শিক্ষাবিদ, শহীদ জননী, কথাসাহিত্যিক এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী, তিনি জাহানারা ইমাম। মহিয়সী এই নারী সবার কাছে শহীদ জননী হিসেবেই পরিচিত। এই ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন জাহানারা ইমাম। তিনি গণআদালতের চেয়্যারম্যানও ছিলেন। আজ ৩ মে তার ৮৬তম জন্মদিন।
১৯৯১ সাল। জামায়াতে ইসলাম তাদের দলের আমীর হিসেবে ঘোষণা করলেন গোলাম আযমের নাম। সারা বাংলাদেশে শুরু হলো জনবিক্ষোভ। ৭১’এর নরঘাতক কিনা একটি দলের আমীর। জনবিক্ষোভের অংশ হিসেবেই একটি নতুন কমিটি গঠন করা হলো। সেই কমিটির নাম ‘ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’।
এই কমিটিই ১৯৯২ সালের ২৬শে মার্চ ‘গণআদালতে’র মাধ্যমে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাত্তরের নরঘাতক গোলাম আযমের আনুষ্ঠানিক বিচার করে। ১২ জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত গণআদালতের চেয়ারম্যান বিচারের মাধ্যমে গোলাম আযমের ১০টি অপরাধকে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করেন।
তার দেখানো পথেই শুরু হয় ঘাতক-দালালদের বিচারের দাবিতে গণক্ষোভ এবং ধীরে ধীরে তা রুপ নেয় গণজোয়ারে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জাহানারা ইমাম তার ছেলে শফি ইমাম রুমীকে হারান। শুধু ছেলেকেই নয় একাত্তরে স্বামী শরীফ ইমামকেও হারান তিনি।‘একাত্তরের দিনগুলি’ তার বিখ্যাত গ্রন্থ। এছাড়া অন্য জীবন, জীবন মৃত্যু, ক্যান্সারের সঙ্গে বসবাস, সাতটি তারার ঝিকিমিকি ইত্যাদি তার রচিত গ্রন্থ।
২৬ জুন ১৯৯৪ সালে মিশিগানের ডেট্রয়েট হাসপাতালে মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এই মহীয়সী নারী।
১৯২৯ সালের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন জাহানারা ইমাম।