মাতৃভাষা রক্ষার জন্য শুধু সংকল্প, ভালোবাসার প্রকাশ এবং পরিকল্পনায় সীমাবদ্ধ না থেকে শিক্ষার সর্বস্তরে অবিলম্বে বাংলার প্রচলনের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
অনলাইন আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা সম্মেলন থেকে এমন আহ্বান জানো হয়।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘পৃথিবীর সব ভাষা বেঁচে থাকুক আপন মহিমায়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে চলছে চারদিন ব্যাপী এই সম্মেলন। সম্মেলন আয়োজন করেছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সংগঠন মুক্ত আসর (বাংলাদেশ) ও ছায়ানট (কলকাতা)।
সম্মেলনের উদ্বোধন হয় ২১ শে ফেব্রুয়ারি। চলবে ২৪ শে ফেব্রুয়ারি পযন্ত। সম্মেলনে নয়টি দেশের ৩৭ জন বিশিষ্ট শিক্ষক, গবেষক, শিক্ষাবিদ, সংগীতশিল্পী ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব অংশ নেন।
সম্মেলনের বক্তব্যে বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমাদের শিক্ষার সর্বস্তরে মাতৃভাষার, বিশেষ করে বাংলা ভাষার মতো সমৃদ্ধ ভাষা এখনো যোগ্য হয়ে ওঠেনি। তার ফলে দেখি, মানবিক বিষয়গুলো হয়তো মাতৃভাষায় চর্চা হচ্ছে; কিন্তু বিজ্ঞান, প্রকৌশল, চিকিৎসা, কারবারি বিষয়, গবেষণা প্রভৃতি পরিচালনা করা হয়ে ওঠেনি। এ জন্য অন্য ভাষাকে অপসারিত করে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু করতে হবে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন ভারতের শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও গবেষক অধ্যাপক পবিত্র সরকার। সম্মেলনে উদ্বোধন করেন ভাষাসংগ্রামী বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আহমদ রফিক।
বক্তব্য রাখেন ভারতের কবি ও সাংবাদিক সৈয়দ হাসমত জালাল, বীর প্রতীক মেজর জেনারেল (অব.) মাসুদুর রহমান, বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পিয়াড জাতীয় কমিটি সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবেদা সুলতানা, নুরুন আখতার, আহমেদ হেলাল, মুক্ত আসরের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আবু সাঈদ, কলকাতা ছায়ানটের সভাপতি সোমঋতা মল্লিক।
বিভিন্ন অধিবেশনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ সম্মেলন। ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশ’ বিষয়ে প্রথম অধিবেশনে কথা বলেন, জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, নজরুলসংগীতশিল্পী সালাউদ্দিন আহমেদ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুভ্র দত্ত। দ্বিতীয় দিনে তিনটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন বিভিন্ন দেশের শিক্ষাবিদ ও গবেষকবৃন্দ।
চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা সম্মেলনে আলোচনা ও প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পিয়াড জাতীয় কমিটির সভাপতি ও কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসন, ভারতের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও শব্দসৈনিক পঙ্কজ সাহা, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক মিতালী সরকার, আসামের বিশিষ্ট গবেষক ড. রেজাউল করিম, যুক্তরাষ্ট্র থেকে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. বদরুল হুদা খান, অস্ট্রেলিয়া থেকে শিল্পী রহমান, পেরুর বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক ওয়াল্টার ভিয়ানোয়েভা, নেপালের শিক্ষক মুকেশ শ্রেষ্ঠা, রাশিয়ার শিক্ষাবিদ ভিক্টোরিয়া চারকিনা, যুক্তরাজ্য থেকে কবি শামীম আজাদ, প্রিয়জিৎ সরকার দেব, জার্মানি থেকে হাবিব বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক এম এস এ মনসুর আহমেদ প্রমুখ। সম্মেলনটি দেখতে পারবেন মুক্ত আসর ও ছায়ানট (কলকাতা) ফেসবুক পেজ এবং স্বপ্ন’৭১ ইউটিউব চ্যানেলে।
সম্মেলনের সহযোগিতায় আছে বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পিয়াড জাতীয় কমিটি ও স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশন।