চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

শিক্ষায় নীরব বিপ্লব কেরানীগঞ্জে

শিক্ষাকে সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ ক্ষেত্র বলে বিবেচনা করা হয়। শিক্ষার উন্নয়নে সারাদেশে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে গত দশ বছরে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে নতুন বই। বাংলাদেশই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে বছরের প্রথমদিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হয় নতুন বই। শিক্ষাক্ষেত্রের যুগান্তকারী সাফল্যের অংশীদার হয়েছে কেরানীগঞ্জ। গত এক দশকে কেরানীগঞ্জে এগিয়ে গেছে শিক্ষার হার। দৃষ্টান্তমূলক অবকাঠামো তৈরি হয়েছে ঢাকার উপকণ্ঠের এই অঞ্চলে।

সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, কেরানীগঞ্জে বর্তমানে প্রাথমিকে পাসের হার ৯৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। পাসের হারের দিক থেকে ঢাকা জেলা এবং ঢাকা বিভাগে কেরানীগঞ্জ প্রথম। শিক্ষার এই অগ্রগতির প্রভাব পড়েছে এ অঞ্চলে শিল্প ও অর্থনীতিতেও।

এ জনপদে নারীর ক্ষমতায়ন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতেও অবদান রাখছে শিক্ষাক্ষেত্রের এই উন্নয়ন। ঢাকার অদূরে এই এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছিলো বরাবরই অবহেলিত। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু’র প্রচেষ্টায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসেছে লক্ষণীয় উন্নতি ও পরিবর্তন। দেশে প্রথমবারের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিড ডে মিল কার্যক্রম চালু হয় এই কেরানীগঞ্জে।

গত এক দশকে এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাশের হার বেড়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের পাশাপাশি ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ব্যাপকহারে। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি টাকা কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই চলে যায় মায়ের কাছে। অন লাইনে ভর্তি ও ফল প্রকাশের ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। এদের মধ্যে রয়েছে ছাত্রীদের নিরাপত্তা ও হয়রানি রোধে প্রতিটি স্কুল ও কলেজের আশে পাশে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিং। মাদ্রাসা শিক্ষায় নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। মাদ্রাসা গুলোকে ডিজিটালাইজেশন এর আওতায় আনা হয়েছে।

উপজেলা ভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তৈরি করা হচ্ছে আগামী প্রজন্মের উপযোগি করে। কেরানীগঞ্জের স্কুল গুলোতে নতুন করে ৪০ টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। অটোমেটিক অ্যাটেনডেন্স ব্যবস্থাসহ পুষ্টিকর মিড ডে মিল নিশ্চিত করছে অধিকাংশ স্কুল। স্থানীয় শিক্ষার্থীদের আশার খবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস কেরানীগঞ্জের স্থানান্তরের কাজ চলছে। এতে করে গুণগত মানের শিক্ষার তৎপরতা এখানটায় আরো বেশি।

তবে এসব উন্নয়নের পাশাপাশি আরো কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন নসরুল হামিদ বিপু। শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে ও মুক্তচিন্তায় আগ্রহী করতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চারু ও কারুকলায় বাড়তি প্রণোদনা দেবার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি ক্লাসরুম শিশুবান্ধব গড়ে তুলতে নেয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বিশেষায়িত স্কুলের পাশাপাশি শতভাগ বৃত্তির প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। দরিদ্রতা যেন শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা হয়ে না দাঁড়ায় সেজন্য ট্রাস্ট ও বিভিন্ন বৃত্তিমূলক কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে কোন অভিভাবক যাতে তার শিশু কন্যাকে বিবাহ না দেয় সে বিষয়টির দিকেও আমাদের সঠিক নজরদারি রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের।

কারিগরি শিক্ষা ছাড়া একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ বিষয়টি মাথায় রেখে কেরানীগঞ্জে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ও স্থাপন হতে যাচ্ছে কেরানীগঞ্জে।

গত এক দশক আগেও কেরানীগঞ্জে ছিলো শিক্ষার অনগ্রসর। সেই কেরানীগঞ্জ আজ শিক্ষা ও সংস্কৃতির আলোয় এগিয়ে যাচ্ছে। এ নীরব বিপ্লবের রোল মডেল হবার প্রত্যাশা কেরানীগঞ্জবাসীর।