জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ থেকে কমিশন হিসেবে কোটি টাকা দাবি করাসহ বিভিন্ন কারণে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন এসেছে। সেইসঙ্গে সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে নানা ইস্যু নিয়ে রয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এসবের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
দুর্নীতি ও ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের ডিনের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার দুপুরে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর ডিন অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের বাধায় এঘটনা ঘটে। হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা প্রক্টরের অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। বুধবার দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ডিন অফিস ঘেরাও করে ছাত্র সংগঠনগুলো।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও চলছে নানা অস্থিরতা।
এছাড়া গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কী?’ এই প্রশ্ন তুলে আলোচিত। জিনিয়া নামে ওই শিক্ষার্থী, সে একটি ইংরেজি দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করে। বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থানে, তার নামে স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ম্যুরাল নির্মাণে অনিয়মের সংবাদ তৈরি করতে গিয়ে সে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বিশেষ করে উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিনের রোষানলের শিকার হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
এসব বিষয় নিয়ে গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। কোটা আন্দোলনের পরে দীর্ঘদিন শান্ত থাকার পরে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে নানা অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে, যা কিছুটা উদ্বেগের বলে আমাদের মনে হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োজিত বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ কী কী কারণে বির্তকের মুখে পড়ছেন? সেগুলো থেকে কী ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে?
শিক্ষাবিদরা চ্যানেল আইকে বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ব্যক্তিদের এমন স্খলন এক কালো ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। খোদ শিক্ষাঙ্গনে অনিয়ম-দুর্নীতি চলতে থাকলে তা সমাজের সব জায়গাতেই ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। তাদের এই শঙ্কা অমূলক নয়। আমরাও মনে করি, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একেকটি ব্রান্ড। ব্যক্তি কলঙ্কিত হলে সেই নামে শুধু বড় আঁচড়ই লাগে না, দেশের ভবিষ্যৎকেই অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়।
তাই এসব বিষয় সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করে দেখা উচিত। সেইসঙ্গে কী পদক্ষেপ নিলে ওইসব পরিস্থিতি তৈরি হবে না, সেগুলোও ভেবে দেখা একান্ত প্রয়োজন। আমাদের আশাবাদ, দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।