যুক্তরাজ্যের পশ্চিম লন্ডন এলাকায় অবস্থিত গ্রেনফেল টাওয়ারের মতো ভবনগুলোয় বসবাসকারী লোকজন যে জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছে, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা ব্রিটিশ সরকারের চারজন মন্ত্রীকে আগেই সতর্ক করেছিলেন। এসব ভবনে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ বিষয়ক নীতিমালা ঠিকমতো মানা হচ্ছে না বলেও তাদের জানানো হয়েছিল।
সম্প্রতি ফাঁস হওয়া কিছু আনুষ্ঠানিক চিঠিতে এ তথ্য প্রকাশ পায় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
তবে যে বিভাগকে চিঠিগুলো দেয়া হয়েছিল তারা এর জবাবে বলেছিল, সেখান নীতিমালা ও সতর্কতা বিষয়ক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে ইতোমধ্যে কাজ চলছে।
ফাঁস হওয়া চিঠিগুলোতে দেখা গেছে, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বহু বছর ধরেই গ্রেনফেলের মতো টাওয়ার ব্লকগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা করছিলেন।
২০০৯ সালে দক্ষিণ লন্ডনের লাকানাল হাউজে আগুন লেগে হতাহতের ঘটনার পর ভবিষ্যতে এমন আগুন লাগা ঠেকানো এবং ভবনের অধিবাসীদের রক্ষার জন্য বেশকিছু সুপারিশের একটি তালিকা প্রস্তাব করা হয়। সেখানে বলা হয়, ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আরও একটি দুর্ঘটনার অপেক্ষা করা ঠিক হবে না।
কিন্তু সেই সুপারিশগুলোকে তখন গুরুত্ব দেয়া হয়নি। সরকার ওই সুপারিশের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করার আশ্বাস দিলেও সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন আর হয়নি।
বিবিসি ওয়ান-এর সাম্প্রতিক ইস্যুভিত্তিক সাক্ষাৎকার ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনমূলক অনুষ্ঠান বিবিসি প্যানোরামা প্রায় ডজনখানেক চিঠি হাতে পেয়েছে, যেগুলো ‘অল-পার্টি পার্লামেন্টারি ফায়ার সেফটি অ্যান্ড রেসকিউ গ্রুপ’-এর পক্ষ থেকে কমিউনিটি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের চার মন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছিল।
ওই মন্ত্রীরা চিঠিগুলো পেলেও নীতিমালা জোরদারে কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে জানায় বিবিসি।
ওই বিশেষজ্ঞ দলটির সদস্য সাবেক ফায়ার চিফ রনি কিং বিবিসি’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, টাওয়ার ব্লকে আগুন বিষয়ক নিরাপত্তা নিয়ে তাদের বারবার প্রকাশিত সতর্কবার্তাকে উপেক্ষা করেছে সরকার।
সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং সুপারিশমালা পাওয়ার পরও ভবিষ্যৎ প্রাণহানি ঠেকাতে দ্রুত যে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব ছিল তা বারবার জানানোর পরও কেন নেয়া হয়নি, সেই প্রশ্নই এখন করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গ্রেনফেল টাওয়ারের মতো যুক্তরাজ্য জুড়ে পুরনো আমলের প্রায় ৪ হাজার টাওয়ার ব্লক রয়েছে। সেগুলোতেও অগ্নিকাণ্ড ঠেকানোর মতো যথেষ্ট ব্যবস্থা নেই বলে রনি কিং জানিয়েছেন।