়। বার্তায় বলা হয়, চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে হাবিবুর রহমান মিজানকে পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় শ্রীমঙ্গল থেকে আটক করা হয়েছে। তবে কখন তাকে আটক করা হয়েছে তা জানানো হয়নি।

এরআগে গত মঙ্গলবার রাত ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত মোহাম্মদপুরের আওরঙ্গজেব রোডে পাগলা মিজানের বাড়ির বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে এ অভিযান প্রসঙ্গে র‌্যাব-২-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, মিজানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।

১৯৮৯ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাসায় হামলার সময় মিজান ছিলেন ফ্রিডম পার্টির বড় নেতা। অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টাকারীদের অন্যতম ছিলেন মিজানুর রহমান মিজান। তার নামে মোহাম্মদপুর থানায় ১৯৯৬ সালে ইউনূস হত্যা, ২০১৬ সালে সাভার থানায় জোড়া হত্যা মামলা রয়েছে।

এছাড়া মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্পে মাদক নিয়ন্ত্রণকারী ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি পরিচিত। বর্তমানে আদাবরে ইয়াবা ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছেন।

১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট মধ্য রাতে ফ্রিডম পার্টির সদস্য কাজল ও কবিরের নেতৃত্বে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা চালায় একটি চক্র। তারা সেখানে গুলি করে এবং বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় শেখ হাসিনা বাড়ির ভেতর অবস্থান করছিলেন। বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীরাও পাল্টা গুলি চালান। একপর্যায়ে হামলাকারীরা চলে যায়। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা হয়। ১৯৯৭ সালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মামলার অভিযোগপত্র দেয়। এতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ ফারুক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুর রশিদ ও মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) বজলুল হুদা এবং নাজমুল মাকসুদ মুরাদসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। অভিযোগপত্রে মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজানকে হামলার পরিকল্পনাকারীদের একজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সূত্র জানায়, মহাজোট সরকার আমলে মিজান বাহিনী ৩০০-৪০০ কোটি টাকার টেন্ডারবাজি করেছে। এ ছাড়া ভূমি দখল, চাঁদাবাজিসহ মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্পে মাদক ও চোরাই গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবসার নিয়ন্ত্রক তিনি। স্থানীয়রা বলেন, খুন-খারাবি পাগলা মিজানের বাঁ হাতের কাজ। এ কারণে এলাকায় ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না।

২০১৪ সালে মোহাম্মদপুরে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আহমেদ পাইন ও তার অসুস্থ স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে তুচ্ছ ঘটনায় শত শত মানুষের সামনে জুতাপেটা করেন এই পাগলা মিজান। কেউ ভয়ে কথা বলেনি। সরকারের উচ্চপর্যায়ের অনেক নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসৎ কর্মকর্তা তার অপকর্মে সহযোগিতা করেন। এ কারণে অপরাধ করেও তিনি পার পেয়ে যেতেন সবসময়।