চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

শুটিং শেষে এবার সম্পাদনার টেবিলে ‘বিউটি সার্কাস’

সিনেমা নিয়ে দুর্গম জার্নির পর শেষ হলো শুটিং। এবার বুক ভরে শ্বাস নেয়ায় যায়! অথচ সেই সময়টুকুও নিতে চাইলেন না নির্মাতা মাহমুদ দিদার। কালক্ষেপন না করে বরং তিনি চলে গেলেন সম্পাদনার টেবিলে। বলছিলাম সদ্য শেষ হওয়া সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত সিনেমা ‘বিউটি সার্কাস’-এর কথা।

অবশেষে বারোদিন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার গোপালপুরে শেষ করলেন ‘বিউটি সার্কাস’ সিনেমার শুটিং। আর শুটিং শেষ করেই এবার পোস্ট প্রোডাকশনেরও কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান নির্মাতা মাহমুদ দিদার। বুধবার থেকে নিকেতনের একটি এডিটিং প্যানেলে ‘বিউটি সার্কাস’-এর সমস্ত ফুটেজ নিয়ে তিনি বসেছেন।

গত বছর শীতে নওগাঁয় শুরু হয় ‘বিউটি সার্কাস’-এর শুটিং। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অর্থ সংকটে থেমে যায়। অর্থাভাবে প্রায় এক বছর নির্মাতা কোনো শুট করেননি। তবে এবার ইমপ্রেসের প্রযোজনায় নির্মাতা ছবির সেট নির্মাণ করেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার গোপালপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে। ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ১১ মার্চ পর্যন্ত দৃশ্যধারণ চলে সেখানে। যেখানে ছবির শুটিংয়ে অংশ নেন জয়া আহসান, ফেরদৌস, এবিএম মূসা এবং তৌকীর আহমেদের মতো তারকারা।

মানিকগঞ্জে বিউটি সার্কাসের শুটিং প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্মাতা চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান: দ্বিতীয় দফায় মানিকগঞ্জে শুট করাটা আমাদের জন্য খুবই তিক্ত অভিজ্ঞতার। যা এরআগে কখনো এমন অবস্থায় পড়তে হয়নি। তবে সবকিছুর পরেও আমরা শুট শেষ করতে পেরেছি এটা আনন্দের। তবে মাঝখানে দু’দিন হয়তো আমরা প্যাচ শুটের জন্য সময় নিবো। আর আজ থেকে ছবিটির এডিটিং শুরু হয়েছে।

শুটিং করতে যেয়ে কী ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতায় পড়তে হয়েছে ‘বিউটি সার্কাস’ টিমকে?-এমন প্রশ্নে মাহমুদ দিদার বলেন: বলা যায় দ্বিতীয় দফায় ‘বিউটি সার্কাস’ নিয়ে যাত্রাটা একটা নরক যন্ত্রণা ছিলো। এবার আমরা সেখানকার লোকাল সার্কাস টিমকে ঠিক করেছিলাম। শুরুতে তাদের কোনো বায়না ছিলো না। দৈনিক তাদের পেছনে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করার কথা ছিলো আমাদের প্রোডাকশন থেকে। কথামতো সেটা আমরা করেছি। কিন্তু শুটিংয়ে যখন তারা আমাদের বিশাল অ্যারেঞ্জমেন্ট, বহর দেখলো তখন তাদের আচরণই পরিবর্তন হয়ে গেলো। তারা আমাদের কাছে এক্সট্রা টাকা দাবী করে বসলো। না দিলে ছবির মাঝখানে তারা কাজ বন্ধ করে দেয়ারও হুমকি দেয়। এরকম ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মধ্যে তাদেরকে ১ লাখ টাকার চেক দিতে হয়েছে আমাদের।

শুটিং শুরুর আগে তাদেরকে টাকা পয়সা দেয়ার চুক্তি ছিলো কিনা?-প্রশ্নে নির্মাতা আরো বলেন: না। তাদেরকে কোনো টাকা দেয়ার কতা ছিলো না। মূলত আমাদের বিশাল টিমের বহর দেখে বিভিন্নভাবে ছলচাতুরি করে আমাদের থেকে টাকা নেয়ার পায়তাঁরা করে তারা। ৫২ হাজার টাকা তাদের ক্যাশ দিয়েছি আমি। এক সময় শুটিংস্পটে তারা আমাদের কাছে আতংক হয়ে দাঁড়ায়। আমার টিমের ছেলে পেলেদের সাথে খুব খারাপ আচরণও করে। সব মিলিয়ে কাজটা খুব প্রতিকূলতার মধ্যে সম্পন্ন করতে হয়েছে। বিস্মিত হবেন শুনলে, স্থানীয় প্রশাসনও না করেছিলো যেন সেখানে কাজটা না করি। শেষ পর্যন্ত নির্মাতা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু সাহেবের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বিউটি সার্কাস শুট করে ফিরে আসতে পেরেছি। কিন্তু এতোসব তিক্ত অভিজ্ঞতার পরও যখন আমার সিনেমার অভিনেতা, টিমের ছেলেপেলেদের ডেডিকেশন দেখেছি, তখন সব ভুলে কিছুটা তৃপ্তি পেয়েছি। এখন পর্যন্ত এই ডেডিকেশনকেই সম্বল মনে করছি।