পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ(পিপিপি)এর আওতায় আগামী অর্থবছরে শুরু হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ। মুল অবকাঠামো তৈরির সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু না হওয়ায় দুটি প্রকল্পেরই ব্যয় বাড়বে।
যানজটে অতিষ্ট রাজধানীবাসির জন্য নতুন চমক আধুনিক ও দ্রুত গতির গণপরিবহন মেট্রোরেল। উত্তরা থেকে মিরপুর ও ফার্মগেট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে মাত্র ৩০ মিনিট। প্রতি ঘণ্টায় যাতায়াত করতে পারবে ৬০ হাজার যাত্রী। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬ টি স্টেশনে প্রতি ৪ মিনিট পর পর পাওয়া যাবে একটি করে ট্রেন।
২০১২ সালে পিপিপি’র আওতায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১৬ হাজার পাঁচশ’ ৯৫ কোটি টাকা জাইকার, আর বাকি পাঁচ হাজার চারশ’ পাঁচ কোটি টাকা দেবে সরকার। ভূমি অধিগ্রহণ, রুট নির্ধারণ, ডিজাইনের কাজ প্রায় শেষ।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মুল সড়কে মেট্রোরেলের পিলারের জন্য মাটি পরীক্ষা হচ্ছে। সেই সঙ্গে করা হচ্ছে লোড টেস্ট। ইঞ্জিন ও কোচ সরবরাহের জন্য ফেব্রুয়ারিতে করা টেন্ডারের যাছাই-বাছাইয়ের কাজও চলছে।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: কায়কোবাদ বলেন, বাস্তব কাজ বলে যে জিনিসটি জনগণ দেখতে চাচ্ছে অর্থাৎ মেট্রোরেলের কাজ আগামী বছরের মাঝামাঝিতেও দেখা সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না।
বিমানবন্দর থেকে মহাখালি হয়ে চিটাগাং রোডের কুতুবখালি পর্যন্ত তৈরি হবে ৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ২০১১ সালে ৮ হাজার ৯‘শ ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। কাজ শুরু হয় ২০১৪ এ।
তিন ধাপে কাজের প্রথম ধাপে, বিমান বন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত হবে ৭ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে হবে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার আর শেষ ধাপে মগবাজার থেকে চিটাগাং রোডের কুতুবখালি পর্যন্ত।
এ প্রকল্পে বিনিয়োগ ও বাস্তবায়নে কাজ করছে ইতাল-থাই লিমিটেড। বিমান বন্দর সড়কের পাশে থেকে শুরু হয়েছে ভূমি জরিপ ও লোডিং টেস্ট এবং পাইলিং এর কাজ। প্রথম অংশের কাজ শেষ হবে ২০১৭ তে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উপদেষ্টা ড. জামিলুর রেজা বলেন, ডিজাইন করা প্রায় শেষ। এখন সামান্য কিছু কাজ বাকি আছে। তিনি আশবাদি খুব শীগ্রই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু হবে। পহেলা জুলাইকে একটি সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ধরা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
২০১৪ সালের মধ্যে মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। নতুন করে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। ৩ ভাগে চলছে এর নির্মাণ কাজ। প্রথম দুটি অংশ অর্থ্যাৎ তেজগাঁও থেকে এফডিসি ও মগবাজার থেকে ইস্কাটন অংশে পাইলিং শেষ পর্যায়ে। চলছে পিলারে ক্যাপ ও গার্ডার বসানোর কাজ। কিছু অংশে লুপ নির্মাণও শেষ। তবে অন্য দুটি অংশ মালিবাগ চৌধুরী পাড়া থেকে রাজারবাগ ও চৌধুরী পাড়া থেকে মৌচাক অংশের কাজ কিছুটা পিছিয়ে আছে।
রাজধানী ঢাকার যানজট কমাতে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস আর ফ্লাইওভারের মত যে প্রকল্পগুলো হাতে নেয়া হয়েছে তার নির্মাণকাজ শেষ হলে জনগণের ভোগান্তি অনেকটাই কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।