চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

শহীদ রফিক স্থাপনায় নেই রফিকের স্মৃতি চিহ্ন

ভাষা শহীদ রফিকের নামে গড়ে তোলা গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরে নেই রফিকের সামান্য কোন স্মৃতি চিহ্ন। পরিবারের দাবিতে বাড়ির সামনে সরকারী সহায়তায় শহীদ মিনার করা হলেও পরিবারের সদস্যদের খোঁজ রাখে না কেউ।

প্রথম ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ রফিক। ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সময়েই একই গ্রামের রাহেলা খানম পান্নুর সাথে বিয়ে ঠিক তার। কিন্তু সানাইয়ের সুর বেজে উঠবার আগেই ৫২’র ২১ তারিখে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে ঘাতকের বুলেটে শহীদ হন ভাষা সৈনিক রফিক। আর ফিরে যাওয়া হয়নি ভালবাসার পারিল গ্রামে। ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন হাজারো কবরের ভীড়ে। রেখে যান প্রিয় মাতৃভাষার মর্যাদা আর দেশের প্রতি ভালবাসার এক অনন্য ইতিহাস।

শহীদ রফিকের জন্মস্থান সিংগাইর উপজেলার উত্তর পারিল গ্রাম। পরিবর্তিত নাম রফিকনগর। যে ঘরটিতে তিনি বসবাস করতেন তার পাশেই বেসরকারী সহায়তায় নির্মাণ করা হয়েছে একটি ঘর ও একটি পাঠাগার। অনেক কষ্টে সেই স্মৃতিচিহ্ন আঁকড়ে আছেন রফিকের ভাবী গোলেনূর বেগম। এই বাড়ির জন্য সরকার কিছুই করে নাই বলে ক্ষোভ জানান তিনি।

সরকারী সহায়তায় ভাষা শহীদ রফিকের বাড়ির সামনে করা হয়েছে শহীদ মিনার। তবে এর পুরোপুরি নির্মাণ কাজ শেষ হবে আগামী অর্থ বছরে। পৈতৃক ভিটায় যাবার পথেই ৪২ শতাংশ জায়গায় ২০০৬ সালে নির্মাণ করা হয় ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। আধুনিক এই ভবনে শুধু আছে ১০ হাজারের বেশি বই আর ভাষা শহীদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ছবি।

ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের গ্রন্থাগারিক ফরহাদ হোসেন খান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু ছবি এখানে আছে। শহীদ রফিকের স্মৃতি বা তার কোন ব্যবহারের জিনিস এই জাদুঘরে নাই।

দর্শনার্থী মাহমুদ হাসান খান বলেন, বিস্তারিত ইতিহাস এখানে থাকা প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু আমরা জানতে পারলাম যে এইখানে ওনার কিছু ছবি ছাড়া, ওনার কিছু বই ছাড়া কিছুই নেই। হয়তো ওগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। যদি সুযোগ থাকে সরকারের কাছে বলবো যে এগুলো সংগ্রহ করে এখানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করুক।

ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের কর্মচারীরা জানিয়েছেন যারা এখানে কাজ করেন তাদের চাকরি স্থায়ী হয়নি এখনও, কোন মন্ত্রণালয়ের অধীন আছেন তাও জানেন না তারা। গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনাটি যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য সমস্যার সমাধান করা উচিত বলে তারা মনে করেন।