বাংলাদেশে লিভার রোগের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভয়ংকর এক তথ্য দিয়েছে হেপাটোলোজি সোসাইটি। সংগঠনটি বলছে, দেশের প্রতি ৩ জন মানুষের মধ্যে ১ জন লিভার রোগে আক্রান্ত। তার মানে ১৬ কোটি লোকের মধ্যে ৫ কোটিরও বেশি এই রোগে আক্রান্ত।
হেপাটোলোজি সোসাইটি লিভার রোগ এবং তা নিয়ে সচেতনতা তৈরি, নিরাময় ও করণীয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজন করে ৫ম আন্তর্জাতিক লিভার সম্মেলন। এতে অংশ নেন অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, জাপান, মিসর ও ভারতের কয়েকজন লিভার বিশেষজ্ঞ।
সত্যি বলতে, এই পরিসংখ্যান বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য ভয়াবহ। এ সম্মেলনে শুধু এমন পরিসংখ্যানই দেওয়া হয়নি। তুলে ধরা হয়েছে আরো কিছু ভয়ংকর তথ্য। যার একটি হলো, এই রোগের চিকিৎসা কিভাবে করতে হবে – তা অনেক চিকিৎসকও জানে না। এমনকি এত বিপুল সংখ্যক রোগী হলেও এই রোগের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞদের সংখ্যা ১’শ জনেরও কম। সব মিলিয়ে হিসাব করলে ২০ লাখ মানুষের জন্য মাত্র ১ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
দিনে দিনে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে চললেও তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি কতটা? নিশ্চিত করেই বলা যায়, অন্য অনেক কিছুর মতো এ নিয়েও আমার কোনো পরিকল্পনা, প্রস্তুতি বা ভাবনা নেই। যেমন: একটি আলাদা লিভার ইনস্টিটিউট খুবই জরুরি। আরো আছে লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনের মতো ব্যয়বহুল বিষয়। কেননা এই রোগের চিকিৎসায় অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়। যার সামর্থ এদেশের বেশিভাগ পরিবারের নেই।
![](https://i0.wp.com/www.channelionline.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-Reneta-16-04-2024.gif?fit=300%2C250&ssl=1)
চিকিৎসা শাস্ত্রে পানিবাহিত রোগ লিভার বা জন্ডিসের মূল কারণ হিসেবে বলা হয় দূষিত পানি। আর গ্রামের মানুষের তুলনায় শহরের মানুষের মধ্যে এই রোগ হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। কেননা গ্রামের মানুষ টিউবওয়েলের এবং শহরের মানুষ ওয়াসা বা পৌরসভার সরবরাহ করা পানি পান করে থাকেন। কিন্তু তারপরও এ নিয়ে তেমন সচেতনতা নেই বললেই চলে।
এমন পরিস্থিতিতে এখনই পদক্ষেপ না নিলে, এই রোগ আরো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এখন লিভার সংক্রান্ত সংক্রামক ব্যাধির প্রবণতা থেকে অসংক্রামক ব্যাধির উচ্চ প্রাদুর্ভাবে বিবর্তিত হচ্ছে।
আমরা মনে করি, এ বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ না নিলে সামনের দিনগুলোতে তা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই যা করার এখনই করতে হবে।