আজ সোমবার থেকে শুরু হওয়া ভারত-বাংলাদেশ যৌথ সমীক্ষার মাধ্যমে স্থায়ী ঠিকানা পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ-ভারতের ১৬২টি ছিটমহলবাসী। তারা জানিয়েছেন, এর মাধ্যমে শুরু হলো নতুন জীবনের যাত্রা।
সকাল থেকে এসব ছিটমহলে একযোগে শুরু হয়েছে যৌথ সমীক্ষার কাজ। ছিটমহলবাসীদের নাগরিকত্ব নির্ধারণ এবং হেড কাউন্টিং হালনাগাদের এ কার্যক্রম চলবে ১৬ জুলাই পর্যন্ত।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের সবচেয়ে বড় ছিটমহল কুড়িগ্রাম জেলার দাসিয়ার ছড়া। ৯টায় কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার অভ্যন্তরে অবস্থিত দাসিয়ারছড়া ছিটমহলে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন।
এসময় ছিটমহলবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, আমরা জেলা প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের সবরকম সহযোগিতা করবো। আগামীতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
কুড়িগ্রাম জেলায় এরকম ১২টি ছিটমহলে যৌথভাবে সমীক্ষা কাজ শুরু করেছে দু’দেশের ১০টি টিম। প্রতিটি টিমে ভারতের ১১ জন ও বাংলাদেশের ৯ জন কাজ করছেন।
দীর্ঘ ৬৮ বছর পর নাগরিকত্বের স্বাদ পাওয়া ছিটমহলবাসিরা হেড কাউন্টিংয়ে তারা অনেক খুশি। ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে তারা বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়াও পঞ্চগড়ের ছিটমহলগুলোতেও তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। ৩৬ টি ছিটমহলে ১৮টি ক্যাম্পের মাধ্যমে জনগণনা চলছে। সেখানে অংশ নিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ২৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।
এছাড়া নাগরিকত্ব নির্ধারণ ও হেড কাউন্টিং হালনাগাদ নির্বিঘ্নে করার পাশাপাশি অন্যান্য জটিলতা এড়াতে গত ২২ জুন থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছিটমহলের জমি ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ রাখাসহ সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্তসমূহ বিজ্ঞপ্তি আকারে ছিটমহবাসীদের অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা।
১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী সমীক্ষা কাজের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে কে কোন দেশের নাগরিক হতে চান। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত নাগরিকত্ব ঠিক করার সুযোগ পাবে ছিটমহলবাসী।
১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর তৈরি হওয়া সমস্যা তার সমাধান হচ্ছে ৬৮ বছর পর। ১৯৭৪ সালে চুক্তি হলেও ভারতীয় পার্লামেন্ট তা অনুমোদন করে গত মে মাসে। এরপর গত মাসে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় বিনিময় হয় অনুমোদনের দলিল।
আগামী ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের এবং ৫১টি ছিটমহল ভারতের অন্তর্ভূক্ত হবে।