চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচিতে প্রয়োজন সমন্বয়

করোনা মহামারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের শিক্ষাখাত। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দেশের বিভিন্ন খাত ধীরে ধীরে চালু হলেও শিক্ষাখাতের সরাসরি কার্যক্রম অনেক পরে শুরু হয়। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে শঙ্কায় অনেক সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে দেশের স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে।

আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নেয়া ছিল, শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচির পরেই পুরোপুরি খুলবে দেশের স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। সেই ধারায় ১৮ বছরের উপরের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছিলো, আর ধীরে ধীরে খুলছে সবকিছু। এরইমধ্যে আজ (১ নভেম্বর) থেকে দেশে শুরু হয়েছে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের স্কুল শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন কার্যক্রম। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এই কার্যক্রম শুরু হয়।

সোমবার সকালে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন: ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের জন্য আমাদের প্রায় ৩ কোটি ভ্যাকসিন প্রয়োজন। এরমধ্যে ফাইজারের ৯২ লক্ষ ভ্যাকসিন মজুদ আছে। বাকি টিকা আনার প্রায় সব ব্যবস্থা করা আছে। দেশের একটি ছেলেমেয়েও এই ভ্যাকসিন থেকে বাদ যাবে না।

গত ১২ অক্টোবর মানিকগঞ্জে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের ১২০ জন শিক্ষার্থীকে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়া হয়েছিল। ফলাফল সন্তোষজনক হওয়াতে আজ সোমবার থেকে শুরু হলো শিশুদের রুটিন ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি। তাদেরকে ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

তবে একটি বিষয় লক্ষ্যনীয়, আগামী ১৮ নভেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষা আর ডিসেম্বরে শুরু হবে এইচএসসি পরীক্ষা। স্কুল ও কলেজগুলোতো এই দুই শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে কমপক্ষে ৪/৫ দিন শ্রেণীকক্ষে ক্লাস হচ্ছে। আর বাকি শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ১/২ দিন করে যেতে হচ্ছে। সে প্রেক্ষাপটে এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদেরই ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি বলে আমাদের মনে হয়েছে। কিন্তু দেশে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভ্যাকসিন ভীতি আর স্বল্প সাইড-এফেক্টের কারণে শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। তারওপরে দুটি পাবলিক পরীক্ষা সামনে, বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষা অতি নিকটে। এই সময়ে কোনো শিক্ষার্থী ভ্যাকসিন নেবার পরে স্বাভাবিক সাইড-এফেক্টের কারণে পরীক্ষার প্রস্তুতি ঠিকমতো নিতে পারবে কিনা, তা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে শঙ্কা আছে। অনেকে এ বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে শুরু করেছেন।

করোনাকালে দেশের নানাধরণের প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষা একইদিনে অনুষ্ঠিত হবার মতো সমন্বয় জটিলতা দেখা দিচ্ছে গেল কয়েকমাস ধরে। সেইধারায় শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পরীক্ষা, ভর্তি পরীক্ষাসহ নানা একাডেমিক কার্যক্রমে যেনো কোনো ধরণের সমন্বয় জটিলতা বা বাস্তবতা বিবর্জিত কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়া হয় সেদিকে খেয়াল রাখা খুবই জরুরি। এছাড়া বতর্মানে শুধুমাত্র রাজধানীতে আটটি কেন্দ্রে শিক্ষাথর্ীদের ভ্যাকসিন দেয়ার পরিকল্পনা করা হলেও সারাদেশে কীভাবে কী হবে, তা জানানোও জরুরি। আমাদের আশাবাদ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আন্ত: মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকর মনোযোগ দেবেন।