সোমবার সকালে ছিলো সবার কল টাইম! শুটিং জোন প্রস্তুত, লাইট, ক্যামেরাও রেডি! পরিচালকও বসে আছেন, শুধু অ্যাকশান বলার অপেক্ষা! অথচ ক্যামেরার সামনে যার থাকার কথা, তিনিই নেই!
বলছি, ‘ওস্তাদ’ ছবির শুটিং স্পটের কথা। যেখানে সোমবার সকাল থেকে সব প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছেন, শুধু নেই চিত্রনায়ক রোশানের খোঁজ! তার অপেক্ষায় পুরো শুটিং ইউনিট!
দুপুর পেরিয়ে বিকেল আসন্ন, শেষ পর্যন্ত এলেনই না রোশান। তার এমন অপেশাদার আচরণে কষ্ট পেয়েছেন ‘ওস্তাদ’-এর পরিচালক সাইফ চন্দন। শুধু তাই নয়, মোটা অংকের টাকা লোকসানও গুনতে হচ্ছে তাকে।
চ্যানেল আই অনলাইনকে সাইফ চন্দন বলেন, রোশানের কলটাইম ছিল সকাল সাতটায়। পুরান ঢাকার নারিন্দা এলাকায়। রবিবার রাতেও সে আমার সহকারি পরিচালককে খুদেবার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছে, সময়মতো শুটিংয়ে হাজির থাকবেন। কিন্তু শুটিং সেটে সকাল থেকে দুপুর হয়ে গেলেও তার কোনো খোঁজ নেই। ফোনটিও বন্ধ পাচ্ছি। ওদিকে শুটিংয়ে আনিসুর রহমান মিলন থেকে শুরু করে ৩০ জনের মতো এক্সট্রা আর্টিস্টসহ ইউনিটে সবমিলিয়ে ১০০ জন। রোশান না আসায় ক্যামেরা ই ওপেন করতে পারিনি।
দুপুর একটার পর অন্য মাধ্যম থেকে রোশানের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে পরিচালক সাইফ চন্দন জানতে পেরেছেন, রোশান ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এর শুটিং করছেন। সাইফ চন্দন বলেন, রবিবার রাতেও আমাকে জানিয়েছে সে ‘ওস্তাদ’-এর শুটিংয়ে আসবে! কিন্তু এখনও সে ঢাকার বাইরে অন্য ছবির শুটিং করছে। আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি। একজন উঠতি নায়কের আচরণ এমন হলে আমরা কোথায় যাবো?
পরিচালক বলেন, দিনটাই মাটি হয়ে গেল। আর্থিক ক্ষতিও হলো। ওস্তাদের সিডিউল দিয়ে তার মধ্যে আমাকে জানিয়ে ‘সাইকো’র শুটিং করেছে, ‘জ্বীন’-এর ডাবিং করেছে। অথচ আমাকে আগে থেকে একবারও জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি। এর আগেও সিডিউল নিয়ে দুবার ঝামেলা করেছে। পরে এসে সরি বলেছে। ছোটভাই হিসেবে ভুল স্বীকার করেন। কিন্তু এবার আর কোনো প্রশ্রয় নয়। প্রযোজক, পরিচালক থেকে আমাকে ফোন করে রোশানের নামে লিখিত অভিযোগ করতে বলেছে।
সাইফ চন্দন বলেন, এবারই ‘ওস্তাদ’-এর শুটিং শেষ করতাম। মাত্র পাঁচদিনের কাজ বাকি ছিল। রোশান সিডিউল ফাঁসানোয় অন্য শিল্পীদের ডেট আবার কবে পাব ঠিক নেই। অনেক কষ্টে সবকিছু ম্যানেজ করেছিলাম। কিন্তু সবকিছু পণ্ডু হয়ে গেল একজনের কারণে। মনোবল নষ্ট হলো। প্রচণ্ড কষ্ট পেয়েছি এমন আচরণে। সঙ্গে কয়েকলাখ টাকা লোকসান গুনতে হবে।
কেন এমন করলেন রোশান? জানতে তার মুঠোফোন ও ফেসবুকে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রোশানের এমন অপেশাদার আচরণের পর বাধ্য হয়েই পরিচালক সাইফ চন্দন তার ফেসবুকে ক্ষোভ ঝেড়ে পোস্ট দেন। সাইফ চন্দনের ওই পোস্টের মন্তব্যে রোশানের সমালোচনা করছেন অনেকেই। সংশ্লিষ্টরা অনেকেই রোশানের এমন আচরণের জন্য জবাবদিহিতা দাবি করেছেন।
তারা মনে করেন, জবাবদিহিতা নেই বলেই শিল্পী সিডিউল ফাঁসানোর সাহস করেন। এর বিরুদ্ধে সবার সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।