‘মাতৃভাষায় নাই প্রীতি যার/ নাই যার পিছুটান/ অধিকার নেই কণ্ঠে ধরার, প্রভাতফেরীর গান/ তোরা যারা সভ্য হবার বাহানায় ভিনদেশী/ তোদের প্রতি শহীদ মিনার হলো আজ বিদ্বেষী।’
এমন চোখা কথায় ভাষার মাসে গান কোন পেশাদার শিল্পীর নয়। একজন শিক্ষকের। বেসরকারি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসাদুজ্জামান রনির গান ‘বিদ্বেষী’। যাকে নিজের ভাষায় শিল্পী গান না বলে শ্লোগান বলে অভিহিত করেছেন।
এ পর্যন্ত ১৯টি বইয়ের রচয়িতা রনির এটি প্রথম গান প্রকাশ। গান প্রসঙ্গে পেশায় শিক্ষক কিন্তু নেশায় এবং মননে শিল্পী রনি বলেন, সালাম-রফিকদের রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা যাদের নেই, সেইসব রক্ত মেশানো মাতৃভাষায় প্রীতি যাদের নেই, পিছুটান যাদের নেই, যারা সভ্য হতে ভিনদেশী সাজার ব্যর্থ চেষ্টায় রত; প্রভাতফেরীর গান তাদের কণ্ঠে উঠলে শহীদ মিনার কেঁপে ওঠে রাগে, বিদ্বেষে। শহীদ মিনার উপাসনালয়, অন্য কিছু তো নয়। যারা এই উপাসনালয় নিয়ে নোংরামি করে, দখলে নিতে চায়; তারা পাপী সন্তান, লাওয়ারিশ। তারা অন্তত এই দেশের নয়।
রনি আরও বলেন, ক্যাসেট খোঁজার যুগ যেহেতু পেরিয়েছে, ইউটিউব এবং গুগলই ভরসা। মাইক-সাউন্ডবক্সে বিভিন্ন গান বাজিয়ে সাউন্ড টেস্ট শেষ করে ঘড়ির কাঁটা রাত বারোটা ছুঁই ছুঁই হলেই হাতের মুঠো ছেড়ে দেবে সবাই, বেজে উঠবে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, …’। অথচ ওরাই হয়তো এখন শহীদ মিনারের আশপাশ নোংরা করছে, পূত-পবিত্র শহীদ বেদীতে জুতো পায়ে উঠে পড়ছে, ব্যানার টানিয়ে দিচ্ছে; আরও কত কী! সময়কার চেনা দৃশ্য এমনই। কয়েকটা প্রজন্ম এভাবেই বেড়ে উঠছে, এই লজ্জাজনক ভাবেই।
‘বিদ্বেষী’ শ্লোগানের সমন্বয়ক- আহম্মেদ হুমায়ূন এবং চিত্র নির্দেশক- সঞ্জয় সমদ্দার। সুরে-কণ্ঠের শ্লোগান দেখা এবং শোনা যাচ্ছে শিল্পীর নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে।