আফগান যুদ্ধের সময় আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন এবং তালেবান প্রধান মোল্লা ওমরের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজিবি’র (হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ) শীর্ষ নেতা বোমা বিশেষজ্ঞ মো. আতিকুল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।
সৌদি প্রবাসী এই জঙ্গিনেতা গত মার্চে বাংলাদেশে আসেন।
বুধবার বিকালে আতিকুল্লাহসহ হুজির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপি’র কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের কাউন্টার টেররিজম বিভাগ।
রাজধানীর খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ-২ এর বড় মসজিদ সংলগ্ন মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আতিকুল্লাহ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া অন্য দুজন হলেন; মো. বোরহান উদ্দিন রাব্বানী (৪২) ও মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ওরফে শামীম (৪৩)।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কাউন্টার টেররিজম জানায়, মো. আতিকুল্লাহ হুজিবি’র মুফতি হান্নানের ১৯৯৬ সালে গঠিত কমিটির সাংগাঠনিক সম্পাদক এবং পরবর্তীতে বায়তুল মাল ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথমদিকে তিনি দুবাই হয়ে সৌদি আরব পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপন করেন এবং সাংগঠনিক কাজে একাধিকবার পাকিস্তানে যান।
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে কাউন্টার টেররিজম আরো জানায়, আতিকুল্লাহ আফগান ফেরত যোদ্ধা এবং বোমা বিশেষজ্ঞ।
দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক থেকে এ বছর মার্চে দেশে ফিরে সংগঠনের পুরাতন সদস্যদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। এসব সদস্যকে সাংগঠনিক কাজে সক্রিয় করা এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করে সংগঠনের কার্যক্রম চালু করার মিশন নিয়ে ব্যাপক কর্মতৎপরতা চালান তিনি।
পুলিশের এ বিশেষ ইউনিটের কর্মকর্তাদের দাবি, ইতোমধ্যে আতিকুল্লাহ হুজিকে গতিশীল করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংগঠনিক সফর করেছেন। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উৎস হতে সংগঠনের জন্য অর্থও সংগ্রহ করেছেন।
পাকিস্তান, দুবাই ও সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের জঙ্গি সংগঠনের সাথে তার যোগাযোগ রয়েছে জানিয়ে কাউন্টার টেররিজমের একজন কর্মকর্তা বলেন, আতিকুল্লাহ আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় জঙ্গিনেতা ওসামা বিন লাদেন, মোল্লা ওমর ও আইমান আল জাওয়াহিরিসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।
আটক অন্য দু’জন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ওরফে শামীম ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি এবং মো. বোরহান উদ্দিন রাব্বানী ফেনী জেলার সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন বলে জানা গেছে। তারা বর্তমানে কাশ্মীর সমস্যা এবং রোহিঙ্গা পরিস্থিতিকে পুঁজি করে পরস্পর যোগসাজশে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল।
তাদের বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।