কৃষকদের উৎসবে উদযাপিত হলো বাংলাদেশে কৃষি উন্নয়নের পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের জন্মদিন। সারাদেশ থেকে আসা কৃষকরা যেমন ঢাকায় চ্যানেল আই ভবনে এসে তাকে শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন, তেমনই তার জন্মদিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছিলো নানারকম উৎসবের অায়োজন।
বিশেষ এই দিনে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে সকাল থেকেই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ বিশিষ্টজনেরা চ্যানেল আই ভবনে আসতে থাকেন। যে কৃষকদের জন্য কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ কাজ করে যাচ্ছেন তারাও যোগ দেন তাঁর জন্মদিনের আনন্দ উৎসবে।
উন্নয়ন সাংবাদিকতার অগ্রদূত শাইখ সিরাজকে চ্যানেল আই নিউজ, চ্যানেল আই অনলাইন, হৃদয়ে মাটি ও মানুষ এবং রেডিও ভূমিসহ চ্যানেল আই পরিবারের বিভিন্ন বিভাগের পক্ষ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এরপর তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বন্ধু, বিশিষ্টজনসহ শুভাকাঙ্খীরা।
শাইখ সিরাজের প্রিয় কৃষকেরা সবাই তার সুপরিচিত সবুজ শার্ট পরে হাজির হন চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। ফুল, নিজের ফলানো সবজি ও ফলমূল দিয়ে তারা জন্মদিনের শুভকামনা জানান প্রিয় বন্ধুকে।
এক নারী কৃষক ক্যাপসিকামের তৈরি মালা পরিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।
কৃষকদের পক্ষ থেকে নাটোরের রফিকুল ইসলাম অবহেলিত কৃষকদের বিশ্ব দরবারে পরিচিত করার জন্য শাইখ সিরাজকে ‘কৃষকবন্ধু’ উপাধি দেওয়ার আহ্বান জানান। কৃষকের উন্নয়নের জন্য ‘শাইখ সিরাজ কৃষক কল্যাণ ট্রাস্ট’ নামে একটি ট্রাস্ট গঠনের প্রস্তাবও রাখেন তিনি।
জন্মদিন উপলক্ষে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে আয়োজিত ছোট্ট একটি শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্রের সুরে স্বাগত জানানো হয় শাইখ সিরাজসহ অতিথিদের। সেখানে চ্যানেল আই খুদে গানরাজের চূড়ান্ত প্রতিযোগীরা গান গেয়ে তাদের প্রিয় মানুষটিকে শুভ জন্মদিন জানায়।
শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক এবং কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, শাইখ সিরাজ গণমানুষের আত্মার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে পেরেছেন, এটিই তাঁর সবচেয়ে বড় পাওয়া। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের কৃষিখাতে অবদানের জন্য শাইখ সিরাজকে বাংলার মানুষ সারাজীবন গৌরবের সঙ্গে স্মরণ করবে।
দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার তার শুভেচ্ছা বক্তৃতায় শাইখ সিরাজকে মাটির কাছাকাছি, কৃষকের কাছাকাছি এবং মানুষের হৃদয়ের কাছাকাছি মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে জন্মদিনে শতবর্ষী হওয়ার প্রার্থনা জানান।
বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী এবং ফকির আলমগীর শুভেচ্ছা জানান গানে গানে। শাইখ সিরাজের সঙ্গে প্রথম দেখার স্মৃতিচারণ করে শুভকামনা জানান সৈয়দ আব্দুল হাদী।
বিশিষ্ট শিল্পী এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম বলেন, আজ বাংলাদেশের কৃষিতে স্বনির্ভর হওয়ার পেছনে কৃষকদের যেমন অবদান রয়েছে, তেমনি বিরাট অবদান রয়েছে শাইখ সিরাজের।
তিনি বলেন, ‘আমার স্নেহের শাইখ সিরাজ ও ফরিদুর রেজা সাগর মিলে চ্যানেল আই তৈরি করেছে। চ্যানেল আই যে ‘হৃদয়ে বাংলাদেশ’-এর কথা বলে তা তারা বিশ্বাসও করে। যতোদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততোদিন কৃষকরা শাইখ সিরাজকে মনে রাখবে।’
প্রবীণ সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী বলেন, শাইখ সিরাজ বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য কাজ করতে করতে উগান্ডাসহ বিভিন্ন দেশের কৃষকদের নিয়েও কাজ করছেন। এছাড়াও কৃষকের বাজেট নিয়ে কৃষকদের জন্য নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছেন শাইখ সিরাজ।
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বলেন, শাইখ সিরাজকে সবসময় মাটির মানুষ বলা হলেও তিনি আসলে সোনার মানুষ। কারণ কৃষকের উৎপাদন সবাই ভোগ করলেও তাদেরকে আত্মার মাঝে কেউ নেয় না। শাইখ সিরাজ তা করেছেন। খাদ্য উৎপাদনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে কৃষিতে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ তৈরি করেছেন তিনি।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ শাইখ সিরাজের জন্য গর্বিত ও আনন্দিত। দেশে এমন কেউ নেই যে তাঁকে চেনে না।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আরেক উপদেষ্টা গীতিআরা সাফিয়া চৌধুরীও জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান শাইখ সিরাজকে। এছাড়াও শুভেচ্ছা জানান জনপ্রিয় নজরুল সঙ্গীত শিল্পী শাহীন সামাদ, চলচ্চিত্র শিল্পী অরুণা বিশ্বাস, গীতিকার কবির বকুল, ড. সৈয়দ পারভেজ ইমদাদসহ অন্যরা।
কৃষক থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শাইখ সিরাজ বলেন, গণমাধ্যমকে তার মূল জায়গায় ফিরে আসতে হবে। সেই মূল হচ্ছে মানুষ, সোনা ফলানো গ্রামের মানুষ।
‘এই পরিবর্তন বাংলাদেশকে আরো বিকশিত এবং উন্নত গ্রামকেন্দ্রিক করবে। বাণিজ্যিকতা, গণমাধ্যম এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা, এ তিনটি বিষয়কে একসাথে করে কাজ করতে হবে। চ্যানেল আই তা কিছুটা হলেও প্রমাণ করেছে,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে শাইখ সিরাজকে উত্তরীয় পরিয়ে এবং কেক কেটে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়।