মধ্য লন্ডনের ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়া পথচারীরা ওপরে তাকিয়ে চমকে উঠেছিলেন। দেখলেন উঁচু উঁচু সব অফিস ভবনের ছাদের কিনারা বরাবর দাঁড়িয়ে আছে বহু মানুষ। যেন এক্ষুণি ঝাঁপিয়ে পড়বেন নীচে জীবনটা চিরতরে শেষ করে দেবার জন্য।
সোমবার বহুতল ভবনগুলোর ছাদে দাঁড়ানো সেই মানুষগুলো আসলে সত্যিকারের মানুষ ছিল না। ছিল ৮৪টি প্রমাণ আকারের ভাষ্কর্য। সবগুলোই পুরুষের। লন্ডন জুড়ে আত্মহত্যা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
‘প্রজেক্ট এইটি ফোর’ নামের এই কর্মসূচির অধীনে মাত্র এক রাতে ভাষ্কর্যগুলো বসানো হয়েছে। আমেরিকান স্ট্রিট আর্টিস্ট মার্ক জেংকিন্স এবং আত্মহত্যা প্রবণতা ঠেকাতে কর্মরত দাতব্য সংগঠন ‘ক্যাম্পেইন এগেইনস্ট লিভিং মিজারেবলি’ (কাম)-এর ধারণা ও মিলিত প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়েছে।
কাম-এর তথ্য অনুসারে, যুক্তরাজ্যে ৪৫ বছরের কম বয়সী পুরুষদের সবচেয়ে বড় ‘হত্যাকারী’ এই আত্মহত্যা। দেশটিতে গড়ে প্রতি সপ্তাহে ৮৪ জন পুরুষ আত্মহত্যা করে। তাদের প্রতিনিধিত্ব করতেই এই ৮৪ ভাষ্কর্যের স্থাপনা।
কাম-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইমন গানিং সিএনএন’কে বলেছেন, ‘সমাজ হিসেবে আমাদেরকে এই বিব্রতবোধ ও অস্বস্তিকে পেছনে ফেলে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদেরকে এই ভয়াবহ ইস্যুর মুখোমুখি হতে হবে, এটা নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং একে ঠেকানোর জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করে যেতে হবে।’
জেংকিন্স সবসময়ই তার ভিন্নধর্মী ভাষ্কর্যের জন্য পরিচিত। তার শিল্পকর্মগুলো সহজেই পথচারীদের মনোযোগ আকৃষ্ট করে। এবারও তার ব্যতিক্রম নেই। প্রজেক্ট এইটি ফোর-এর জন্য ৮৪টি ভাষ্কর্য জেংকিন্স তৈরি করেছেন আরেক স্ট্রিট আর্টিস্ট স্যান্ড্রা ফার্নান্দেজের সহযোগিতায়।
প্যাকিং টেপ দিয়ে তৈরি ভাষ্কর্য এবং প্রজেক্ট এইটি ফোর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে এর ওয়েবসাইটে।
ভাষ্কর্যগুলো মুখ ঢাকা অবস্থায় ব্রিটিশ টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আইটিভি’র বেশ কয়েকটি ভবনের ছাদের সামনের দিকে একেবারে কিনারা বরাবর দাঁড় করানো হয়েছে। সেগুলো একইভাবে থাকবে ১ এপ্রিল পর্যন্ত।