বাংলা বাউল গানের কিংবদন্তি শাহ আবদুল করিমের কবর থেকে শুরু করে তাঁর বাসভবন এবং সৃষ্টি সবই রয়েছে অবহেলায়। আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল থাকায় তাঁর সন্তান কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তাই সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের।
১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম উজানধলে জন্ম শাহ আব্দুল করিমের। দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে জীবনকে এগিয়ে নেয়া এ বাউল শিল্পীর সংগীত সাধনার শুরু ছোটবেলা থেকেই। ভাটি অঞ্চল থেকে সারা দেশ এমনকি বিশ্বের অনেক দেশেই জনপ্রিয় হন এই বাউল সম্রাট।
২০০৯’র ১২ সেপ্টেম্বর এই গুণীর মৃত্যু হলে নিজবাড়ির উঠানেই হয় তাঁর চির শয়ান। কালনী নদীর তীরে বেড়ে ওঠা এ শিল্পী জীবদ্দশায় গান লিখেছেন দেড় হাজারের বেশি। কিন্তু তার অনেকটাই সংরক্ষিত নেই। আর্থিক অনটনের মধ্যেও তিনি তৈরি করেছিলেন একটি সংগীত একাডেমি। কিন্তু তার মৃত্যুর পর বেহাল দশা সেই একাডেমিরও।
শাহ আবদুল করিমের ছেলে শাহ নুর জালাল বললেন, আমাদের বাড়ির সামনে সংগীত একাডেমি রয়েছে। এটা বাবার একটা স্বপ্ন ছিলো। কেউ আসলেই উনি বলতেন, এই স্কুল করার স্বপ্নটা পূরণ হলে তার যত গান আছে সব শুদ্ধভাবে সবার কাছে পৌঁছাতো, তারা শিখতে পারতো এবং সংরক্ষিত হতো।
শাহ আবদুল করিমের বাড়িতে যেতে অনেকটা পথই যেতে হয় কাঁচা পথে। বর্ষায় সেই পথ আর চলাচলের উপযোগী থাকে না।
এলাকাবাসী জানায়, ছোটবেলায় আমরা যেমনটা দেখেছি এখনো ঠিক তেমনটাই দেখছি। এখানো কোনো বাদ্যযন্ত্র নাই, কোনো উপকরণ নাই। আমরা চাই এখানে শাহ আব্দুল করিম একাডেমি হোক।
শাহ্ আবদুল করিমের ছেলে এবং তার ভক্তশিষ্য ও গ্রামবাসী মনে করেন, তাঁর কবরসহ সব স্মৃতি সংরক্ষণ করা হলে জাতির জন্যই তা গর্বের হবে।