দ্বীপজেলা ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ সংকটের কারণে ডায়রিয়া ও অন্যান্য রোগীদের চরম ভোগান্তির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ডাক্তার ও সেবিকাসহ স্টাফ সংকটের কারণে সেবা প্রত্যাশী রোগীদের ভোগান্তি ক্রমান্বয়ে প্রকট হচ্ছে বলে জানা যায়।
তবে ভোলা জেলা সিভিল সার্জন এবং হাসপাতালের টিএস বলেছেন, তারা রোগীদের সাধ্যমতো সেবা দেয়ার পাশাপাশি এসব সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৫০/৬০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। চলতি মৌসুমে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি হলেও রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত স্যালাইন সরবরাহ নেই। হাসপাতালে ভর্তি থেকে ডায়রিয়া রোগী স্যালাইন পাচ্ছে না। অন্যান্য ওষুধেরও সংকট রয়েছে। এজন্য প্রায় প্রতিদিনই কর্তব্যরত নার্স ও স্টাফদের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে তারা বাইরে থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে আনতে বাধ্য হয়।
এ বিষয়ে হাসপাতালের টিএস ডা. আব্দুর রশিদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, স্যালাইন সাপ্লাইয়ের পরিমান প্রয়োজনের তুলনায় কম। এরমধ্যে এখন ডায়রিয়া রোগীর চাপ অনেক বেশি। তবে আমরা সাধ্যমতো রোগীদের সরবরাহ করার চেষ্টা করি। বিশেষ করে গরীব রোগীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্যালাইন সরবরাহ করে থাকি।
সিভিল সার্জন ডা. রথীন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেশি থাকায় স্যালাইনের সরবরাহও বাড়ানো হয়েছে। তবে এখন ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি থাকায় স্যালাইনের সংকট, বলতে গেলে সারাদেশেই সংকট, বিশেষ করে আইভি স্যালাইন। তবে আমরা সাধ্যমতো রোগীদের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছি।
জানা যায়, হাসপতালে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব রয়েছে। ডাক্তার নার্সসহ অন্যান্য স্টাফ সংকটের কারণে রোগীদের ভোগান্তি হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে একই ডাক্তার, নার্স কিংবা স্টাফদের একটানা ডিউটি করতে হয়। এতে জরুরি বিভাগে এবং ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা সেবা অনেকাংশেই ব্যাহত হয়। এছাড়া রেডিও গ্রাফার, কার্ডিও গ্রাফারের অভাবে অনেক মুল্যবান ও প্রয়োজনীয় এক্সরে মেশিন, ইসিজি মেশিন অব্যবহৃত পরে আছে।
এ বিষয়ে ডা. আব্দুর রশিদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমাদের এখানে পদ আছে ৩০টি, তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, মেডিকেল অফিসারসহ এখানে মোট ৬ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এই সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। একজন চিকিৎসক বাইরে থেকে এনেও সেবা প্রদান করা হচ্ছে। চিকিৎসক সংকটের কথা আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করছি আগামী জুলাই মাসে চিকিৎসক সংকট দূর হবে।
অন্যান্য স্টাফ সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, সংকট থাকলেও অন্য স্টাফদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিকল্পভাবে আমরা কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যারও সমাধান হবে।
সিভিল সার্জন ডা. রথীন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, সারাদেশেই প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। এখানে যেসব চিকিৎসক রয়েছেন তারা যদি ভালোভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন তাহলে এটা সংকট হয়ে দেখা দেবে না। আমি মনে করি এটি কৃত্রিম সংকট। তবে আমরা এ বিষয়ে অবহিত আছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যান্য স্টাফ সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসক ও স্টাফ সংকটের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আমাদেরকে বলেছেন। আমরা এসব বিষয় সমধানে কাজ করে যাচ্ছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও আমি বিষয়টি অবহিত করেছি।